সিবিআই-এর দ্বিতীয় শীর্ষ কর্তা রাকেশ আস্থানার নাম আগেই জড়িয়েছে ঘুষ কেলেঙ্কারিতে। আস্থানার অধীনে থাকা তদন্তকারী ডেপুটি এসপি দেবেন্দ্র কুমারকে সোমবার গ্রেফতার করেছে সিবিআই। মঙ্গলবার দিল্লি উচ্চ আদালত জানিয়ে দিল সংস্থার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা রাকেশ আস্থানাকে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত গ্রেফতার করা যাবে না। রাকেশের ব্যাপারে স্ট্যাটাস কুয়ো বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট।
সিবিআই-এর এফআইআরে নাম রয়েছে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা, RAW-এর কর্তা সামন্ত কুমার গোয়েলেরও, তবে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়নি। মঈন কুরেশি দুর্নীতিকাণ্ডে গঠিত বিশেষ তদন্ত দলের দায়িত্বে ছিলেন রাকেশ আস্থানা। সেই তদন্তের সময়েই এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে আস্থানা ঘুষ চেয়েছিলেন বলে অভিযোগ।
মঙ্গলবার নিজের এবং সহকর্মী দেবেন্দ্র কুমারের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন রাকেশ আস্থানা। সিবিআই ডিরেক্টর অলোক ভার্মা এবং যুগ্ম ডিরেক্টর একে শর্মাকে স্ট্যাটাস কুয়ো বজায় রাখার নোটিশ দিয়েছেন বিচারপতি নাজমি ওয়াজিরি। রাকেশ আস্থানার কাছ থেকে তাঁর হেফাজতে থাকা মোবাইল ফোন এবং মেসেজ সংরক্ষণের ব্যাপারে লিখিত প্রতিশ্রুতি আদায় করে নেয় আদালত। মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে ২৯ অক্টোবর।
রাকেশ আস্থানার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সিবিআই তদন্তাধীন একটি মামলা থেকে সানা সতীশের নাম বাদ দেওয়ার বিনিময়ে তিন কোটি টাকা নিয়েছেন তিনি, এবং সানা সতীশ জানিয়েছেন, টাকা নেওয়ার পরেও মামলা থেকে তাঁর নাম সরানো হয়নি। এ ছাড়া মইন কুরেশি দুর্নীতি কাণ্ডেও বিশেষ তদন্তকারী দলের দায়িত্বে থাকা রাকেশ আস্থানা ঘুষ নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ।
গত সপ্তাহে সিবিআই এই দুর্নীতিতে এক নম্বর অভিযুক্ত হিসেবে রাকেশ আস্থানার নাম ঘোষণা করে। সানা সতীশ স্বীকার করেছেন, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে একাধিক খেপে তিন কোটি টাকা ঘুষ দেওয়া হয়েছিল আস্থানাকে। মিথ্যে তথ্য প্রমাণ দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হন রাকেশ আস্থানার অধীনে থাকা সিবিআই আধিকারিক দেবেন্দ্র কুমার।
আরও পড়ুন, ঘুষ কেলেঙ্কারিতে রাকেশ আস্থানার অধীনে থাকা আধিকারিককে গ্রেফতার করল সিবিআই
প্রসঙ্গত, সিবিআই-এর স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানার ঘুষ কেলেঙ্কারিতে যুক্ত থাকার অভিযোগ নিয়ে মোদী সরকারকে আক্রমণ করেছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। বর্তমানে সিবিআই-এর দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন রাকেশ আস্থান। সোমবার সকালে রাহুল টুইট করে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তাঁর ক্ষোভ উগরে দেন।
সিবিআইকে রাহুল ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার অস্ত্র’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন সোশাল মিডিয়ায়। সনিয়া পুত্র টুইট করে বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর চোখের মণি, সিবিআই-এর দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ আধিকারিককে এবার ঘুষ নিতেও দেখা গেল। এই প্রধানমন্ত্রীর শাসনকালে সিবিআই একটি রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির অস্ত্র ছাড়া আর কিছুই না, এ প্রতিষ্ঠান এখন নিজেই নিজের সঙ্গে যুদ্ধে নেমেছে।”
প্রসঙ্গত, রাকেশ আস্থানা ১৯৮৪ সালের গুজরাত ক্যাডারের আইপিএস অফিসার। ২০০২ এর গোধরা কাণ্ডে তদন্ত চালানোর লক্ষ্যে বিশেষ তদন্তকারী দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিতি আছে তাঁর।