দেশে আত্মহত্যার ঘটনা বেড়েছে। সেই তালিকায় শীর্ষে আছেন যাঁরা দৈনিক মজুরিতে কাজ করেন, আর স্বেচ্ছাদ্যোগীরা। অর্থাৎ, যাঁরা সদ্য ব্যবসা শুরু করেছেন। অথবা নিজেরাই নিজেদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। এমনই আশঙ্কার কথা শোনাল ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো বা এনসিআরবি। ২০২১ সালের নথির ভিত্তিতে এমনটাই জানিয়েছে জাতীয় অপরাধ নথিভুক্তকরণ সংস্থা।
জাতীয় অপরাধ নথিবদ্ধকরণ সংস্থার (এনসিআরবি) সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৪ সাল থেকে দেশে আত্মহত্যার ঘটনা বাড়ছে। আর, যাঁরা আত্মহত্যা করছেন, তাঁদের চার জনের মধ্যে তিন জনই দৈনিক মজুরিতে নিযুক্ত ঠিকাকর্মী। ২০২১ সালে দেশে রেকর্ড সংখ্যক ব্যক্তি (১,৬৪,০৩৩ জন) আত্মহত্যা করেছেন। কাদের দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে। আর, কারা আত্মহত্যা করেছেন, তা আলাদা ভাবে নথিবদ্ধ করে এনসিআরবি। যাঁরা আত্মহত্যা করেন, তাঁদের পেশা কী, তা নথিতে থাকে। সেই নথিই বলছে, ২০২১ সালে ৪২,০০৪ জন দৈনিক মজুর আত্মহত্যা করেছে। যা গত বছরে মোট আত্মহত্যার ২৫.৬ শতাংশ।
শুধু গতবছর, অর্থাৎ ২০২১ সালই নয়। ২০২০ সালেও দৈনিক মজুরি উপার্জনকারীরা সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় আত্মহত্যা করেছেন। ২০২০ সালে দেশে ১,৫৩,০৫২ জন আত্মহত্যা করেছিলেন। তার মধ্যে দৈনিক মজুরি উপার্জনকারীর সংখ্যা ৩৭,৬৬৬ বা ২৪.৬ শতাংশ। অনেকেই বলছেন, এর পিছনে করোনা অনেকটাই দায়ী। কারণ, করোনার প্রভাবে কর্মহীনতার সৃষ্টি হয়েছে। তার প্রভাব পড়ছে দেশবাসীর পেশাগত ক্ষেত্রে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন দৈনিক মজুররা। বিপুলসংখ্যক দৈনিক মজুর করোনা আবহে কাজ হারিয়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন।
আরও পড়ুন- বিশ্বের তৃতীয় ধনী ব্যক্তি হলেন গৌতম আদানি, বিপুল সম্পদ বৃদ্ধি শিল্পপতির
কিন্তু, একথাও যে সম্পূর্ণ সত্য নয়, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে এনসিআরবির রিপোর্টই। ওই রিপোর্ট বলছে ২০১৯ সালে, যখন করোনা প্রভাব ফেলেনি, সেই সময়ও দেশে আত্মহত্যা বেড়েছিল। আর, যাঁরা দৈনিক মজুরির মাধ্যমে রোজগার করেন, সেই তালিকায় তাঁদের সংখ্যাই ছিল সবচেয়ে বেশি।
এনসিআরবির রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৯ সালে দেশে ১,৩৯,১২৩ জন আত্মহত্যা করেছিলেন। তার মধ্যে দৈনিক ঠিকা মজুরদের সংখ্যা ছিল ৩২,৫৬৩ জন বা ২৩.৪ শতাংশ। আর, এনসিআরবির সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গিয়েছে, গত বছর আত্মহত্যাকারীদের মধ্যে দৈনিক মজুরদের সংখ্যাই শুধু বাড়েনি। আত্মহত্যার জাতীয় গড়ের থেকেও এই দৈনিক মজুরদের আত্মহত্যার সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে।
Read full story in English