দুর্নীতির অভিযোগে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের প্রাক্তন এমডি এবং সিইও চন্দা কোচরকে আটক করল সিবিআই। ভিডিওকন ঋণ কাণ্ডে ২০১৮ সালের মার্চ মাসে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছিল সিবিআই। ১০ মাস পর বৃহস্পতিবার নিউপাওয়ার রিনিউএবেল প্রাইভেট লিমিটেড (এনআরপিএল)-এর মালিক তথা প্রাক্তন আইসিআইসিআই চেয়ারম্যান চন্দা কোচরের স্বামী দীপক কোচর এবং ভিডিওকন গোষ্ঠীর ভেনুগোপাল ধুতের মধ্যে অবৈধ আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত অভিযোগ নথিভুক্ত করল সিবিআই।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রথম প্রকাশিত খবর অনুযায়ী ভিডিওকন গোষ্ঠীর প্রোমোটার ভেনুগোপাল ধুত এনআরপিএল সংস্থাকে ৬৪ কোটি টাকা দিয়েছিলেন। ঘটনাচক্রে সংস্থার মালিকানার কিছু অংশ রয়েছে চন্দার স্বামী দীপক কোচরের কাছে। সংস্থা তৈরির সময় ২০১২ সালে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক থেকে ৩,২৫০ কোটি টাকার ঋণ নেওয়া হয়েছিল। ঋণ মেলার মাস ছয়েকের মধ্যে ৯ লক্ষ টাকার বিনিময়ে দীপক কোচরের নিজের একটি ট্রাস্টকে এনআরপিএল-এর মালিকানা হস্তান্তরিত করা হয়। মোট ঋণের ৮৬ শতাংশ শোধ করা হয়নি। ভিডিওকনের অ্যাকাউন্টকে ইতিমধ্যে অনুৎপাদক সম্পদ (এনপিএ) হিসেবে ঘোষণা করেছে ব্যাঙ্ক। এর পাশাপাশি চন্দা মুম্বইতে বর্তমানে যে ফ্ল্যাটে থাকেন, তা বিধিসম্মত কী না, খতিয়ে দেখছে আয়কর কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন, সিবিআইয়ের ডিরেক্টর কে? ঠিক করতে পারল না প্রধানমন্ত্রীর কমিটি
প্রসঙ্গত, ৪ অক্টোবর, ২০১৮-তে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত খবরের জেরে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের সিইও এবং এমডি-র পদ থেকে সরে দাঁড়ান চন্দা কোচর।
গত বছর অক্টোবরে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানায়, ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে স্বার্থের সংঘাত সংক্রান্ত বিষয়ে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক এবং তৎকালীন এমডি চন্দা কোচরকে কোনোরকম ক্লিন চিট দেওয়া হয়নি।
সিবিআই জানিয়েছে এক কেন্দ্রীয় সরকারি আমলাসহ সুপ্রিম এনার্জি প্রাইভেট লিমিটেড, ভিডিওকন ইন্টারন্যাশনাল ইলেকট্রনিক লিমিটেড সংস্থা জড়িয়ে রয়েছে এই দুর্নীতিতে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছে যে অসৎ পদ্ধতিতে চন্দা তাঁর ক্ষমতার অপব্যবহার করে যে বিপুল অংকের ঋণ অনুমোদন করেছে স্বামীর সংস্থাকে, তা অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের আওতায় পড়ে। ভারতীয় দণ্ডবিধির দুর্নীতি দমন আইনের আওতায় এফআইআর দায়ের করেছে সিবিআই।
আরও পড়ুন, চূড়ান্ত নাগরিকপঞ্জি প্রকাশের সময়সীমায় নড়চড় মানা হবে না, হুঁশিয়ারি সুপ্রিম কোর্টের
অন্যদিকে, এক সপ্তাহের মধ্যেই চন্দা কোচর, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক এবং ভিডিওকন ঋণ কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টে রিপোর্ট পেশ করার কথা অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বি এন শ্রীকৃষ্ণর নেতৃত্বে গঠিত প্যানেলের। বিচারপতি শ্রীকৃষ্ণ বৃহস্পতিবার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, "আমার রিপোর্টের সঙ্গে সিবিআই তদন্তের কোনো সম্পর্ক নেই। জানুয়ারির শেষে আমার রিপোর্ট পেশ করা হবে। তবে সিবিআই কী পদক্ষেপ করবে, তার ওপর আমাদের রিপোর্ট নির্ভরশীল নয়"।
সিবিআই-এর দায়ের করা এফআইআর-এ বলা হয়েছে, ২০০৯-এর জুন থেকে ২০১২-এর অক্টোবর পর্যন্ত ভিডিওকন গোষ্ঠীর পাঁচটি সংস্থাকে যে ঋণ দেওয়া হয়েছে, তা ভারতীয় ব্যাঙ্ক ঋণ নীতি বহির্ভূত।
Read the full story in English