বাবা হয়ে সন্তানের মায়ের দায়িত্ব তো অনেকেই পালন করেন। আজকাল সিঙ্গল ফাদারের সংখ্যাও তো নেহাত কম নয়। কিন্তু এমন কাণ্ড বোধহয় আগে ঘটেনি, যেখানে সদ্যোজাতর মুখে প্রথম খাবার তুলে দিচ্ছেন স্বয়ং বাবা। হ্যাঁ, ব্রেস্ট ফিডিং-এর কথাই হচ্ছে। বাবা হতে চলেছেন, এ নিয়ে স্বভাবতই বেশ উত্তেজিত ছিলেন ম্যাক্সামিলান নয়বাওয়ার। অপারেশন থিয়েটার থেকে বেরোনো মাত্রই যখন চিকিৎসক জানালেন, যে নয়বাওয়ার পরিবারের নতুন সদস্য এক ফুটফুটে কন্যা, তখন বাবা হওয়ার আনন্দে উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েছিলেন ম্যাক্সামিলান।
এত আনন্দের মাঝে হঠাৎই তাল কাটল, যখন চিকিৎসক জানালেন যে তাঁর স্ত্রী এই মুহূর্তে তাঁদের আদরের কন্যা সন্তানকে স্তন্যপান করাতে পারবেন না। একথা শুনে স্বাভাবিক ভাবেই মাথায় বাজ পড়েছিল ম্যাক্সামিলানের। কিন্তু না, বেশিক্ষণ এ সমস্যা নিয়ে হিমশিম খেতে হয়নি তাঁকে। ‘স্কিন টু স্কিন ব্রেস্টফিডিং’-এর মাধ্যমে আদরের মেয়ের মুখে প্রথম খাবার তুলে দিলেন বাবা। মা নয়, বাবাই একরত্তি শিশুকন্যাকে স্তন্যপান করালেন। আর এই অসাধ্য সাধন করেই বিশেষ করে পুরুষমহলে হই চই ফেলে দিয়েছেন ম্যাক্সামিলান। প্রথম পুরুষ হিসেবে সদ্যোজাতকে স্তন্যপান করিয়ে নজির গড়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমে প্রথম শিখ সঞ্চালক, শুভেচ্ছার বন্যা টুইটারে
বাবা হওয়ার আনন্দের থেকেও নিজের কন্যা সন্তানকে স্তন্যপান করাতে পেরে যারপরনাই উচ্ছ্বসিত ম্যাক্সামিলান। ফেসবুকে সেই ছবি আপলোড করে ম্যাক্সামিলান জানিয়েছেন, এ কাজটা তিনি সব মায়েদের জন্য করেছেন। স্বাভাবিকভাবেই, ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ম্যাক্সামিলান। কেউ কেউ তো আবার তাঁকে 'সুপার ড্যাড' বলেও ডাকছেন।
সন্তান প্রসবের সময় ম্যাক্সামিলানের স্ত্রী এপ্রিলের কিছু শারীরিক জটিলতা দেখা যায়। প্রসবের সময় এপ্রিলের বেশ কয়েকটি অস্ত্রোপচারও হয় বলে জানা গেছে। পলিসিস্টিক ওভারি জনিত সমস্যাও রয়েছে এপ্রিলের। এসবের জন্যই নিজের মেয়েকে স্তন্যপান করাতে পারেননি এপ্রিল। 'স্কিন টু স্কিন ব্রেস্টফিডিং' করানোর আইডিয়া প্রথম খেলেছিল এপ্রিলের মাথাতেই। কিন্তু শারীরিক জটিলতার জেরে তাঁর পক্ষে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা সম্ভব হয় নি। শেষমেশ এই পদ্ধতিতেই কেরামতি করে দেখালেন তাঁর স্বামী।
'স্কিন টু স্কিন ব্রেস্টফিডিং' প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নবজাতককে তার মা (এক্ষেত্রে বাবাও) নিজের উন্মুক্ত ত্বকের সংস্পর্শে রেখে স্তন্যপান করান। বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় দেখা গেছে, এই ধরণের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে নবজাতকের শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়ে, শরীরের তাপমাত্রা এবং হৃদকম্পন বা হার্ট রেট নিয়ন্ত্রণে থাকে, এবং ঘুম ভালো হয়।