অযোধ্যা জমি বিতর্কে শনিবার সুপ্রিম কোর্টের ৫ সদস্যের যে সাংবিধানিক বেঞ্চ ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে, তার একমাত্র মুসলিম বিচারপতি ছিলেন এস আব্দুল নাজির। ধর্মবিষয়ক মামলায় বিচারপতি হিসেবে তিনি প্রায় সর্বজনমান্য।
তিন তালাক মামলায় রায় দিয়েছিল যে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ তারও সদস্য ছিলেন বিচারপতি নাজির। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি জে এস খেহরের সঙ্গে তিনিও অবশ্য সে রায়ে ভিন্নমত ধারণ করেছিলেন।
আরও পড়ুন, অযোধ্যার বিতর্কিত জমির সবটাই কেন হিন্দুদের হাতে তুলে দিল সুপ্রিম কোর্ট?
৩-২ রায়ে শীর্ষ আদালত বলেছিল, মুসলমানদের ১৪০০ বছরের পুরনো তিন তালাক ব্যবস্থা বেআইনি ও অসাংবিধানিক।
তবে অযোধ্যা মামলায় বিচারপতি নাজির মুসলিম পক্ষের সঙ্গে একমত হননি এবং বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমি রামলালার হাতে তুলে দেবার ব্যাপারে তিনি অন্য বিচারপতিদের সঙ্গে একমত হন।
অযোধ্যা মামলার সাংবিধানিক বেঞ্চের সদস্য হবার আগে, বিচারপতি নাজির ভারতের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র ও অশোক ভূষণের সঙ্গে তিন বেঞ্চের সদস্য ছিলেন, যে বেঞ্চ ২-১ রায়ের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের ১৯৯৪ সালের রায় বৃহত্তর বেঞ্চে পর্যালোচনার আর্জি খারিজ করে দেয়। ১৯৯৪ সালের রায় ছিল, নমাজের জন্য মসজিদ আবশ্যক নয়।
২০১৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তিন বিচারপতির বেঞ্চ রায় দেয় শীর্ষ আদালতে অযোধ্যা জমি বিতর্ক মামলার শুনানি হবে এবং দেশের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ এ মামলার জন্য পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ নিযুক্ত করেন।
আরও পড়ুন, বিশ্লেষণ: মুসলিমদের কোন দাবি, কেন নাকচ শীর্ষ আদালতে?
অযোধ্যা বিতর্কের জন্য প্রথম যে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ স্থিরীকৃত হয়েছিল তাতে অবশ্য বিচারপতি নাজির বা বিচারপতি ভূষণের নাম ছিল না।
কিন্তু বিচারপতি এনভি রামান এবং ইউ ইউ ললিত নিজেদের এই মামলা থেকে অব্যাহতি দেবার পর এই দুই বিচারপতি বেঞ্চের অন্তর্ভুক্ত হন।
এই মামলাগুলি ছাড়াও, ২০১৭ সালের অগাস্ট মাসে গোপনীয়তার অধিকারকে মৌলিক অধিকার বলে রায় দিয়েছিল যে ৯ বিচারপতির বেঞ্চ, তারও সদস্য ছিলেন বিচারপতি নাজির।
৬১ বছরের বিচারপতি নাজির ১৯৮৩ সালে আইনজীবী হিসেবে নথিভুক্ত হন এবং কর্নাটক হাইকোর্টে প্র্যাকটিস শুরু করেন। ২০০৩ সালের ১২ নভেম্বর তিনি কর্নাটক হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি নিযুক্ত হন, এবং ২০০৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে স্থায়ী বিচারপতি হন।
২০১৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি তিনি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে উন্নীত হন।
Read Full Text of Ayodhya Verdict