লোকসভা নির্বাচনের মাস ছয়েক আগে সিবিআই-এর ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই মুহূর্তে বিরোধী রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে প্রায় খান চব্বিশ মামলার ভার রয়েছে সিবিআই-এর ওপর। এই ধরণের মামলায় সিবিআই এখন কী সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই দেখার বিষয়।
বিজয় মালিয়া, নীরব মোদীর মামলা ছাড়াও শাসক দলের বিরোধী পক্ষের রাজনৈতিক নেতাদের প্রায় দু'ডজন মামলার দায়িত্বে রয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। হিমাচলপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বীরভদ্র সিং, হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভুপিন্দর সিং হুডার বিরুদ্ধে মামলার তদন্তের ভার রয়েছে সিবিআই-এর ওপর। সমর্থন আদায়ের জন্য এক কংগ্রেস আইনপ্রণেতাকে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হরিশ রাওয়াতের বিরুদ্ধে। আইআরসিটিসি কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত লালু প্রসাদ এবং তাঁর পুত্রের মামলার তদন্তের দায়িত্বও বর্তেছে ওই একই সংস্থার ওপর। বিগত চার বছরে এদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে, অপরাধমূলক মামলার অধীনে নথিভুক্ত হয়েছে এদের নাম।
সারদা এবং রোজভ্যালি কেলেঙ্কারিতে নাম জড়িয়েছে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় সহ একাধিক তৃণমূল নেতার নাম। নারদা স্টিং অপারেশনেও অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল নেতাদের নাম। আইএনএক্স মিডিয়া কাণ্ডে এবং ফরেন এক্সচেঞ্জ নিয়ম খর্ব করার কাণ্ডে নাম জড়িয়েছে কার্তি চিদাম্বরম এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদাম্বরমের নাম। নানা মামলায় একাধিক আপ নেতাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। তালিকায় রয়েছেন মায়াবতীও।
আরও পড়ুন, সিবিআই ডিরেক্টরের পদ থেকে রাতারাতি অপসারণ, সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ আলোক ভার্মা
প্রসঙ্গত ২০১৬ সালে সিবিআই-এর ডিরেক্টর পদে অলোক ভার্মার নিয়োগের ঠিক আগেই নানা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়া রাজনৈতিক নেতাদের মামলার তদন্ত করতে বিশেষ তদন্ত দল (এসআইটি) গঠিত হয়েছিল। দলের মাথায় ছিলেন গুজরাত ক্যাডারের আইপিএস অফিসার রাকেশ আস্থানা।
মঈন কুরেশি মামলায় সিবিআই-এর এক এবং দু' নম্বরে থাকা অলোক ভার্মা এবং রাকেশ আস্থানা, দুই আধিকারিককেই দায়িত্ব থেকে অপসারিত করা হল শেষ দিন তিনেকের মধ্যে।
মঙ্গলবার মধ্যরাতের নির্দেশ বলা হয়, ১৯৮৬ ব্যাচের ওড়িশা ক্যাডার অফিসার ও যুগ্ম ডিরেক্টর এম নাগেশ্বর রাও এবার সিবিআই ডিরেক্টরের দায়িত্বে নেবেন।উল্লেখ্য, এম নাগেশ্বর রাও এবছরই অতিরিক্ত ডিরেক্টরের পদে পদোন্নত হয়েছিলেন। সরকারি নির্দেশ বলা হয়েছে, ”ক্যাবিনেটের নিয়োগ কমিটির অনুমোদন অনুযায়ী এম নাগেশ্বর রাও সিবিআই-এর ডিরেক্টর পদে অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করবেন”।
সাম্প্রতিক অতীতে, বেশ কয়েকবার শাসক দলের প্রতি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে যে সংস্থার ওপর,২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনের আগ দিয়ে সেই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থায় ক্ষমতার হস্তান্তর কতটা প্রভাব ফেলবে, সময়ই বলবে তা।
Read Full Story in English