সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিনের 'পে-রোলের' অন্তর্ভুক্ত ছিল জম্মু-কাশ্মীরের বহিষ্কৃত পুলিশ অফিসার দভিন্দর সিং। বর্তমানে এনআইএ হেফাজতে রয়েছে সে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার জেরাতেই এই তথ্য জানা গিয়েছে। গত ১১ জানুয়ারি হিজবুল জঙ্গি নভিদ মুস্তাকের সঙ্গেই ধরা পড়ে দভিন্দর। মাথাপিছু অর্থের বিনিময়ে জঙ্গিদের নিরাপদে জম্মুতে নিয়ে আসার অভিযোগ রয়েছে ওই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, কেবল জঙ্গিদের নিরাপদে আশ্রয়ে পৌঁছে দেওয়ার জন্যই নয়, দভিন্দর সন্ত্রাসবাদী সংগঠনটির থেকে নিয়মিত টাকা পেতেন।
এনআইয়ের এক আধিকারিক দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, 'নাভিদের সঙ্গে সে যখন ধরা পড়েছিল তখন সে জঙ্গিদের নিরাপদে আশ্রয় দিচ্ছিল। পুরো শীতকালজুড়েই জঙ্গিরা জম্মুতে থাকত। এরপর জঙ্গিরা পাকিস্তানে চলে যেত। তদন্তে আমরা জঙ্গিদের পাকিস্তান যাওয়ার পথই খুঁজে বার করার চেষ্টা করছি। এই কাজের জন্য দভিন্দর মাথাপিছু ২০-৩০ লক্ষে টাকা নিত। তবে এক্ষেত্রে অবশ্য সে সম্পূর্ণ অর্থ পায়নি।'
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থারই অন্য এক আধিকারিকের কথায়, 'গত এক বছর ধরেই জঙ্গি নাভিদের সঙ্গে দভিন্দরের যোগাযোগ ছিল। তার থেকে নিয়মিত সে অর্থ পেত। শুধু তাই নয়, বহিষ্কৃত পুলিশ অফিসার হিজবুল মুজাহিদিনের 'পে-রোলের' অন্তর্ভুক্ত ছিল।'
আরও পড়ুন: বহিষ্কৃত ডিএসপি দভিন্দরের বিরুদ্ধে মামলা রুজু এনআইয়ের
অভিযোগ যে, জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়াও অস্ত্র জোগান সম্পর্কিত বিষয়েও কথা হয়েছিল কাশ্মীরের বহিষ্কৃত ডিএসপি দভিন্দরের। জঙ্গিদের সঙ্গে ওই পুলিশ অফিসারের ঘনিষ্ঠতা কোন পর্যায়ে গিয়েছিল, বাহিনীর আর কোনও অফিসারের সঙ্গে জঙ্গিযোগ রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছে এনআইএ গোয়েন্দারা। গত ১৮ জানুয়ারি দভিন্দরের মামলার তদন্তভার হাতে নেয় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা বা এনআইএ। তবে তদন্তে ধৃত পুলিশ অফিসার সহয়োগিতা করছে না বলেই দাবি এনআইয়ের। তদন্তকারীদের কথায়, 'সে তার ফোন সংরক্ষিত নম্বরগুলো চিনতে অস্বীকার করছিল। সে এই সবের সঙ্গে জড়িত নয় বলেই দাবি করছিল। তার ফোনের নম্বর দেখেই এখন তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।'
জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের এক অফিসার জানিয়েছেন, 'দভিন্দর সিং একাধিক জঙ্গি রোধ কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত ছিল। বহু জঙ্গিকে সে গ্রেফতার বা আত্মসমর্পণে বাধ্য করেছে।' উপত্যকায় র পুলিশ মহলে দভিন্দর ভাল ক্ষমতা ছিল বলে জানান ওই অফিসার। ২০১৭-২০১৮ সালে কৃতিত্বের জন্য তাকে বিশেষ সম্মানও দেওয়া হয়। তবে পুলিশের মধ্যে অনেকেরই মতে দভিন্দরের কর্মজীবন সবসময় স্বচ্ছ ছিল না।
Read the full story in English