Advertisment

করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন- সারা পৃথিবীর সাম্প্রতিকতম আপডেট

Bharat Biotech International Limited (BBIL) জানিয়েছে তারা মোটামুটি ঠিক পথে এগোচ্ছে এবং আগামী এক মাস সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সংস্থা আইসিএমআরের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ভ্যাকসিন তৈরি করছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Coronavirus Vaccine Update

প্রতীকী ছবি

সারা দেশে করোনাআক্রান্তের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান, যা প্রায় ৬৩ লক্ষ ছুঁইছুঁই। এ সময়ে ভ্যাকসিনের জন্য বেশ কিছু ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হচ্ছে, যা সার্স কোভ ২ বিরোধী দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধে আশার আলো।

Advertisment

সাম্প্রতিক উল্লেখযোগ্য ঘটনা হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন পাঁচটি সংস্থাকে বেছে নিয়েছে যারা ভ্যাকসিন তৈরি করবে, এদিকে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও আস্ট্রাজেনেকা সংস্থার যৌথ উদ্যোগে তৈরি ভ্যাকসিনের মানুষের উপর পরীক্ষার অনুমোদন দিয়েছে ব্রাজিল।

সারা পৃথিবীতে ১২০টির মত ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ চলছে, যার মধ্যে অন্তত ১০টির ক্ষেত্রে মানুষের উপর পরীক্ষা চলছে। ভারতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন জানিয়েছেন ১৪টি কোভিড ১৯ ভ্যাকসিনের মধ্যে চারটি আগামী তিন থেকে পাঁচ মাসের মধ্যে ক্লিনিকাল ট্রায়ালের পর্যায়ে যাবে।

করোনা ভ্যাকসিন জোট-কে ১৫ মিলিয়ান ডলার অর্থ সাহায্য মোদী সরকারের

করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন সম্পর্কিত সাম্প্রতিকতম আপডেট:

নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত খবর অনুসারে  Moderna Inc, AstraZeneca Plc এবং Pfizer Inc একটি ইঞ্জেকশন প্রস্তুত করতে চলেছে। অন্য সংস্থার মধ্যে রয়েছে Johnson & Johnson এবং Merck & Co Inc।

মনোনীত সংস্থাগুলি অতিরিক্ত সরকারি আর্থিক সাহায্য পাবে, ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ও অন্যান্য বিষয়েও সরকার তাদের সহায়তা করবে। উল্লেখযোগ্যভাবে এই রিপোর্টে সম্ভাব্য ভ্যাকসিন সৃষ্টিকারী ফরাসি ওষুধনির্মাতা সংস্থা Sanofi, Novavax Inc ও Inovio Pharmaceuticals Inc.-র নাম উল্লেখ করা হয়নি।

আমেরিকা ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য বিপুল সংখ্যক, ১ থেকে দেড় লক্ষ স্বেচ্ছাসেবীর ব্যবস্থা করছে। মধ্য পর্যায়ের পরীক্ষা জুলাই থেকে শুরু করা সরকারের লক্ষ্য। Moderna এবং AstraZeneca/Oxford বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্বিনেশন নিয়ে

প্রথম দুটি ভ্যাকসিন নিয়ে মধ্যপর্যায়ের পরীক্ষা হবে বলে সংবাদসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।

ChAdOx1 nCoV-19ভ্যাকসিন তৈরি করেছে Oxford বিশ্ববিদ্যালয় ও AstraZeneca Plc, জানিয়েছে রয়টার্স। ব্রাজিলের মত জায়গায়, যেখানে সংক্রমণ এখনও ঊর্ধ্বগতিতে। ব্রিটেন, মূল ইউরোপ ও আমেরিকার মত জায়গায়, যেখানে সংক্রমণের সংখ্যা কমছে, সেখানে ব্যবহৃত  ভ্যাকসিন  ব্রাজিলে ব্যবহার করার কথা ভাবা হচ্ছে।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাকসিন প্রথম কোভিড ১৯ ভ্যাকসিন যা দ্বিতীয় পর্যায়ে বা মধ্যবর্তী পর্যায়ের ট্রায়ালের মধ্য দিয়ে যাবে, সঙ্গে মার্কিন বায়োটেক সংস্থা Moderna Inc.-র ভ্যাকসিনও। গবেষকরা কাজে দ্রুততা আনার জন্য দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল একসঙ্গে করার কথা ভেবেছেন, যাতে বৃহত্তর বয়ঃগোষ্ঠীর মানুষদের রাখা হবে।

