করোনা কাঁটায় ছেদ পড়ল দুই শতকের রীতিতে। ১৯০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার করোনার জেরে বারাণসীর ঐতিহ্যবাহী রামলীলায় ছেদ পড়তে চলেছে। ১৮৩০ সালে বারাণসীর মহারাজ উদিত নারায়ণ সিংয়ের উদ্যোগে ৩১ দিন ব্যাপী রামনগরের রামলীলা শুরু হয়েছিল। গোটা রামায়ণ যেন জীবন্ত হয়ে উঠত ওই কদিন। পুরাণের পাতা থেকে লঙ্কা, অশোকবন এবং অযোধ্যা জীবন্ত হয়ে উঠত। গঙ্গা নামে একটি পুকুরের পাশে গোটা রামলীলা প্রদর্শিত হত। এত বছরে কোনওবার রীতিতে ছেদ পড়েনি। যুদ্ধ, খরা, দুর্যোগ এমনকী ১৯৬২ সালের ইন্দো-চিন যুদ্ধের সময় বন্ধ হয়নি এই ঐতিহ্যবাহী রামলীলা। কিন্তু এবার সর্বনাশা করোনায় স্তব্ধ হল এই রামলীলা।
বর্তমান মহারাজ অনন্ত নারায়ণের ভাইপো কুঁয়ার ইশান জানিয়েছেন, ইন্দো-চিন যুদ্ধের সময় লণ্ঠনের আলোয় গাছের পাতার আড়ালে রামলীলা প্রদর্শিত হয়েছিল যাতে উপর থেকে যুদ্ধবিমান দেখতে না পায়। কিন্তু এবছর করোনা সব কিছু বদলে দিয়েছে। ভারতের বৃহত্তম নাট্য প্রদর্শনী এই রামলীলা না হওয়ায় এবার সবারই মন খারাপ। ইশান আরও বলেছেন, "আমরা চেয়েছিলাম ঐতিহ্যে যাতে ছেদ না পড়ে। রামলীলা করার জন্য রাজকুমারি কৃষ্ণপ্রিয়া মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও লিখেছিলেন। যাতে অন্তত নাট্য প্রদর্শনী না হলেও ১৫ মিনিটের সন্ধ্যারতি দূরদর্শনে স্ট্রিমিং করানো যায়। কিন্তু কোনও পক্ষ থেকেই উত্তর আসেনি। বাধ্য হয়ে আয়োজন স্থগিত রাখা হয়।"
আরও পড়ুন বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষিত বাল্মীকি সম্প্রদায়ের মানুষ! গুজব রটানোর অভিযোগে এফআইআর দায়ের
এর আগে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির রাজত্বে বারাণসীর টাকশালের প্রশাসক জেমস প্রিন্সেপের ১৮৩৪ সালের লেখা থেকে রামনগরের রামলীলার উল্লেখ পাওয়া যায়। প্রিন্সেপ লিখেছিলেন, "শহরের পাঁচ-ছটি জায়গায় গোটা রামায়ণ বর্ণিত হত। বেনারসের মহারাজা আসতেন, প্রত্যেক বছর সুন্দর ভাবে নাট্য প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হত। গোটা রামায়ণ ৩১ দিন ব্যাপী সময়ে বর্ণিত হত নাটকের মাধ্যমে।"
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন