Upper Caste Reservation in India: সংবিধান সংশোধন করে 'অর্থনৈতিকভাবে অনগ্রসর' উচ্চবর্ণদের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণের পথে হাঁটতে চলেছে মোদী সরকার। সূত্রের খবর, সরকারি চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে এবং উচ্চ শিক্ষায় এই সংরক্ষণ কার্যকর হবে। লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
এর আগে এই ধরনের সংরক্ষণের কথা একাধিকবার বলেছেন মায়াবতী ও রামদাস আঠবলের মতন রাজনৈতিক নেতারা। এই প্রথম সংসদীয় মতে এ সম্পর্কে কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হলো। উল্লেখ্য, নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নরসিংহ রাও সরকারের অর্থনৈতিক অবস্থার ভিত্তিতে ১০ শতাংশ সংরক্ষণের উদ্যোগ বাতিল করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। সেসময় সরকারের উদ্দেশ্য ছিল, মণ্ডল কমিশনের রিপোর্ট কার্যকরী করার পথে রাজনৈতিক বাধা দূর করা।
এক উচ্চপদস্থ সূত্রের মতে, "নরসিংহ রাও সরকারের উদ্যোগ বাতিল হওয়ার কারণ, সংরক্ষণের ক্ষেত্রে যে ৫০ শতাংশ ঊর্ধ্বসীমা রয়েছে, সেটি অতিক্রান্ত হচ্ছিল। এবার সেই সমস্যা মেটাতে মূল নিয়মটিকে পাল্টে ৬০ শতাংশ সংরক্ষণের সংস্থান করা হয়েছে।"
আরো পড়ুন: সহিষ্ণুতা হারানোই চিন্তার কারণ, নাসিরুদ্দিনের পাশে অমর্ত্য সেন
ওই সূত্রের আরো বক্তব্য, "সংবিধান সংশোধন করে একটি নতুন মানদণ্ডের ব্যবস্থা করা হবে, যার ফলে অর্থনৈতিকভাবে অনগ্রসর শ্রেণীভুক্তরা সংরক্ষণের যোগ্য হন।" সরকার স্পষ্টতই সচেতন বিষয়টির আইনগত জটিলতা সম্পর্কে, এবং তা এড়াতে যথেষ্ট তৎপর। এই পদক্ষেপের ফলে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৬-র সংশোধন প্রয়োজন হবে।
তফসিলি জাতী, উপজাতি, ও অন্যান্য পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর ক্ষেত্রে সংরক্ষণের ভিত্তি জাত হলেও, এক্ষেত্রে তা হবে না। বিভ্রান্তি এড়াতে অর্থনৈতিকভাবে অনগ্রসর শ্রেণীকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করবে সরকার।
এই বিভাজন অনুযায়ী, অর্থনৈতিকভাবে অনগ্রসর শ্রেণীভুক্ত হবেন সেইসব পরিবার, যাঁদের বার্ষিক আয় আট লক্ষ টাকার কম, বা পাঁচ একরের কম কৃষিজমি রয়েছে, এবং বাসস্থানের আয়তন ১০০০ বর্গফুটের চেয়ে কম। শহর অঞ্চলে বাস করলে বাসস্থানের আয়তন হবে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে এমন পুরসভা এলাকায় ১০০ স্কোয়ার ইয়ার্ড এবং বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয় নি এমন পুরসভা এলাকায় ২০০ স্কোয়ার ইয়ার্ড হবে।
আরও পড়ুন- ‘মোদী মন্ত্র’-এ আস্থা হারিয়ে দলকে চিঠি বিজেপি নেতার
সুপ্রিম কোর্ট কিছুদিন আগে দলিতদের উপর অত্যাচার প্রতিরোধ বিষয়ক আইনের ( SC/ST Prevention of Atrocities Act) কিছু ধারা বাতিল করার পর দেশজুড়ে ক্ষোভে ফেটে পড়ে দলিত সমাজ। সেই ক্ষোভ প্রশমনে মোদী সরকার তড়িঘড়ি লোকসভায় সংশোধনী এনে ধারাগুলিকে ফের আইনি বৈধতা দেয়।
কেন্দ্রের এই তৎপরতা উচ্চবর্গীয় জনগণ ভালভাবে নেয়নি বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনুমান।এবং তার মাশুল সম্প্রতি অনুষ্ঠিত মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান এবং ছত্তিশগড় বিধানসভায় পরাজয়ের মাধ্যমে গুনতে হয়েছে বলেই মনে করছেন বিজেপি-র শীর্ষ নেতৃত্ব। ২০১৯-এর গুরুত্বপূর্ণ লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের এই উদ্যোগ উচ্চবর্গীয়দের সন্তুষ্ট রাখার প্রয়াস বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
Read the full story in English