সংক্রমণের ক্ষেত্রে কোনও বাদ বিচার রাখছে না করোনা, মৃত্যুতেও নয়। কলেজের প্রফেসর সালমা খান (৭১) হঠাৎই করোনা আক্রান্ত হন। কোভিড পজিটিভ রিপোর্ট আসার পর থেকেই শারীরিক অবস্থারও অবনতি হতে শুরু করে। তিন দিন কেটে গেলেও হাসপাতালে একটি বেডও মেলেনি। পরিবারের তরফে যোগাযোগ করা হয় রাজধানীর ৩০০ হাসপাতালে। একটা জবাব- বেড নেই। অগত্যা ১৭০ কিলোমিটার দূরের এক হাসপাতালে প্রাণে বাঁচাতে ভর্তি করা হল প্রফেসরকে।
আরও পড়ুন, ‘কত হাজার মরলে তবে মানবে তুমি শেষে?’ নির্বাচনী রাজ্যের পরিস্থিতি কতটা উদ্বেগজনক?
শুক্রবার বিকেলে দিল্লির করোনা অ্যাপে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ৪ হাজার ৫৯০টি বেডের মধ্যে ৪৫টি বেড খালি রয়েছে। সালমার পরিবারের তরফে জানান হল, "কিছুক্ষণের জন্য অক্সিজেন দেওয়া হলেও অবস্থা সঙ্কটজনক হয়ে পড়ছিল। হাসপাতালগুলি অনেক টাকা চার্জ করছে। এখন হাতে একটা টাকাও নেই। এদিকে বাড়িতে যে অক্সিজেন দেব তাও তো পারব না।"
আরও পড়ুন, উপচে পড়ছে কবর, মৃতের স্তুপ শ্মশানে! করোনাকালে দেশের চিত্র এটাই?
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস একাধিক করোনা আক্রান্ত রোগীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছে সকলের মুখে একটাই কথা, বাড়িতে অক্সিজেন দেওয়া জন্য জীবনদায়ী গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি সিলিন্ডার রিফিলিং করাও এখন চ্যালেঞ্জ। এদিকে হাসপাতালে হয় বেড নেই। নয়ত টাকার জেরে থামতে হচ্ছে। ৭৩ বছরের লালবতী দেবীর অবস্থাও সঙ্কটজনক। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি হতে পারেননি বেড নেই বলে। পরিবারের তরফে বলা হল, "বাইরে কতক্ষণ মাকে নিয়ে দাঁড়াব জানি না। হয়তো এখানেই মা মারা যেতে পারেন। এর চেয়ে বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করুন।"
আরও পড়ুন, মর্মান্তিক! অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন ২৫ রোগী
দেশের করোনা চিত্রের এই ছবি মাত্র একটি অংশ। করোনা ঝড়ে দিশেহারা আক্রান্তের পরিবার। অক্সিজেনের আকালে বাড়িতে থেকে চিকিৎসা অসম্ভব, অন্যদিকে হাসপাতালে 'নো বেড'। দেশের কোভিড পরিসংখ্যান বলছে অক্সিজেন চাহিদা আর মৃত্যু হার প্রায় সমানে পৌঁছেছে। শ্বাস নেওয়ার শ্বাসটুকু পাওয়ার হাহাকার ভারতে। চোখের সামনে পরিজন বিদায়ের কষ্ট ২০২১ দিচ্ছে। ঝড় সামাল দেওয়ার লড়াই চালাচ্ছে একাধিক পরিবার।
আরও পড়ুন, “মানুষ ছটফট করছে, অক্সিজেনের ঘাটতি মেটান’, হাতজোড় করে মোদীকে অনুরোধ কেজরিওয়ালের
দিল্লির একাধিক হাসপাতালের কাউন্টারে লম্বা লাইন। ক্ষীণ হয়ে আসা দেহ বহন করছে আরেকটি অসুস্থ দেহ। কোভিড আক্রান্ত অশীতিপর স্বামী-স্ত্রী। মরণ জয়ের লড়াইয়ে ক্ষীণ স্বরেই বলে ওঠেন, "থোড়া অক্সিজেন মিলেগা ভাইয়া?"
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন