ক্রমশই প্রতিরোধের আগুন ছড়িয়ে পড়ছে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে। প্রতিবাদ-বিক্ষোভের আগুন জ্বলছে উত্তরপ্রদেশের একাধিক জেলায়। বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে উত্তরপ্রদেশের জেলাগুলিতে মোতায়েন করা হল স্পেশাল ফোর্স। কানপুর, সাম্বল, লখনউ, বুলান্দশহর, বিজনৌর, ফিরোজাবাদ সহ বেশ কয়েকটি জেলায় বন্ধ রয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। হিংসার জেরে ৩৬ জন পুলিশ কর্মী জখম হয়েছে বলে দাবি প্রশানের। এদের মধ্যে ৬ জনের শরীরে বুলেট ক্ষত রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে শুক্রবার সারা দিনভর উত্তপ্ত ছিল দিল্লি-সহ বিভিন্ন রাজ্য। তিনঘন্টা যাবৎ শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের মাঝে হঠাৎই হিংসাত্মক আকার নেয় বিক্ষোভ। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় গাড়ি। এ মতো অবস্থায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে জল কামান ছোঁড়ে পুলিশ। রাজধানীর মতোই দফায় দফায় উত্তপ্ত হয় উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন এলাকা। ১৫টিরও বেশি জেলায় পুলিশের সঙ্গে ঝামেলায় জড়ায় আন্দোলনকারীরা। পরিস্থিতি সামলাতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ, ছোঁড়ে কাঁদানে গ্যাসের শেল।
Read the full story in English
প্রসঙ্গত, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাসের পর থেকেই দেশজুড়ে দ্বেষের চিত্র। জামিয়া মিলিয়া-আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশি অত্যাচার সেই আগুনেই ঘৃতাহুতি দিয়েছে। সোচ্চার হয়েছে দেশের বিদ্বজ্জন থেকে ছাত্রছাত্রী, রাজনীতিকরা। আটক হয়েছেন কয়েক হাজার। এ মতো অবস্থায় দেশের সুরক্ষা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জরুরি বৈঠক ডাকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিশান রেড্ডি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় কুমার ভাল্লা এই বৈঠকে অংশ নিয়েছেন বলে খবর।
আরও পড়ুন: ‘প্রতিবাদীদের সম্পত্তি নিলাম করে বদলা নেব’, হুমকি যোগীর
উল্লেখ্য, শুক্রবারই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রি অমিত শাহের বাসভবনের সামনে প্রতিবাদের জেরে আটক হন দিল্লি মহিলা কংগ্রেসের প্রধান তথা প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কন্যা শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়। আটক করে তাঁকে মন্দির মার্গ পুলিশ স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, এমনটাই খবর।
Live Blog
Citizenship Act protests Updates, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় সরব দেশের সব প্রান্ত, সব খবরের আপডেট দেখুন, Follow the Updates here:
প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি-কন্যা আটকের পর টুইট করে জানিয়েছেন, "দিল্লি প্রদেশ মহিলা কংগ্রেস অমিত শাহের বাসভবনের বাইরে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিল। আমাদের আটক করে মন্দির মার্গ থানায় আনা হয়েছে।"
.@DelhiPMC staged a flash protest against CAA outside @AmitShahs’ residence. We’ve been detained & brought at Mandir Marg police station pic.twitter.com/iYfqhDpwUZ
— Sharmistha Mukherjee (@Sharmistha_GK) December 20, 2019
শুক্রবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রি অমিত শাহের বাসভবনের সামনে প্রতিবাদের জেরে আটক হলেন দিল্লি মহিলা কংগ্রেসের প্রধান তথা প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কন্যা শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়। আটক করে তাঁকে মন্দির মার্গ পুলিশ স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, এমনটাই খবর।
সিএএ ও এনআরসি বিরোধী বিক্ষোভের তপ্ত হয়েছে গোটা আসাম সহ উত্তর পূর্ব ভারত। আসামে প্রাণ গিয়েছে বেশ করেয়কজন বিক্ষোভকারীর। বিক্ষোভের আঁচ রুখতে আসামে ইন্টারনেট, মোবাইল পরিষেবা বন্ধ করে দেয় বিজেপির সর্বানন্দ সোনোয়ালের সরকার। কেটে গিয়েছে ৯ দিন। এখন অনেকটাই শান্ত উত্তর পূর্বের এই রাজ্যটি। শেষমেষ ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করল রাজ্য সরকার। তবে, বৃহস্পতিবারের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ইন্টারনেট ও মোবাইল পরিষেবার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে উত্তরপ্রদেশ ও কর্নাটকের বিস্তীর্ণ অংশে। বিস্তারিত পড়ুন এই প্রতিবেদনে, আসামে চালু হলেও উত্তরপ্রদেশ, কর্নাটকের বিস্তীর্ণ অংশে বন্ধ নেট পরিষেবা
