ফের নতুন করে ঘূর্ণিঝড়ের হাতছানি! এবছরের প্রথম ঘূর্ণিঝড় ‘আসানি’। বঙ্গোপসাগরে আগামী ১০ মে’র মধ্যে আছড়ে পড়তে চলেছে এই ঘূর্ণি ঝড়, জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। এবছরের প্রথম এই ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করেছে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা।
ওড়িশা উপকূলে ঘূর্ণিঝড়টি আছড়ে পড়লে বিহার, ঝাড়খণ্ডে তুমুল বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে আশঙ্কা। ৩-৪ দিন ধরে ওই রাজ্যগুলিতে এক নাগাড়ে বৃষ্টি হবে বলে মনে করছে আবহাওয়া দফতর। কেরল তামিলনাড়ু, কর্ণাটক এবং পুদুচেরিতে আগামী কয়েকদিন ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা।
তীব্র দাবদাহ থেকে মিলেছে মুক্তি। চলতি মরশুমে বেশ কয়েকটি কাল বৈশাখির সাক্ষী থেকে দক্ষিণবঙ্গ। এর মাঝেই মিলেছে ঘুর্নিঝড়ের সতর্কতা। যা চিন্তায় ফেলেছে সাধারণ মানুষকে। ইয়াসের স্মৃতি এখনও টাটকা মানুষের মনে। তার মাঝেই নতুন করে ঘুর্ণি ঝড়ের সতর্কবার্তায় রাতের ঘুম উড়েছে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বাসিন্দাদের। ঘুর্নিঝড় ইয়াসের তান্ডবে ১ কোটিরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ১৫ লক্ষ ঘর ভেঙে গিয়েছে জলের তোড়ে। ১৩৪টি নদীবাঁধ ভেঙে গিয়েছে বলে জানানো হয়েছিল প্রশাসন সূত্রে।
আবহাওয়া দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে নিম্নচাপ তৈরির কারণে তৈরি হতে পারে ঘূর্ণিঝড়। আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে তা আছড়ে পড়তে পারে ওড়িশা উপকুলে। ইতিমধ্যেই ওড়িশা সরকারের পক্ষ থেকে আঠেরোটি জেলায় ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তরফে ওড়িশার গঞ্জম, গণপতি, পুরী, খুরদা, জগতসিংহপুর, কেন্দ্রপাড়া, জয়পুর, ভদ্রক, বালাসোর, নয়াগড়, কটক, ময়ূরভঞ্জ, কেওনঝড়, ধেনকানাল, মলকনগিরি, কোরাপুট, রায়াগাড়া এবং কন্ধমলের জেলাশাসকের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। ওড়িশার উপর যদি ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ে, তার প্রভাব পশ্চিমবঙ্গে কতটা পড়বে তা নিয়ে চিন্তায় রাজ্যবাসী।
আরও পড়ুন: আবৃত্তি জগতে ফের নক্ষত্র পতন, প্রয়াত পার্থ ঘোষ
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্দামান সাগর, দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর এবং মধ্য বঙ্গোপসাগর পেরিয়ে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে আসতে পারে সেই ঘূর্ণিঝড়। ঘুর্ণাবর্তের প্রাথমিক গতিবিধি বলছে আগামী ৮ই মে সেটি ভয়াবহ রূপ ধারন করতে পারে।
ওড়িশা সরকার জেলা প্রশাসনকে আগামী চারদিন সতর্ক থাকতে বলেছে। ওড়িশার মুখ্য সচিব সুরেশ চন্দ্র মহাপাত্র বুধবার রাজ্যের সকল জেলাশাসকদের একটি বৈঠক করেন। তিনি বলেন, “ঘূর্ণিঝড়ের কারণে যে কোন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত। সংশ্লিষ্ট সব জেলার আধিকারিকদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দক্ষিণ আন্দামান সাগর, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে ঝড়ো হাওয়া্র কারণে মৎস্যজীবীদের আগামী কয়েক দিন বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি বাংলাদেশের বেশ কিছু অংশে এই ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়বে বলেই মনে করছেন আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা।
Read story in English