তিব্বত স্বশাসিত অঞ্চলের (টিবেট অটনমাস রিজিওন) বিস্তৃত এলাকা জুড়ে এবং লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল (এলএসি) ধরে চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি এয়ার ফোর্স (পিএলএএএফ), বায়ুসেনা, এবং এভিয়েশন পরিকাঠামো বাড়ানোর আকস্মিক তৎপরতা দেখে নড়েচড়ে বসেছে ভারতীয় বায়ুসেনা। এবং প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে ভারত-চিন পূর্ব সীমান্তে প্রতিবন্ধক বাড়ানোর পরিকল্পনা কার্যকর করছে তারা, যার মধ্যে রয়েছে আকাশ মিসাইল সিস্টেমের ছ'টি ইউনিটের নিয়োগ।
বিতর্কিত এই সীমান্তে চিনুক ও অ্যাপাচে হেলিকপ্টারের একটি করে স্কোয়াড্রনও মোতায়েন করা হবে, তৎসহ রুশ এস-৪০০ মিসাইল সিস্টেম এবং নতুন রাফাল যুদ্ধবিমানের একটি স্কোয়াড্রন।
চিনুক ও অ্যাপাচে হেলিকপ্টারগুলি সম্ভবত ২০২০ সালের মধ্যে এই এলাকায় মোতায়েন করা হবে, এবং এস-৪০০ মিসাইল সিস্টেম ও রাফাল যুদ্ধবিমান ২০২১ সালে মোতায়েন হবে বলে সূত্রের খবর। এছাড়াও এক বা একাধিক সুখোই সু- ৩০এমকেআই যুদ্ধবিমানের স্কোয়াড্রন নিয়োগ করা নিয়েও আলোচনা চলছে।
আরও পড়ুন: সিরিয়া থেকে সেনা তুলে নিচ্ছে মার্কিন প্রশাসন, জানাল হোয়াইট হাউজ
ভারতীয় বায়ুসেনার এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, "দোকলাম কাণ্ডের পর থেকেই তিব্বত স্বশাসিত অঞ্চলে চিন পরিকাঠামো বাড়ানোর তোড়জোড় করে চলেছে। অগাস্ট ২০১৪ থেকে শুরু করে ভারতীয় বায়ুসেনা আকাশের ছ'টি ইউনিট নিয়ে এসেছে এখানে। এর আগে পর্যন্ত এলাকায় বায়ুসেনার কোনো সার্ফেস টু এয়ার মিসাইল মোতায়েন ছিল না।" উল্লেখ্য, দোকলাম হলো ভারত, ভুটান, ও তিব্বতের মধ্যবর্তী সেই সীমান্ত এলাকা, যেখানে ২০১৭ সালে চিনের রাস্তা তৈরি করা নিয়ে ভারত-চিন মুখোমুখি সামরিক সংঘর্ষের উপক্রম দেখা দিয়েছিল।
ওই বায়ুসেনা আধিকারিক আরও জানান, "এলাকায় নজরদারি বাড়িয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনা। একদিকে পরিকাঠামো বাড়ছে, কিন্তু ওদিকে চিনা সেনাবাহিনীকে সেন্ট্রাল হিটিং সমেত তিনতলা বাড়ি দেওয়া হচ্ছে, যেগুলি বর্ডারের এপাশ থেকে পরিষ্কার দেখা যায়।"
তিব্বত স্বশাসিত অঞ্চল থেকে আসা গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুযায়ী, সাম্প্রতিক কালে চিনা বায়ুসেনা তাদের বাহিনী মোতায়েন করার নতুন পন্থা বেছে নিয়েছে, মূলত সামরিক এবং অসামরিক পরিবহণ ব্যবস্থার সাহায্যে। ওই রিপোর্ট আরও বলছে, জিনিং থেকে ১৩৬ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে চিংহাইতে একটি নতুন বিমানক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে, যা কিনা লাইন অফ কন্ট্রোল থেকে মাত্র ৭৫০ কিমি দূরে। এছাড়াও আরো তিনটি নতুন বিমানবন্দর গড়ে উঠছে লুন্টসে, টিংরি, ও পুরাংয়ে, তিনটিই ভারতের কাছাকাছি।
পাশাপাশি, গঙ্গারে অবস্থিত অসামরিক বিমানবন্দরের সামর্থ্য বাড়ানো হচ্ছে, যে কাজ ২০২০ সালের মধ্যে শেষ হবে বলে খবর। এর ফলে এই বিমানবন্দর ৯ মিলিয়ন যাত্রী ও ৮০,০০০ টন মালপত্র পরিচালনা করতে সক্ষম হবে, যার অর্থ হলো, এটি ভারী সামরিক কাজেও লাগানো যাবে। অন্যদিকে হোটান বিমানক্ষেত্রে বাড়ানো হচ্ছে রানওয়ের দৈর্ঘ্য, এবং সেপ্টেম্বর মাসে তিব্বতে চালু করে দেওয়া হয় রিকাজি-জিগাজি-জিনান আকাশপথ।
Read the full story in English