সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ঘিরে বিক্ষোভ চলছেই। তারই মধ্যে সিএএ ঘিরে নয়া বিতর্ক। নয়া আইনের খসড়া অনুশারে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে আসা অ-মুসলমান শরণার্থীদের নাগরিকত্ব পেতে 'ধর্মের প্রমাণ' দিতে হবে। এছাড়াও প্রমাণ করতে হবে যে, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগেই তারা এদেশে প্রবেশ করেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের আধিকারিকের কথায়, শরণার্থীদের ২০১৪ সালের ৩১শে ডিসেম্বরের আগে আর্জিত ভারত সরকার অনুমোদিত যেকোনও পরিচয়পত্র দাখিল করলেই চলবে। সেখানেই নাগরিকত্বের আবেদনকারীদের ধর্মের উল্লেখ রয়েছে। সেখান থেকেই বোঝা যাবে আবেদনকারী হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, খ্রীষ্টান, পার্সি, নাকি শিখ ধর্মের অন্তর্ভুক্ত। এই বিষয়টিকে লঘু করেই দেখতে চায় কেন্দ্র।
মন্ত্রকের আধিকারিকের কথায়, 'সন্তানদের সরকারি সস্কুলে ভর্তি করতে হলে অভিভাবকদের নিজেদের ধর্ম সমন্ধে জানাতে হয়। ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে তৈরি আধার কার্ডেও ধর্মের উল্লেখ রয়েছে। ফলে সেখান থেকেই সিএএ-তে উল্লেখ ছয়টি ধর্মের প্রমাণ মিলবে। এছাড়াও যেসব সরকারি নথিতে ধর্মের উল্লেখ রয়েছে তাও গ্রাহ্য হবে।'
গত ডিসেম্বরেই সংসদের উভয় কক্ষে বিতর্ক ও ভোটাভুটির পর পাস হয়েছে সংশোধিত নাগরিকত্ব বিল। পরে রাষ্ট্রপতির সাক্ষরের মাধ্যমে তা আইনে পরিনত হয়েছে। চলতি মাসের ১০ই জানুয়ারি 'গেজেট অফ ইন্ডিয়া'-তে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মধ্য দিয়ে দেশজুড়ে এই আইন কার্যকর হয়েছে। এই আইন অনুশারে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে যেসব সংখ্যালঘু (হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, খ্রীষ্টান, পার্সি, শিখ) এদেশে প্রবেশ করেছেন তাদের ভারতের নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে। সিএএ বিধি অনুশারে শরণার্থীদের ধর্মীয় নিপীড়নের প্রমাণ দাখিল করতে হবে না। প্রশাসন ধরেই নিচ্ছে যে শরণার্থীরা ধর্মের কারণে নিপীড়িত হয়ে বা ভয় পেয়ে ভারতে এসেছেন।
আরও পড়ুন: ইউরোপীয় ইউনিয়ন পার্লামেন্টে সিএএ বিরোধী প্রস্তাব, ‘ভয়ঙ্কর-বিভেদকামী’ বলে তুলোধনা মোদী সরকারকে
সিএএ-এর আওতায় নাগরিকত্বের আবেদনের জন্য সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার পক্ষে আসাম। শরণার্থীরা আবেদনের ক্ষেত্রে মাস সময়সীমা নির্ধারিত করা হোক। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে আবেদন জানিয়েছে বিজেপি শাসিত আসাম সরকার। অনন্তকাল ধরে এই প্রক্রিয়া চললে রাজ্যে ফের অশান্তি ছড়াতে পারে এই আশঙ্কাতেই সর্বানন্দ সোনোয়াল সরকারের এই আর্জি বলে মনে করা হচ্ছে।
আসামের এক বিজেপি নেতা বলেছেন, 'রাজ্য নিজেদের উদ্বেগের কথা কেন্দ্রকে জানিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার সিএএ-এর আওতায় নাগরিকত্বের আবেদনের সময়সীমা বেঁধে দিতে সহমত হয়েছে। সেটা সিএএ বিজ্ঞপ্তি জারি থেকে তিন অথবা ছয় মাস পর্যন্ত হতে পারে। তবে এখনও সেই সময়সীমা চূড়ান্ত হয়নি।'
নাগরিকত্বের আবেদনকারীদের প্রমাণ করতে হবে যে, তারা বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে এদেশে এসেছেন। এর আগে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এই খবর প্রকাশ করেছিল। সেই রিপোর্টে নথি প্রমাণের প্রকৃতি-ও উল্লেখ ছিল।
Read the full story in English