পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ বিতর্কিত অযোধ্যাভূমি রামজন্মভূমি ট্রাস্টের হাতে দিয়ে দেওয়ার পর সারা ভারত মুসলিম ল বোর্ড জানিয়েছে এই রায়ে ন্যায়বিচার হয়নি। আগামী দিনে রায়ের রিভিউয়ের আবেদন জানানোর কথা ভাবছে ল বোর্ড।
সুপ্রিম কোর্ট চত্বরের বাইরে রায়ের পর সারা ভারত মুসলিম ল বোর্ডের সচিব জাফারিয়াব জিলানি বলেন, "সবেমাত্র রায় ঘোষণা হয়েছে, সেথানে সংবিধান ও ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে বহু কিছু বলা হয়েছে। আমরা রায়ে অত্যন্ত অসন্তুষ্ট। সংবিধানের ১৪২ নং অনুচ্ছেদ এর অনুমতি দেয় না।"
আরও পড়ুন, অযোধ্যা অভিধান: এক নজরে
রায়ের নির্দিষ্ট অংশের ব্যাপের আপত্তি তুলে জিলানি বলেন, "চবুতরার ভেতরের অংশে যেখানে নমাজ পাঠ হত সে অংশ অন্য পক্ষের হাতে তুলে দেওয়ায় আমরা অত্যন্ত অসন্তুষ্ট। ন্যায় বিচার হয়নি।"
তিনি বলেন, "শরিয়া আইন অনুসারে আমরা মসজিদ ছেড়ে দিতে পারি না, তবে আমরা আদালতের নির্দেশ মেনে নেব। দ্বাদশ শতকে বা ১৫২৮ সালে কী হয়েছিল তার কোনও প্রমাণ নেই। হিন্দুদের দাবি ওখানে বিক্রমাদিত্যের আমলের মন্দির ছিল, কিন্তু তার কোনো প্রমাণ নেই।"
মুসলিমদের জন্য পৃথক জমি সংস্থানের যে ব্যবস্থা করা হয়েছে সে সম্পর্কে তিনি বলেন, "দীর্ঘদিন ধরে যে বিতর্ক চলছে তা মসজিদ নিয়ে, জমি নিয়ে নয়। মসজিদের বিনিময়ে জমি হয় না, এটা মসজিদের ব্যাপার, জমির ব্যাপার নয়। ওরা মেনে নিয়েছিল যে মূর্তি বসানো হয়েছে ১৯৪৯ সালে কিন্তু তা সত্ত্বেও সিদ্ধান্ত অন্যদের পক্ষে গিয়েছে।"
জিলানি বলেন রায়ের কিছু অংশ ভবিষ্যতে আরও সমস্যা তৈরি করবে বলে মনে হচ্ছে।
আরও পড়ুন, অযোধ্যা রায়ের বিশ্লেষণ: নয়া রাম মন্দিরের দেখভাল করবে ট্রাস্ট
আইনজীবী এস আর সামশাদের কথাতেও একই বক্তব্যের প্রতিধ্বনি পাওয়া গিয়েছে। তিনি বলেছেন "এ রায় তর্কযোগ্য।"
তিনি বলেন, "আমাদের আশা ভবিষ্যতে কোনও মসজিদে আর হাত দেওয়া হবে না, সাংবিধানিক আওতার মধ্যে থাকা একটি গণতান্ত্রিক দেশে এটুকু প্রত্যাশা করা যেতেই পারে।"
সারা দেশে শান্তির আবেদন জানিয়ে জিলানি বলেছেন, "এতে কারও জয় বা পরাজয় হয়নি। আমরা সম্ভাব্য আইনি পথে যাব। আমরা সকলের কাছে শান্তি বজায় রাখার আবেদন করছি।"
তবে একই সঙ্গে জিলানি রায়ের কছু অংশকে দেশের ধর্মনিরপেক্ষতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন "আমরা হয়ত ৩০ দিনের মধ্যে রিভিউ পিটিশন দাখিল করব তবে এ ব্যাপারে নিশ্চিত নই। আমাদের আইনি টিম রায়ের পুরোটা পড়ার পর এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।"
তিনি বলেন, "আমরা রায়ের ব্যাপারে সহমত নই কিন্তু এ কথা কখনওই বলব না যে চাপ ছিল। সকলেই ভুল করতে পারে। শীর্ষ আদালত বহু রায়ের পর্যালোচনা করেছে। যদি ওয়ার্কিং কমিটি চায় তাহলে আমরা রিভিউ পিটিশন দাখিল করব।"
Read Full Text of Ayodhya Verdict