ব্রাজিলের স্বাস্থ্য নিয়ামক আনভিসা এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, এটি একটি র‍্যান্ডমাইজড কন্ট্রোলড তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল যার মাধ্যমে ChAdOx1 nCoV-19 ভ্যাকসিনের নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হবে। সাও পাওলো ফেডারেল ইউনিভার্সিটি জানিয়েছে তারা ১০০০ সামনের সারির স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করবে যাঁরা এ রোগের সংস্পর্শে আসেননু।

Moderna Inc গত সপ্তাহে তাদের ভ্যাকসিন mRNA-1273 নিয়ে দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা শুরু করেছে। জুলাই মাসে তারা অন্তিম পর্যায়ের ট্রায়ালের পরিকল্পনা করছে।

ভ্যাকসিন তৈরির তৃতীয় তথা অন্তিম পর্যায়ের ট্রায়ালের জন্য ৩০ হাজার জনকে নথিভুক্ত করা হবে, মূলত ১৮-৫৫ বয়ঃগোষ্ঠীর মানুষের মধ্যে। তবে একই সঙ্গে রাখা হবে বয়স্ক ও কোভিড ১৯-এর ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে থাকা মানুষদেরও।

ন্যাশনাল ইনস্টিট্যুট অফ অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশস ডিজিজের ডিরেক্টর ডক্টর অ্যান্টনি ফৌসি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের ফল এ বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বর থেকে পাওয়া যাবে। তিনি আরও বলেন তার মধ্যে  Moderna ১০০ মিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন তৈরি করে ফেলবে।

এ মাসের গোড়ায় Moderna তাদের প্রাথমিক স্তরের পরিসংখ্যান প্রকাশ করে জানিয়েছিল এই ভ্যাকসিন একটি ছোট স্বাস্থ্যবান স্বেচ্ছাসেবক গোষ্ঠীর শরীরে সুরক্ষাদায়ক অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে।

ভারতে ৩০টি ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ চলছে। এদের মধ্যে  Bharat Biotech International Limited (BBIL) জানিয়েছে তারা মোটামুটি ঠিক পথে এগোচ্ছে এবং আগামী এক মাস সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সংস্থা আইসিএমআরের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ভ্যাকসিন তৈরি করছে।

সংবাদ সংস্থা আইএএনএস-কে ভারত বায়োটেকের চিফ একজিকিউটিভ অফিসার কৃষ্ণমোহন এলা বলেছেন, "আমরা অতি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছি। ভ্যাকসিন প্রস্তুতি ইতিবাচক দিকে এগোচ্ছে। পরের এক মাস খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি একজন বিজ্ঞানী এবং আমি বিজ্ঞানে বিশ্বাস করি।"

ইতিমধ্যে পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিট্যুট অফ ভাইরোলজিকে সরকার একটি ভ্যাকসিন ৩০ টি স্ত্রী বাঁদরের উপর পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছে। একটি মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে এই বিজ্ঞানীরা ৩-৪ বছর বয়সী বাঁদরদের উপর এই পরীক্ষা করবেন।

এই গবেষণা দুটি পর্যায়ে হবে। প্রথম পর্যায়ে ৪০ জন স্বাস্থ্যবান ১৯-৫০ বছর বয়স্কদের মধ্যে ভ্যাকসিনের সুরক্ষা পরীক্ষা করা হবে। এর পর পরবর্তী ক্ষেত্রে সহ্যক্ষমতা ও প্রতিষেধক ক্ষমতা পরীক্ষা করা হবে ১৯-৬৪ বছরের ১২০ জনের মধ্যে।

প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষার ফল সেপ্টেম্বরের শুরুতে পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করা হচ্ছে।

এদিকে ভারতে হোমিওপ্যাথি ওষুধ আর্সেনিকাম অ্যালবাম ৩০ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। কোভিড-১৯-এর প্রতিষেধক ওষুধ হিসেবে একে বেশ কিছু রাজ্যে সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে রাজস্থান, কর্নাটক, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ ও কেরালা।

আইসিএমআর-এর ডিরেক্টর ডক্টর বলরাম ভার্গব ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন “আমরা ও ওষুধ নিয়ে কোনও গাইডলাইন জারি করিনি।” বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এ নিয়ে কোনও গাইডলাইন দেয়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখ্য বিজ্ঞানী ডক্টর সৌম্য স্বামীনাথন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন “এ ওষুধ কাজ করে বলে কোনও প্রমাণ নেই।”

coronavirus COVID-19
Advertisment