দ্বিপাক্ষিক সংলাপে গতি আনতে দিল্লিকে বেজিং-এর আবেদনের দিন কয়েক পরেই এব্যাপারে অবস্থান স্পষ্ট করল ভারত। চলতি বছরের শেষ দিকে চিনেই হতে চলেছে ব্রিকস (ব্রাজিল-রাশিয়া-ভারত-চিন-দক্ষিণ আফ্রিকা)-এর শীর্ষ সম্মেলন। তবে চিন প্রসঙ্গে এখনই নরম পন্থা নেওয়ার সময় আসেনি। সফররত জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সামনেই তা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি জানিয়েছেন, ভারত-চিন সম্পর্ক এখনই মসৃণ গতিতে এগনোর সম্ভাবনা নেই। লাদাখে অচলাবস্থার স্থায়ী সমাধান না মেলা পর্যন্ত এটা সম্ভবও নয়।
আলোচনার জন্য বেজিঙের দিল্লি দরবারের প্রসঙ্গটি এই প্রথম ভারত সরকারের তরফে খোলসা করেছেন বিদেশ সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা। জাপানের প্রধানমন্ত্রী ও মোদীর মধ্যে আলোচনার মাঝে তিনিও ছিলেন। সাংবাদিকদের শ্রিংলা বলেন, ''আলোচনায় চিনের বিষয়টি উঠে এসেছে। উভয় দেশই একে অপরকে তাদের দৃষ্টিভঙ্গির কথা জানিয়েছে। তিনি (প্রধানমন্ত্রী মোদী) লাদাখের পরিস্থিতি, সেনা সংগ্রহের চেষ্টা, একাধিক সীমা লঙ্ঘনের চেষ্টা সম্পর্কে জাপানকে অবহিত করেছেন।''
তিনি আরও বলেন, ''আমরা এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছি যে যতক্ষণ না সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও শান্তির সঙ্গে জড়িত সমস্যাগুলির সমাধান না হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা সম্পর্কটিকে স্বাভাবিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি না। সম্পর্কের স্বাভাবিকতা উল্লিখিত বিষয়গুলির অগ্রগতির উপর নির্ভর করবে।" একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, কিশিদা প্রধানমন্ত্রী মোদীকে জাপানের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি, পূর্ব ও দক্ষিণ চিন সাগর সম্পর্কে অবহিত করেছেন।
আরও পড়ুন- ভারতে বিপুল বিনিয়োগ করে আরও বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি এই বন্ধু দেশের
এরপর ভারত-জাপান যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, উভয় দেশই শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল এবং সমৃদ্ধ বিশ্বের দিকে একযোগে কাজ করার প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেছে। একটি নিয়ম-ভিত্তিক আদেশের ভিত্তিতে যা জাতির সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সম্মান করে। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীই নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির প্রশংসা করেছেন। এটিকে আরও জোরদার করার ক্ষেত্রেও তাদের ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এটাই ফুমিও কিশিদার প্রথম ভারত সফর। রবিবার সকালেই দিল্লি ছাড়বেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী। জাপান ভারতে আগামী পাঁচ বছরে ৫ ট্রিলিয়ন ইয়েন বা ৩.২ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। শনিবার জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর এমনই জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই টাকায় দেশের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ চলবে। পাশাপাশি, উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির উন্নয়নেও এই টাকা কাজে লাগানো হবে। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়েও ভারতে উন্নয়নের কাজ করতে চায় জাপান। কিশিদার এই সফর তারই সূচনালগ্ন।
Read full story in English