অপেক্ষা আর মাত্র কয়েক বছরের। ২০২৬ সালেই হতে পারে মুম্বই-আহমেদাবাদ পর্যন্ত যাওয়া বুলেট ট্রেনের ট্রায়াল রান। গুজরাতের বিলিমোরা থেকে সুরাত পর্যন্ত হবে এই ট্রায়াল রান। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এই বুলেট ট্রেন ঘণ্টায় ৩৫০ কিলোমিটার বেগে ছুটবে। ট্রেনটির অপারেশনাল স্পিড হবে প্রতি ঘণ্টায় ৩২০ কিলোমিটার।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, বিমানের ইকনমি-ক্লাসের ভাড়ার সঙ্গে সামজ্ঞস্য রেখে হবে এই বুলট ট্রেনের ভাড়া। ট্রেনটিতে ফ্রি-তে লাগেজ রাখার সীমাও সম্ভবত বেশি থাকবে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি এই বুলেট ট্রেন করিডোরের মোট দৈর্ঘ্য ৫০৮.১৭ কিলোমিটার। ট্রেনটি গুজরাতের আটটি এবং মহারাষ্ট্রের চারটি স্টেশন ছুঁয়ে যাবে। আহমেদাবাদ থেকে মুম্বই যেতে এই বুলেট ট্রেনে প্রায় ২ ঘন্টা এবং ৫৮ মিনিট সময় লাগবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ন্যাশনাল হাই স্পিড রেল কর্পোরেশন লিমিটেড (এনএইচএসআরসিএল)-এর কর্তারা এবং ভারতে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত সাতোশি সুজুকি মঙ্গলবার এই বুলেট ট্রেনের করিডোরের কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখেছেন। মঙ্গলবার থেকে তাঁরা গুজরাতেই রয়েছেন। সংবাদসংস্থা পিটিআইকে এক আধিকারিক বলেন, ''যাত্রীদের জন্য এটি একটি দারুণ অভিজ্ঞতা হতে চলেছে। বুলেট ট্রেনের এই যাত্রা বিমানে যাতায়াতের সময়ের সঙ্গে পাল্লা দেবে। এই ট্রেনে চেক-ইনের ক্ষেত্রে সময় কম লাগবে। যাত্রীরা পা রাখার ক্ষেত্রে বেশি জায়গা পাবেন। সর্বোপরি সব ধরনের সুবিধা থাকবে বিশেষ প্রযুক্তিতে তৈরি এই ট্রেনে। সম্ভবত বিমানে এত সুবিধা যাত্রীরা পান না।''
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ট্রেনগুলি "স্ল্যাব ট্র্যাক সিস্টেম" নামে বিশেষ একটি ট্র্যাক ধরে চলবে। HSR প্রযুক্তিতে তৈরি এই বিশেষ ট্র্যাকের পেটেন্ট রয়েছে জাপানের। জাপান থেকে সংগৃহীত ডিজাইন ব্যবহার করে ফুল স্প্যান লঞ্চিং পদ্ধতির মাধ্যমে তৈরি করা হচ্ছে এই রেল ট্র্যাক। বিশ্বের অন্যতম অত্যাধুনিক সেতু নির্মাণ প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে এই ট্র্যাক। বুলেট ট্রেনের করিডোরের জন্য NHSRCL বিলিমোরা এবং সুরাতের মধ্যে প্রতি মাসে ২০০-২৫০টি পিলার তৈরি করেছে।
আরও পড়ুন- রাসায়নিক কারখানায় বিধ্বংসী আগুন, পুড়ে মৃত্যু ৬ জনের
জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পের অধীনে সবচেয়ে দীর্ঘতম (১.২৬ কিমি) সেতুটি ২০২৪ সালের জুলাইয়ের মধ্যে শেষ হবে। গুজরাত এবং দাদরা ও নগর হাভেলিতে ৩৫২ কিলোমিটার পথ তৈরির বরাত দেওয়া হয়েছে ভারতীয় ঠিকাদারদের। ভাপি থেকে সবরমতী পর্যন্ত আটটি হাই স্পিড স্টেশনের কাজ এখন বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। সবরমতীর যাত্রী টার্মিনাল হাব, HSR, মেট্রো, BRT এবং দু'টি রেল স্টেশনের কাজ কাজ চলতি বছরের আগস্টের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ন্যাশনাল হাই-স্পিড রেলওয়ে কর্পোরেশন লিমিটেডের অধিকর্তা সতীশ অগ্নিহোত্রী বলেন, ''জাপানি প্রযুক্তি বিশ্বের সেরা। জাপান সরকার প্রকল্পে ৮০ শতাংশেরও বেশি টাকা ঢেলেছে। ০.১ শতাংশ সুদের হারে ভারতকে ৫০ বছর তারা সময় দিয়েছে এই টাকা শোধ করতে। জাপানের E5 সিরিজের বুলেট ট্রেন প্রযুক্তি, গতি এবং অন্যান্য সব দিক থেকে ফ্রান্স এবং জার্মানিকে হারিয়ে দিয়েছে।''
Read story in English