'দেশের বেশ কয়েকটি মিডিয়া সংস্থা ক্যাঙ্গারু আদালত পরিচালনা করছে। অভিজ্ঞ বিচারকদেরও যেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন হয়ে ওঠে, সেখানে নিজেদের মত দিচ্ছে। এর ফলে গণতন্ত্র পিছিয়ে পড়ছে।'- এমনটাই মত দেশের প্রধান বিচারপতি এনভি রামানার। বর্তমান সময়ে ভারতীয় বিচারব্যবস্থার সমস্যা নিয়ে বলতে গিয়ে শনিবার তিনি একথাই জানান।
রাঁচিতে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ স্টাডি অ্যান্ড রিসার্চ ইন ল-এর এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করতে গিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, 'ন্যায়বিচার প্রদানের সঙ্গে জড়িত বিষয়গুলি না-জানা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিতর্ক অনুষ্ঠান গণতন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক প্রমাণিত হচ্ছে। মিডিয়া দ্বারা প্রচারিত পক্ষপাতদুষ্ট মতামত জনগণকে প্রভাবিত করছে। একইসঙ্গে গণতন্ত্রকে দুর্বল করছে এবং গোটা ব্যবস্থার ক্ষতি করছে। এই প্রক্রিয়ায়, ন্যায়বিচার প্রদানের ওপরও বিরূপ প্রভাব পড়ছে।'
তিনি আরও বলেন, 'গণমাধ্যম তাদের দায়িত্ব লঙ্ঘন করে গণতন্ত্রকে ক্রমশ পিছনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। প্রিন্ট মিডিয়া এখনও একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় জবাবদিহি করে থাকে। কিন্তু, ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার কোনও জবাবদিহির ব্যাপারই নেই। কারণ এটি যা দেখায়, তা কিছুক্ষণের মধ্যে শেষ হয়ে যায়। আর, সোশ্যাল মিডিয়া এব্যাপারে আরও খারাপ।'
আরও পড়ুন- উপত্যকায় অব্যাহত পাক ‘সুড়সুড়ি’, ড্রোন ঢুকতেই মুহুর্মুহূ গুলি, জারি তল্লাশি
প্রধান বিচারপতি বলেন, 'মিডিয়ার উচিত নিজেকে নিয়ন্ত্রিত করা। সেটাই ঠিক। সরকার বা আদালতের কাজে মিডিয়ার হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। বিচারক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া না-ও দিতে পারেন। কিন্তু, সেটাকে দয়া করে দুর্বলতা বা অসহায়ত্ব বলে ভুল করবেন না। যখন স্বাধীনতা দায়িত্বশীলভাবে ভোগ করা হয়। তা নির্দিষ্ট ক্ষেত্রের মধ্যে থাকে, তখন যুক্তিসঙ্গতভাবেই কোনও বিধিনিষেধের প্রয়োজন পড়ে না।'
বিচারকদের উপর শারীরিক আক্রমণ বৃদ্ধির প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে প্রধান বিচারপতি রমনা বলেন, 'রাজনীতিবিদ, আমলা, পুলিশ অফিসার ও অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদের প্রায়শই তাদের কর্মজীবনের অবসরের পর সংবেদনশীলতার কারণে নিরাপত্তা দেওয়া হয়। দুঃখের বিষয় হল, বিচারকদের একইভাবে সুরক্ষা বহাল রাখা হয় না।' বিচারকদেরও একইভাবে সুরক্ষার প্রয়োজন রয়েছে বলেই প্রধান বিচারপতি জানান।
Read full story in English