দীর্ঘদিন ধরেই মন্দিরের প্রসাদই ছিল তার খাদ্য। যা দেখে কেরলের মন্দিরের পুকুরে থাকা কুমির 'বাবিয়া'কে ভগবানের অবতার বলে দাবি করতেন মন্দিরের পুরোহিতরা। সেই কুমিরেরই এবার মৃত্যু হল। এই কুমিরকে দেখতে কেরলের কাসারাগড় জেলার কুম্বলার অনন্ত পদ্মনাথস্বামী মন্দিরে দর্শনার্থীদের ব্যাপক ভিড় হত। সাত দশক ধরে এই কুমির ছিল দর্শনার্থীদের কাছে অন্যতম আকর্ষণ।
Advertisment
মন্দির সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে মৃত্যু হয়েছে কুমিরটির। তারপর বাবিয়ার দেহ রাখা হয় ফ্রিজারে। মন্দিরের পুরোহিতরা জানিয়েছেন, বাবিয়া দিনে দু'বার প্রসাদ (প্রসাদম) খেতেন। পুরোহিতরা জানিয়েছেন, বাবিয়া এই মন্দিরে থাকলেও কোনওদিন হিংস্র হয়ে ওঠেনি। ভক্তদেরকে আক্রমণ করেনি। এলাকায় ওই পুকুর ছাড়া আর কোনও জলাশয় নেই। আশপাশে কোনও নদীও নেই।
তার পরও মন্দিরের পুকুরে ওই কুমিরটি কীভাবে এল? এই প্রশ্নের অবশ্য উত্তর দিতে পারেননি মন্দির কমিটির লোকজন। মন্দিরের পুরোহিতরা জানিয়েছেন, বাবিয়ার আগেও এই মন্দিরে একটি কুমির ছিল। ১৯৪৫ সালে এক ব্রিটিশ সৈন্য সেই কুমিরটিকে গুলি করেন। তার পরে, ওই পুকুরে কোথা থেকে যেন বাবিয়া নামে এই কুমিরটি চলে আসে।
এই অদ্ভূত কুমিরের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শোভা করন্দলাজে। তিনি টুইট করেছেন, 'বাবিয়া হল ভগবানের নিজস্ব কুমির। অনন্তপুরা মন্দিরের পুকুরে থাকত। সে শ্রী বিষ্ণুর চরণে স্থান হয়েছে। এই স্বর্গীয় কুমির প্রায় ৭০ বছর ধরে থাকত মন্দিরে। খেত চাল আর ফলমূলের মত প্রসাদ। অনন্তপদ্মনাভ স্বামী মন্দিরের পুরোহিতরাই তার খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতেন। ওই কুমির মন্দিরটি পাহারা দিত।'
ভক্তদের ধারণা, ওই মন্দিরটি ভগবান পদ্মনাভর মূলস্থানে প্রতিষ্ঠিত। কেরলের রাজধানী তিরুঅনন্তপুরমের শ্রীপদ্মনাভস্বামী মন্দিরের প্রধান দেবতা পদ্মনাভ বা ভগবান বিষ্ণু। কুমির বাবিয়া তারই প্রতিনিধি বলেই মনে করতেন মন্দিরের পুরোহিত এবং ভক্তরা। মন্দিরের পুরোহিতদের দাবি, এই মন্দির রক্ষার জন্য কোথা থেকে যেন কুমির চলে আসে। বাবিয়ার পরও কেউ চলে আসবে বলেই তাঁদের বিশ্বাস।