মে-র প্রথম সপ্তাহে কোভিড-১৯ সংক্রমণ বৃদ্ধির হার ঊর্ধ্বমুখী। তবে, এপ্রিল ১৩ থেকে মে মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত ভারতে সংক্রমণের হার ১.২৩ শতাংশ। তৃতীয় পর্যায়ের লকডাউনে বেশ কিছু ছাড় ঘোষণা করা হয়েছে। তারপরও সংক্রমণ বৃদ্ধির হার ১.২৩-তেই স্থির রয়েছে। ইন্সটিটিউট অফ ম্যাথমেটিক্যাল সায়েন্স, চেন্নাইয়ের সমীক্ষায় এই তথ্য উঠে এসেছে।
Advertisment
লকডাউনের শুরুর দিকে (২৭ মার্চ-৬ এপ্রিল) সংক্রমণের প্রাথমিক হার ছিল ১.৮৩। সংক্রমক রোগের ক্ষেত্রে ভাইরাসের প্রজননের সংখ্যা সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রকোপকে সূচিত করে। মূলত একজন সংক্রমিতের দ্বারা অন্য কতজন সংক্রমিত হলেন তা বোঝা যায়। বর্তমানে আর নম্বর (ভাইরাস প্রজননের হার) ১.২৩ দ্বারা সূচিত হয় যে, ভারতে এক জন করোনা সংক্রমিতের দ্বারা গড়ে ১.২৩ জন ব্যক্তি কোভিড-১৯-য়ে সংক্রমিত হচ্ছেন।
Advertisment
এপ্রিল ২০ ও মে মাসের ৪ তারিখ- লকডাউন সাময়িক শিথিলের দিনে, ভাইরাস সংক্রমণের এই হার মিলেছে। লকডাউন ৩.০ পর্যন্ত ভারতে প্রায় ৭০-৮০ হাজার মানুষ করোনা আক্রান্ত হবেন বলে অনুমান। মঙ্গলবারই অ্যাকটিভ কেসের সংখ্য়া ছিল ৪৬,০০৮। ভারতের যেসব রাজ্যে করোনার প্রকোপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে তার মধ্যে অন্যতম, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, গুজরাট, দিল্লি ও পশ্চিমবঙ্গ। এর মধ্যে তামিলনাড়ুতে আর নম্বর (ভাইরাস প্রজননের হার) প্রায় ২.০১। দিল্লিতেও আর নম্বরের হার ঊর্ধ্বমুখী।
বাংলায় মোট সংক্রমণের হার তুলনামূলকভাবে কিছুটা কম। এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত এ রাজ্যে আর নম্বর (ভাইরাস প্রজননের হার) ১.৫১ হলেও মে-র প্রথমে সেই সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ১.১৪-য়ে। তবে, মে মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত বাংলায় ভাইরাস প্রজননের হার বেড়ে হয়েছে ১.৩৪। পশ্চিমবঙ্গে নমুনা সংগ্রহের হারও কম (প্রতি হাজারে ০.৪৫ জনের পরীক্ষা করা হচ্ছে)।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১১০ জনের শরীরে কোভিড ১৯ মিলেছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত রাজ্যে অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা ১৩৬৩। রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২১৭৩। রাজ্য় করোনা মুক্ত হয়েছেন ৬১২ জন। মৃত ১২৬ জন, স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন সূত্রে এমনটাই জানা যাচ্ছে।
পরিযায়ীরা বাড়ি ফিরছেন। এই কারণে পূর্ব ভারতের বিহার, ওড়িশায় বিগত কয়েকদিনে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গিয়েছে। এই দুই রাজ্যে নমুনা পরীক্ষার হারও কম। বিহারে প্রতি হাজারে ০.২৯ জনের নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। ওড়িশায় এই হার কিছুটা বেশি (প্রতি হাজারে ১.৩৭ শতাংশ)।
ইন্সটিটিউট অফ ম্যাথমেটিক্যাল সায়েন্স, চেন্নাইয়ের গবেশক সীতাভ্র সিনহার মতে, 'লকডাউন, সংক্রমণ রোধের অন্যতম একটি উপায়, তবে শুধু এর দ্বারাই করোনা সংক্রমণ ঠেকানো অসম্ভব।' সংক্রমণ ঊর্ধবমুখী হলেও তা রোধ সম্ভব বলে মনে করেন এইমসের ডিরেক্টর ডাঃ রণদীপ গুলেরিয়া।