কোভিড ১৯ ভ্যাকসিন তৈরিতে পৃথিবীর মধ্যে আমেরিকা ও চিন এগিয়ে থাকলেও ইতালির স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক কর্তা বলেছেন ইউরোপ এই দৌড়ে অনেক এগিয়ে এবং এবছর শরৎ থেকে শীতকালের মধ্যে প্রথম ডোজ পাওয়া যেতে পারে।
ইতিমধ্যে জনসন অ্যান্ড জনসন সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে দু মাসের মধ্যে মানুষের উপর ভ্যাকসিন পরীক্ষা শুরু করবে। এর পরেই সংস্থার শেয়ারের দাম ২ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। অন্যদিকে Moderna Inc তাদের ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা শুরু করেছে ৬০০ জনের মধ্যে।
এদিকে ভারতের বায়োটেকনোলজি সংস্থা Panacea Biotec, রয়টার্সের খবর অনুসারে মার্কিন সংস্থা Refana Inc-র সঙ্গে যৌথভাবে পরীক্ষামূলক কোভিড ১৯ ভ্যাকসিন তৈরি, প্রস্তুত ও সরবরাহ করবে।
সারা পৃথিবীতে প্রায় ১০০ কোভিড ভ্যাকসিন তৈরির কাজ বিভিন্ন পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে। এগুলি তৈরি করছে AstraZeneca, Pfizer, BioNtech, Johnson & Johnson, Merck, Moderna, Sanofi এবং চিনের CanSino Biologics।
করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের সাম্প্রতিক আপডেট:
রয়টার্সের খবর অনুসারে মার্চ মাসে J&J মার্কিন সরকারের সঙ্গে ২০২১ সাল জুড়ে ১ বিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন প্রস্তুত করার জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষমতা বাড়ানোর চুক্তি সই করেছে।
সংস্থার চিফ সায়েন্টিফিক অফিসার পল স্টোফেলস বলেছেন, “এতদিন পর্যন্ত পাওয়া পরিসংথ্যানের ভিত্তিতে এবং নিয়ামক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আমরা ক্লিনিকাল কাজ ত্বরান্বিত করতে সক্ষম হয়েছি।”
এই স্টাডিতে ভ্যাকসিনের সুরক্ষা এবং কার্যকারিতার প্রাথমিক লক্ষণের জন্য ১৯ থেকে ৫৫ বছর বয়সী এবং ৬৫ ঊর্ধ্ব ১০৪৫ জন স্বাস্থ্যবান স্বেচ্ছাসেবকের মধ্যে তা পরীক্ষা করা হবে। এই ট্রায়াল হবে আমেরিকা ও বেলজিয়ামে।
নির্দিষ্ট সময়ের আগে বড় আকারের ও শেষ ধাপের ট্রায়ালের জন্য ন্যাশনাল ইনস্টিট্যুটস অফ অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজের সঙ্গেও কথা বলছে সংস্থাটি।
ইবোলা ভ্যাকসিন, জিকা ভাইরাস, আরএসভি ও এইচ আই ভি- ভ্যাকসিন তৈরির ক্ষেত্রে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছিল, এবারও তাই ব্যবহার করা হবে।
রতের Panacea Biotec এক বিবৃতিতে জানিয়েছে তারা ৫০০ মিলিয়ন ডোজ তৈরি করার লক্ষ্যে মার্কিন সংস্থা Refana Inc-র সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। যৌথ উদ্যোগের কারখানা তৈরি হবে আয়ারল্যান্ডে।
এই অংশিদারিত্বে Panacea Biotec ভ্যাকসিন তৈরি ও বাণিজ্যিক উৎপাদনের দায়িত্বে থাকবে এবং অন্য সংস্থাটি ক্লিনিকাল ডেভেলপমেন্ট ও সারা বিশ্বের নিয়ামক বিষয়টি দেখভাল করবে। নিজেদের এলাকায় বিক্রি ও সরবরাহের দায়িত্বে থাকবে দুই সংস্থা।
এদিকে আমেরিকা ও চিন ভ্যাকসিন গবেষণা ও তৈরির ব্যাপারে সমস্ত সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে এলেও ইতালির স্বাস্থ্যমন্ত্রকের এক উপদেষ্টা সরকারি টেলিভিশন RAI 3-তে জানিয়েছেন একটি অ্যাংলো ইতালিয়ান যৌথ প্রকল্প অগ্রণী পর্যায়ে রয়েছে।
রিকিয়ার্ডি নামের ওই উপদেষ্টা বলেছেন “নতুন করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন বিষয়ে ইউরোপ আমেরিকার চেয়ে অনেক এগিয়ে এবং আমরা ইতালিতে এর উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত। সময়ের কথা বললে, যদি সব ঠিক ঠাক হয় তাহলে গোটা ইউরোপে ও ইতালিতে তো বটেই শরৎ থেকে শীতের মধ্যে প্রথম ডোজ পেয়ে যাব।”
এই ভ্যাকসিন তৈরি করছে ইতালির বেসরকারি সংস্থা Advent-IRBM এবং ব্রিটেনে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের Jenner Institute। এপ্রিলেই এই দুই সংস্থার পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছিল সে মাসের শেষে ভ্যাকসিনের পরীক্ষা মানবশরীরে করা হতে চলেছে।