কাস্টিং কাউচ নিয়ে দুই খ্যাতিমান নারীর বক্তব্যে তীব্র বিতর্ক দানা বেঁধেছে দেশ জুড়ে। একজন ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত, আরেকজন রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ। কাস্টিং কাউচ নিয়ে মুখ খুলে প্রথমে বিতর্কে আগুন জ্বালিয়েছেন বিখ্যাত কোরিওগ্রাফার সরোজ খান। এরপরে সেই বিতর্কের আগুনে ঘি ঢেলেছেন কংগ্রেস নেত্রী তথা রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ রেণুকা চৌধুরি। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কাস্টিং কাউচের জেরে রুটিরুজি জোগাড় হয়, এই মন্তব্য করে আলোড়ন ফেলেছেন মাস্টারজি সরোজ খান। সরোজ খানের এই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। বাধ্য হয়ে পরে নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়ে বিতর্কের আগুনে জল ঢালেন আশি ও নব্বইয়ের দশকের বিখ্যাত কোরিওগ্রাফার। কিন্তু এরপরই কংগ্রেসের রেণুকা কাস্টিং কাউচ নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন, তাতে ভয়ানক এক দিক উঠে আসছে। রেণুকা বলেছেন, কাস্টিং কাউচ থেকে সংসদেও রেহাই পাওয়া যায় না। প্রথমে সরোজ, পরে রেণুকা, দেশের এই দুই নারীর এহেন মন্তব্যে হইচই পড়ে যায়।
কিছুদিন আগেই কাস্টিং কাউচ নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে সরব হয়েছিলেন তেলেগু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির শ্রী রেড্ডি। সেই ঘটনার পর এদিনের জোড়া মন্তব্য আবারও দেশের কালো দিকটাই যেন ধরা দিল।
আরও পড়ুন, যৌন নির্যাতনে ফের নাম জুড়ল বিজেপির, আবারও শিশুকে যৌন হেনস্থা!
সংবাদসংস্থা এএনআই সূত্রে জানা গেছে, সরোজ খান বলেছেন যে, কাস্টিং কাউচ বহুদিন ধরে হয়ে আসছে। সকলেই মহিলাদের সঙ্গে এসব করার চেষ্টা করেন, এমনকি সরকারি কর্মীরাও। প্রশ্নকর্তাকে সরোজ পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, কাস্টিং কাউচ নিয়ে কেন শুধু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিরই নাম জড়ানো হচ্ছে। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির কাস্টিং কাউচ পদ্ধতির পক্ষে সওয়াল করে সরোজের আরও সংযোজন, ওরা অন্তত ধর্ষণ করে তো ছেড়ে দেয় না, রুটি-রুজি দেয়। সরোজের এই মন্তব্য ঘিরেই সমালোচনা শুরু হয়। সোশ্যাল সাইটে সরোজের সমালোচনায় শামিল হন অনেকেই। পরে ভাবগতিক দেখে নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চান তিনি।
প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ রেণুকা চৌধুরি। ছবি- প্রবীণ জৈন, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
আরও পড়ুন, শিশুধর্ষণে মৃত্যুদণ্ড, অপরাধ রোধে কতটা কার্যকর?
এদিকে এ প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেত্রী তথা রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ রেণুকা চৌধুরি বলেন যে, এটা কঠোর হলেও সত্য। গোটা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি হয়তো আমার বিরুদ্ধে হাত তুলতে পারে। কিন্তু এটা ঘটে। এরপরেই তিনি বলেন, ‘‘এমনটা ভাবববে না যা, সংসদের মতো জায়গা সুরক্ষিত কিংবা অন্য কোনও কর্মক্ষেত্রে।’’ প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদের মতে, এটা গোটা দুনিয়ায় হচ্ছে। নামী অভিনেত্রীরা পর্যন্ত এ নিয়ে মুখ খুলছেন, #MeToo বলছেন। এ নিয়ে এদেশেও সরব হওয়া উচিত।