সংশোধিত নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে উত্তাল হয়েছে দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, পশ্চিমবঙ্গ। সেই আবহেই বিজেপির কার্যনির্বাহী সভাপতি জেপি নাড্ডা বলেন, "প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজির নেতৃত্বে এগিয়ে চলেছে দেশ, ভবিষ্যতে আরও এগিয়ে যাবে। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন দেশে কার্যকর হবে এবং ভবিষ্যতে এনআরসিও হবে।"
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে যখন উত্তাল গোটা দেশ, সেই আবহেই এবার মুখ খুলল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। টুইট করে বলা হয়েছে, "১৯৭১ সালের আগে থেকে থাকা ভারতীয় নাগরিকদের পরিচয়পত্র, জন্ম শংসাপত্র ইত্যাদি নথি উপস্থাপনের মাধ্যমে কোনও পূর্বসূরির প্রমাণ করতে হবে না। যে সকল নাগরিকের কোনও নথি নেই, কর্তৃপক্ষ তাঁদের প্রমাণের জন্য স্থানীয় কোনও ব্যক্তিকে উপস্থাপন করানোর অনুমতি দিতে পারে। একটি সুগঠিত পদ্ধতি অনুসরণ করেই নাগরিক সংশোধনী আইন লাগু করা হবে।"
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে যখন উত্তাল গোটা দেশ, সেই আবহেই এবার মুখ খুলল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। টুইট করে বলা হয়েছে, "১৯৭১ সালের আগে থেকে থাকা ভারতীয় নাগরিকদের পরিচয়পত্র, জন্ম শংসাপত্র ইত্যাদি নথি উপস্থাপনের মাধ্যমে কোনও পূর্বসূরির প্রমাণ করতে হবে না। যে সকল নাগরিকের কোনও নথি নেই, কর্তৃপক্ষ তাঁদের প্রমাণের জন্য স্থানীয় কোনও ব্যক্তিকে উপস্থাপন করানোর অনুমতি দিতে পারে। একটি সুগঠিত পদ্ধতি অনুসরণ করেই নাগরিক সংশোধনী আইন লাগু করা হবে।"
শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের মাঝে হঠাৎই হিংসাত্মক আকার নেয় বিক্ষোভ। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় গাড়ি। এ মতো অবস্থায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে জল কামান ছোঁড়ে পুলিশ। রাজধানীর মতোই দফায় দফায় উত্তপ্ত হয় উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন এলাকা। ১৫টিরও বেশি জেলায় পুলিশের সঙ্গে ঝামেলায় জড়ায় আন্দোলনকারীরা।
নাগরিকত্ব আইন 'বৈষম্যমূলক', এই আইনকে কোনওভাবেই সমর্থন করে না কংগ্রেস, জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে এমনটাই জানালেন কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। তিনি বলেন, "গণতন্ত্রে সরকারের ভুল সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কথা বলার অধিকার রয়েছে মানুষের। কিন্তু বিজেপি সরকার মানুষের এই অধিকারের প্রতি অন্যায় করেছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে কন্ঠরোধ করতে চেয়েছে দেশের মানুষের।"
অভিনব পদ্ধতিতে বিক্ষোভকারীদের থামালেন বেঙ্গালুরুর ডিএসপি চেতন রাঠোর। প্রতিবাদীর সঙ্গে ‘জন গণ মন’ গাইলেন পুলিশের ওই উচ্চ আধিকারিক। তারপরই এলাকা ফাঁকা হয়ে যায়। বৃহস্পতিবারের এই ভিডিও ভাইরাল হতেই নেট দুনিয়ায় সাড়া পড়ে যায়। প্রশাংসা পায় বেঙ্গালুরুর ডিএসপি-র উদ্যোগ। সবিস্তারে পড়ুন, মেলাল ‘জন গণ মন’, পুলিশ বিক্ষোভকারী সমবেত জাতীয় সঙ্গীত
এ যেন ঠিক সিনেমা। জামা মসজিদের বিক্ষোভ থেকে ভীম সেনা প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদকে আটকের পরই পুলিশের চোখে ধূলো দিয়ে পালালেন এই নেতা। জামা মসজিদে প্রতিবাদ বিক্ষোভের অনুমতি ছিল না। সেই পুলিশি বাধা অতিক্রম করেই জামা মসজিদে প্রতিবাদে সামিল হন চন্দ্রশেখর। সেখান থেকেই আটক করা হয় ভীম সেনা প্রধানকে। কিন্তু আটকের কিছু পরেই পুলিশের হাত থেকে বেরিয়ে জনতার ভীড় কাটিয়েই পালিয়ে যান চন্দ্রশেখর। এই ছাদ থেকে ওই ছাদে লাফ দিয়ে পালায় এই ভীম সেনা প্রধান।
দিল্লিতে জামা মসজিদের প্রতিবাদে অংশ নেওয়ার কারণে আটক হলেন ভীম সেনা প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদের অনুমতি ছিল না প্রথম থেকেই। কিন্তু পুলিশি বাধা না মেনেই জামা মসজিদে প্রতিবাদে সামিল হন চন্দ্রশেখর। জামা মসজিদ থেকে যন্তর মন্তর মিছিল করার কথাও ছিল প্রতিবাদকারীদের।
সংশোধিত নাগরিক আইনের প্রতিবাদে দিল্লির জামা মসজিদে প্রতিবাদের চিত্র
এক্সপ্রেস ফোটো- প্রভীন খান্না
এনআরসি ও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদীর মৃত্যুর দেখেছে আসাম। এবার তারই প্রতিফলন লখনউ ও ম্যাঙ্গালুরুতে। বৃহস্পতিবার দেশজুড়ে এনআরসি ও সিএএ বিক্ষোভ প্রবল হয়। দিল্লির পাশাপাশি তা একাধিক রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিবাদীদের আটকাতে রীতিমত বেগ পেতে হয় পুলিশকে। এরই মাঝে উত্তরপ্রদেশের রাজধানী শহর লখনউতে গুলিতে প্রাণ গিয়েছে এক প্রতিবাদীর। উপকূলীয় কর্নাটকের ম্যাঙ্গালুরুতে নিহত দুই বিক্ষোভকারী। প্রতিবাদ দমনের নামে পুলিশের ছোঁড়া গুলিতেই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন ম্যাঙ্গালুরুতে সিটি কর্পোরেশনের এক কাউন্সিলর। যদিও তা মানতে চায়নি পুলিশ। সবিস্তারে পড়ুন, সিএএ প্রতিবাদ, দুই বিজেপি শাসিত রাজ্যে নিহত তিন বিক্ষোভকারী