সুপ্রিম কোর্টের অযোধ্যা রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন দাখিল করবে না জামিয়ত উলেমা-ই-হিন্দ। বৃহস্পতিবার ছিল সংগঠনের কার্যকরী সমিতির বৈঠক। সেই বৈঠক শেষে এই সিদ্ধান্তের কথা জানায় মৌলানা মহম্মদ মাদানি নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠী। জামিয়ত উলেমা-ই-হিন্দ মনে করছে, 'স্বাধীন ভারতের ইতিহাসের একটি কালো দিক হল অযোধ্যা রায়।' কিন্তু, রিভিউ পিটিশন দাখিল করা হলে 'ফের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।' এই আশঙ্কাতেই এই সিদ্ধান্ত মৌলানা মহম্মদ মাদানি নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠীর।
গত রবিবারই মৌলানা আরশাদ নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠী জানিয়েছিলেন জামিয়ত উলেমা-ই-হিন্দ ও মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড অযোধ্যা জমি মামলার সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন দাখিল করবে। অযোধ্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হয় গত ৯-ই নভেম্বর। তার ৩০ দিনের সময়সীমার মধ্যেই ওই পিটিশন দাখিল করা হবে বলে জানানো হয় দুই সংগঠনের তরফে।
আরও পড়ুন: কে বানাবে রাম মন্দির? অযোধ্যায় তুমুল বাক-বিতণ্ডা
এক্ষেত্রে জামিয়ত উলেমা-ই-হিন্দের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মতভেদ স্পষ্ট। তবে, মৌলানা মহম্মদ মাদানি গোষ্ঠী জানিয়েছে, অন্য কেউ অযোধ্যা জমি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন দাখিল করলে তার বিরোধিতা করা হবে না। তাদের পদক্ষেপ 'নেতিবাচক প্রভাব' ফেলবে না বলে মনে করছেন তারা। মৌলানা মহম্মদ মাদানি গোষ্ঠীর দাবি, 'মসজিদের যে অংশ ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন সেখানে মুসলমানদের প্রার্থনা করতে দেওয়া হোক।'এই অংশ নিয়ে কোনও বিতর্ক নেই বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।
আরও পড়ুন: এক নজরে অযোধ্যা রায়ের আদ্যোপান্ত
বৃহস্পতিবার ছিল জামিয়ত উলেমা-ই-হিন্দের কার্যকরী সমিতির বৈঠক। সেখানে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুসারে, 'জামিয়ত উলেমা-ই-হিন্দ মনে করে বাবরি মসজিদ সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের রায় অন্যায্য ও একতরফা। এটা নিশ্চিৎ যে কোনও মন্দির ভেঙে মসজিদ গড়ে ওঠেনি। মসজিদের অস্তিত্ব কয়েক শতকের। কোর্ট ওই মসজিদ ভেঙেই মন্দির নির্মাণের রায় দিয়েছে। এই ধরনের রায় স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে কালো দাগ। রিভিউ পিটিশন হলে ওই বিচারপতিদের থেকে অন্য কিছু আশা করা যায় না। উল্টে, ফের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কার্যকরী সমিতি রিভিউ পিটিশন দাখিল না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।'
অযোধ্যা জমি বিতর্ক মামলার রায়ে ন্যায়বিচার হয়নি। এই মর্মে অভিযোগ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের রিভিউ পিটিশন দাখিল করার কথা জানায় সারা ভারত মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড। একই সঙ্গে জামিয়ত উলেমা-ই-হিন্দ গত রবিবার সিদ্ধান্ত নেয় তারাও সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন দাখিল করবে। সংগঠনের প্রধান আর্শাদ মাদানি এ কথা বলেছিলেন। তাঁর কথায়, “আমরা জানি যে আমাদের পিটিশন ১০০ শতাংশ খারিজ হবে, তবুও আমরা আবেদন করব। এটা আমাদের অধিকার।”
Read the full story in English