নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে অব্যাহত প্রতিবাদ-বিক্ষোভ। সেই আঁচ পড়ল দেশের কর্পোরেট শিল্পতালুকে। অটোমোবাইল থেকে রেস্তোরাঁ, এমনকি ঘড়ির দোকানেও সিএএ বিরোধী দৃশ্য। দেশের সর্ববৃহৎ ঘড়িপ্রস্তুতকারী সংস্থা টাইটান কোম্পানি লিমিটেড, যারা দেশের প্রায় ৮০০০ কোটি টাকার ঘড়ির বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করে, সেই টাইটানের স্টোরের বিক্রিবাট্টা সিএএ বিরোধী বনধের কারণে কিছুটা হলেও প্রভাবিত, এমন তথ্যই প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় উত্তাল হয়েছে দেশের সব রাজ্যে। কিছুটা বাধ্য হয়ে এবং সুরক্ষার কারণে তাই সব শো-রুম বন্ধ রাখতে হয়েছিল সংস্থাটিতে।
আরও পড়ুন: ‘যারা দেশবিরোধী স্লোগান তুলছেন তাঁদের জেলে যেতে হবে’, বিস্ফোরক শাহ
একই চিত্র গাড়ি ব্যবসায়। অর্থনীতির যাঁতাকলে এমনটিতেই বেশ চাপের মুখে ছিল গাড়ি উৎপাদনকারী সংস্থাগুলি। এর উপর সিএএ বিরোধী বনধ যেন সেই আগুনে ঘৃতাহুতি। দেশের দুটি শীর্ষস্থানীয় গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থার উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছে, প্রতিবাদ বিক্ষোভের জেরে ডিসেম্বর মাসে সবচেয়ে কম গ্রাহকেরা এসেছেন তাঁদের স্টোরগুলিতে। নতুন বছরেও অব্যাহত সেই একই চিত্র। এমনকী শিপমেন্ট এবং যন্ত্রাংশ সরবরাহের ক্ষেত্রেও এর প্রভাব পড়ায় তা ডিলারশিপকেও প্রভাবিত করেছে। যদিও সেই স্টকিং সংখ্যা কত, সে সংখ্যা জানা যায়নি।
আরও পড়ুন: প্রতিবাদের আগুন জ্বলল শহরে, ‘গো-ব্যাক মোদী’ স্লোগান, ফেস্টুনে অবরুদ্ধ রাজপথ
নাগরিকত্ব আইন বিরোধী আগুনের আঁচ রেস্তোরাঁর হেঁশেলেও। খাদ্যরসিকদের সংখ্যা কমতির পিছনে ভারতের জাতীয় রেস্তোঁরা সংস্থার অন্তর্গত দিল্লী, লখনউ ও কলকাতা শহরের রেস্তোঁরা মালিকরা সিএএ প্রতিবাদ বিক্ষোভের দিকেই ইঙ্গিত করেছেন। একইভাবে রাজ্য প্রশাসন কর্তৃক নিষেধের আদেশ যে খাদ্য ব্যবসায় প্রত্যক্ষ প্রভাব ফেলছে, এমনটাই জানিয়েছেন তাঁরা। সিএএ বিরোধী রেশে পড়তির দিকে ভ্রমণব্যবসাও। ট্রাভেল সংস্থারা জানিয়েছেন শীতের এই মরসুমে উত্তর-পূর্ব ছিল পর্যটকদের ভ্রমণতৃষ্ণা মেটানোর স্থান। কিন্তু বিক্ষোভের আগুন যেভাবে ছড়িয়েছে, তাতে সে দিক থেকে মুখ ফিরিয়েছে ভ্রমণ পিপাসুরা। এমনকী রাশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইজরায়েলের মতো দেশগুলিও তাঁদের নাগরিকদের ভারতে, প্রধানত উত্তর-পূর্ব ভারতে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার পরামর্শ জারি করেছে।
কবে এই সমস্যা মিটবে জানা নেই এই ব্যবসায়ীদেরও। একের পর এক ট্রাভেল বুকিং ক্যানসেলে মুষড়ে পড়েছেন ভ্রমণ ব্যবসায়ীরা। গাড়ির শোরুম থেকে বিমুখ গ্রাহক। দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে এখন কেবল 'আচ্ছে দিন'-এর দিন গুনছে সংস্থারা।
Read the full story in English