বৃহস্পতিবার জেট এয়ারওয়েজের একটি বিমানে মাঝ আকাশে বিমানযাত্রীদের কান ও নাক থেকে রক্তক্ষরণের ঘটনায় সৃষ্টি হয় ব্যাপক চাঞ্চল্য। তবে মুম্বই থেকে জয়পুরগামী বিমানের ক্ষতিগ্রস্ত যাত্রীরা সুস্থ হননি এখনও। চলছে চিকিৎসা। একজনের অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক। হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার পরও মাথায় যন্ত্রণার পাশাপাশি কান এবং নাক দিয়ে ক্রমাগত রক্ত বেরিয়ে চলেছে অঙ্কুর কালা নামে বছর ৩৮-এর এক যাত্রীর।
অসুস্থ অঙ্কুর কালার ভাই বিক্রম কালা জানিয়েছে “দাদার মাথা এবং কানে ক্রমাগত যন্ত্রণা হচ্ছে, রক্তও বেরোচ্ছে। সিটি স্ক্যান এবং এমআরআই করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই। হংকং থেকে যাত্রা করছিলেন অঙ্কুর, এবং প্রায় ২৪ ঘণ্টা না ঘুমিয়ে ছিলেন তিনি। সে কারণেই বিমানের অনিয়ন্ত্রিত বায়ুর চাপ অতিরিক্ত প্রভাব ফেলেছে তাঁর ওপর।'' বিক্রম জানিয়েছেন, ওই বিমান সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অঙ্কুরের পরিবার।
আরও পড়ুন: মাঝ আকাশে যাত্রীদের নাক-কান থেকে রক্তপাত, জরুরি অবতরণ জেট এয়ারওয়েজের বিমানের
এদিন হংকং থেকে মুম্বইতে একটি গয়নার প্রদর্শনীতে যোগ দিতে আসেন অঙ্কুর। এরপর সকাল ৬.১৫ নাগাদ মুম্বই থেকে জয়পুরগামী বিমানটিতে উঠেছিলে তিনি। অঙ্কুরের অভিযোগ, প্রায় ২০ মিনিট পর অক্সিজেন মাস্ক দেওয়া হয় এবং কেবিনে চাপও বাড়তে থাকে ক্রমশ। প্রসঙ্গত, যে পাঁচজনকে সঙ্কটজনক অবস্থায় নানাবতী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাঁদের মধ্যে অঙ্কুরও ছিলেন। প্রায় ৩০ জনের অবস্থা গুরুতর হয় বিমানের মধ্যে। বাকি ২৫ জন, যাঁদের কান এবং নাক দিয়ে রক্ত বেরচ্ছিল, তাঁদের পরবর্তী উড়ানে জয়পুর নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সেদিন।
নানাবতী হাসপাতালের ইএনটি বিশেষজ্ঞ ডাঃ অমল পালিত জানিয়েছেন, রোগীদের প্রায় প্রত্যেকেরই ঝুঁকি কেটে গিয়েছে, তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে। ওই বিমানেরই এক যাত্রী শশী নায়ার বলেন, ''জানিনা কতটা ক্ষতিপূরণ আমরা পাব, তবে আমি তদন্তের রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছি, রিপোর্ট এলেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।" শুধু তাই নয়, পাশাপাশি ছত্রপতি শিবাজী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পর্যাপ্ত চিকিৎসার সুবিধা না থাকার অভিযোগ জানিয়েছেন নায়ার।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবারের ঘটনার পর স্বাভাবিকভাবেই চিন্তার ভাঁজ অন্যান্য যাত্রীদের কপালে। যাঁরা ওই বিমানের টিকিট কেটেছেন, বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েছেন তাঁরা। মুম্বই থেকে জয়পুরে যাওয়ার কথা অনিল শর্মা নামে এক ব্যক্তির। তিনি জানিয়েছেন, ২৯ ফেব্রুয়ারি পরিবার এবং অসুস্থ মা কে নিয়ে যাত্রা করার কথা রয়েছে তাঁর। কাজেই এই ঘটনায় বেশ চিন্তিত হয়েছেন তিনি। শর্মা বলেন, ''৪০,০০০ টাকা খরচ করে এয়ারওয়েজের চিকিট বুক করেছি, টিকিট বাতিল করব কিনা বুঝতে পারছি না, বাতিল করলে আমার টাকাটাও নষ্ট হবে।"
তবে নিয়মিত যাত্রী, বেঙ্গালুরুর সেলস এগ্জিকিউটিভ সন্ধ্যার গলায় মিলল অন্য সুর, তিনি জানান, বৃহস্পতিবার যা ঘটেছিল তা অপ্রত্যাশিত। এটি একটি প্রযুক্তিগত গোলোযোগ হতে পারে। এতে অযথা চিন্তার কোনও কারণ নেই। প্রসঙ্গত, জেট এয়ারওয়েজের একজন উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত চলছে, রিপোর্ট আসা মাত্রই যাত্রীরা যাঁরা গুরুতর আহত হয়েছেন তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।