জেল থেকে সবে বাইরে পা রেখেছেন তিনি। মাকে দেখেই মেয়ের চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়ল। পরক্ষণেই মুখে সব ফিরে পাওয়ার স্বস্তি। মা-মেয়ে জড়িয়ে ধরলেন একে অপরকে। ১৭ দিন পর জামিনে মুক্ত হলেন কর্নাটকের শাহিন স্কুলে সিএএ বিরোধী নাটক মামলায় অভিযুক্ত নাজমুন্নিসা।
Advertisment
ঘটনার সূত্রপাত গত ২১ জানুয়ারি। সেদিন স্কুলের বার্ষিক অনুষ্ঠানে একটি নাটক মঞ্চস্থ হয়। ওই নাটকে 'দেশবিরোধী' বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে এবং সিএএ বিরোধী বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে গত ২৬ জানুয়ারি পুলিশের দ্বারস্থ হন এক এবিভিপি কর্মী। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিদারের ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ফরিদা বেগমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। একইসঙ্গে গ্রেফতার করা হয় স্কুলের ৯ বছর বয়সী এক পড়ুয়ার মাকে নাজমুন্নিসাকে।
স্বামীর অকাল মৃত্যুর পর নাজমুন্নিসাই একক চেষ্টায় মেয়েকে বড় করে তুলছেন। মেয়ের জীবনে মা-ই জগৎ। তাই মা কারাবন্দি থাকাকালীন ভাল ছিল না মেয়ের মানসিক অবস্থা। বছর ৯-এর মেয়েটি বলছিল, 'মার অনুপস্থিতিতে বাড়িওয়ালির কাছে গিয়ে ঘুমোতাম। উনি খুব ভাল। কিন্তু, আমার ঘুম আসত না। প্রায় রোজই না ঘুমিয়ে কাটিয়েছি। এবার মা এসেছেন। মাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমবো।'
Advertisment
মা-মেয়ের সাক্ষাতের বেশিক্ষণ হয়নি। তারই মধ্যে এই কদিন জেলে কীভাবে কাটল? মাকে প্রশ্ন করা হয়ে গিয়েছে মেয়ের। বাড়ি গিয়ে সেই জবাব দেওয়ার কথা জানিয়েছেন মা নাজমুন্নিসা।
স্কুলেও একদিন কম ঝক্কি পোয়াতে হয়নি নাজমুন্নিসার মেয়েকে। টানা কয়েকদিন পুলিশ জেরা করেছে ওই শিশুকে। নাটকে অংশ নেওয়া বাকি পড়ুয়ারাও বাদ যায়নি। অনবরত পুলিশ জেরা করেছে। স্কুলে পড়তে গিয়ে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে স্বভাবতই ভয়ে সিঁটিয়ে কর্নাটকের বিদারের শাহিন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। পরে পড়ুয়াদের জিজ্ঞাসাবাদের প্রক্রিয়া বন্ধ করতে পুলিশকে বার্তা দেয় কর্নাটকের শিশু সুরক্ষা ও অধিকার কমিশন(কেএসপিসিআর)।
গত ১৭ দিন স্কুলে কী হয়েছে? এসবও মাকে বলা বাকি রয়েছে মেয়ের। সেসবই উঠে আসবে দু'জনের আলোচনায়। মেয়ের কথায়, 'তাঁর অভাব আমি পদে পদে অনুভব করেছি। তাঁকে আমার অনেক কথা বলা বাকি রয়েছে। এবার সব বলবো।'