Arunachal Pradesh: ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ অরুণাচল প্রদেশ। চিনের আপত্তি উড়িয়ে বুধবার এই ঘোষণা করছে নয়াদিল্লি। সম্প্রতি উপ-রাষ্ট্রপতির অরুণাচল সফর নিয়ে আপত্তি তোলে বেজিং। সেই আপত্তির পিছনে কোনও যুক্তি নেই এই মন্তব্য করে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, ‘আমরা চিনা আধিকারিকের মন্তব্য শুনেছি। এই ধরনের মন্তব্য খারিজ করছি। দেশের রাষ্ট্র নেতারা বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য সরকারি কারণে সফর করেন। সেভাবেই অরুণাচল গিয়েছিলেন উপ-রাষ্ট্রপতি। চিনের এই মন্তব্যের কোনও কারণ নেই।‘
এদিকে, ভারত-চিন সীমান্ত দ্বন্দ্ব জিইয়ে রইল। রবিবার দু’পক্ষের মধ্যে ১৩তম রাউন্ডের কমান্ডার-স্তরের আলোচনা কার্যত নিষ্ফলা। সোমবার ভারতীয় সেনাবাহিনীর তরফেই এই ইঙ্গিত মিলেছে। রবিবারের আলোচনায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় স্ট্যান্ডঅফ সমাধানের জন্য অচলাবস্থা কাটাতে চিনের তরফে সদর্থক ভূমিকা দেখা যায়নি বলেই জানাল ভারতীয় সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনী একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘বৈঠকে চিন গঠনমূলক পরামর্শ দিলেও নানা প্রশ্নে সম্মতির ব্যাপারে তাদের ভূমিকা সদর্থক ছিল না। তারা কোনও দূরদর্শী প্রস্তাবও দিতে পারেনি।’ যদিও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে দু’তরফেই যাবতীয় পদক্ষেপের আশ্বাস মিলেছে।
বছরখানেক ধরে চিনের সঙ্গে সীমান্ত দ্বন্দ্ব জারি রয়েছে ভারতের। গত বছর গালওয়ানে চিন সেনার হামলায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকজন জওয়ান নিহত হন। পাল্টা ভারতের তরফেও যোগ্য জবাব দেওয়া হয়েছে। সেই ঘটনার পর থেকেই লাদাখে ভারত-চিন সীমান্ত দ্বন্দ্ব বেড়েছে। তবে দ্বন্দ্ব কাটাতে উদ্যোগও জারি রয়েছে। এর আগে ১২ বার ভারত-চিন কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। রবিবার হল ১৩তম বৈঠক। তবে সেই বৈঠকেও সমাধানসূত্র মেলেনি। গতকালের বৈঠক প্রসঙ্গে ভারতীয় সেনাবাহিনীর তরফে এদিন বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ‘এটা আমাদের প্রত্যাশা, যে চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে বিবেচনা করবে। দ্বিপাক্ষিক চুক্তি এবং প্রটোকল সম্পূর্ণরূপে মেনে চলার পাশাপাশি বাকি সমস্যাগুলির দ্রুত সমাধানের দিকে কাজ করবে চিন।’
দু’মাসেরও বেশি সময় পরে রবিবার ভারত ও চিনের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক হল। এর আগে গত ১৩ জুলাই দু’পক্ষের মধ্যে শেষ বৈঠক হয়েছিল। উল্লেখ্য, ডিপসাং এলাকায় চিন ভারতকে তার পাঁচটি টহল পয়েন্ট – PP10, PP11, PP11A, PP12, এবং PP13- এ ঢুকতে বাধা দিচ্ছে। চিন থেকে কিছু “তথাকথিত নাগরিক” ডেমচোকে ভারতের দিকে চারডিং নালার পাশে তাঁবু গেড়েছে।
আরও পড়ুন- ‘বিদ্যুৎ সংকট দেখেও চোখ বন্ধ রেখেছে কেন্দ্র’, তোপ সিশোদিয়ার
গত কয়েক সপ্তাহে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় গতিবিধি বাড়িয়েছে চিন। এমনকী অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াঙে দিন কয়েক আগেই চিন ও ভারতীয় সেনাবাহিনী পেট্রোলিংয়ের সময় মুখোমুখি এসে যায়। সেই সময় দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি-ধাক্কাধাক্কির পরিস্থিতিও তৈরি হয়েছিল। এছাড়াও উত্তরাখণ্ডের বারাহোতিতে গত অগাস্ট মাসে চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে গিয়েছিল। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চিনা প্ররোচনা জারি রয়েছে। দিন কয়েক আগে একটি অনুষ্ঠানেও একথা জানিয়েছিলেন সেনাপ্রধান এমএম নারাভানে। তিনি জানিয়ছিলেন, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে পাপাপাকিভাবে থাকার জন্য নির্মাণকাজ চালাচ্ছে চিন। বিষয়টি উদ্বেগজনক বলেও মন্তব্য করেছিলেন সেনাপ্রধান নারাভানে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন