বৃহস্পতিবার নির্ভয়া গণধর্ষণ ও হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত পবন গুপ্তের কিউরেটিভ পিটিশন নাকচ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের বিশেষ বেঞ্চের নেতৃত্বে থাকা বিচারপতি এন ভি রমণ বলেন, "আমাদের মতে, কোনও যুক্তি খাড়া করা যায় নি"।
তার পিটিশনে পবন গুপ্ত জানায়, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১২ সালে দিল্লিতে ঘটা ওই ঘটনার সময় সে নাবালক ছিল।
আগামীকাল, ২০ মার্চ, দিল্লির তিহার জেলে ফাঁসি হওয়ার কথা এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত চারজনের - মুকেশ সিং (৩২), পবন গুপ্ত (২৫), বিনয় শর্মা (২৬), এবং অক্ষয় কুমার সিং (৩১)। ফাঁসির সময় সকাল সাড়ে পাঁচটা।
তাদের প্রাপ্য আইনি সহায়তা যাতে তারা পুরোমাত্রায় পেতে পারে, এই ভিত্তিতে এখন পর্যন্ত তিনবার রদ হয়েছে এই চারজনের ফাঁসি।
শীর্ষ আদালতে কিউরেটিভ পিটিশন নাকচ হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে নির্ভয়ার মা বলেন, আগামীকাল বিচার পেতে চলেছে তাঁর মেয়ে। তাঁর কথায়, "আদালত ওদের এতবার সুযোগ দিয়েছে যে ওরা অভ্যস্ত হয়ে গেছে ফাঁসির আগে যে কোনও একটা বাধা খাড়া করে ফাঁসি আটকে দিতে। এখন আমাদের আদালতগুলো বুঝে গেছে ওদের ফন্দি। কাল বিচার পাবে আমার মেয়ে।"
আরও পড়ুন: এবার নির্ভয়ার হত্যাকারীদের শাস্তিটা হোক
এর আগে বুধবার মৃত্যুদণ্ড নাকচ করার আবেদন জানিয়ে মুকেশ সিংয়ের পিটিশনের ওপর রায়দান মুলতুবি রাখে দিল্লি হাইকোর্ট। নিম্ন আদালতে আবেদন জানিয়ে বিফল হওয়ার পর চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় মুকেশ সিং। নিম্ন আদালতে মুকেশ জানিয়েছিল, ঘটনার দিন দিল্লিতেই উপস্থিত ছিল না সে।
মঙ্গলবার মুকেশের আইনজীবীকে আদালতের সময় নষ্ট করার জন্য তিরস্কার করে নিম্ন আদালত ভারতের বার কাউন্সিলকে পরামর্শ দেয়, ওই আইনজীবীকে আরও সচেতন করার।
গত সোমবার মৃত্যুদণ্ড রদ করার আবেদন নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে শুনানি প্রার্থনা করে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিসের দ্বারস্থ হয় চারজনের মধ্যে তিনজন। তাদের আইনজীবী এ পি সিংয়ের মাধ্যমে এই আবেদন জানায় বিনয়, পবন, এবং অক্ষয়। তাদের দাবি, এই মৃত্যুদণ্ডাদেশ বেআইনি।
আন্তর্জাতিক আদালতে জমা পড়া তাঁর পিটিশনে আইনজীবী এ পি সিং দিল্লিতে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের বিষয়টিও যোগ করেন। বক্তব্যের সারমর্ম, "দিল্লির বাতাসে মাত্রাতিরিক্ত দূষণ এবং সম্প্রতি করোনাভাইরাস বা COVID-19 দেখা দেওয়ার ফলে চিকিৎসা ক্ষেত্রে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছে...১৬ মার্চ থেকে ব্যাহত হয়েছে আদালতের পরিষেবা, এবং বেঞ্চের সদস্যরা তাঁদের পদমর্যাদা ও মামলার গুরুত্ব অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছেন। দিল্লি এবং দিল্লি মহানগর অঞ্চলে (এনসিআর) জলবায়ুর কী পরিস্থিতি, তা সারা দুনিয়া জানে। জীবন এমনিতেই আরও সংক্ষিপ্ত হয়ে আসছে, তবে মৃত্যুদণ্ড কেন?"
পিটিশনে আরও বলা হয়েছে যে, দিল্লির তিহার জেল কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি ওই চারজন দোষীর ফাঁসির আয়োজন করছেন, এবং "এই তাড়াহুড়ো ও গোপনীয়তা স্পষ্টতই বেআইনি, যেহেতু উপরোক্ত তিন আসামী এখনও তাদের সবরকম আইনি প্রতিকারের সদ্ব্যবহার করেনি"।