দিল্লি গণধর্ষণকাণ্ডে ফের পিছিয়ে গেল মৃত্যুদণ্ডের প্রক্রিয়া। সোমবার রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আর্জি জানান অন্যতম সাজাপ্রাপ্ত অপরাধী পবন কুমার গুপ্ত। রামনাথ কোবিন্দ সেই আর্জি খারিজ করার পর, দিল্লি কারা আইন অনুযায়ী, ১৪ দিনের জন্য পিছিয়ে গেল ফাঁসি। শুধু পবনের নয়, ফাঁসি পিছিয়ে গেল বাকি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীদেরও। সোমবার ফাঁসির বদলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের শাস্তি সুপ্রিম কোর্টে নাকচের কয়েক ঘন্টা পেরোতেই না পেরোতেই নির্ভয়াকাণ্ডে দোষী পবন গুপ্তর প্রাণ ভিক্ষার আবেদন খারিজ করেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।
প্রসঙ্গত, পাতিয়ালা হাউস আদালতের তরফে দোষী সাব্যস্ত পবন গুপ্ত এবং অক্ষয় কুমার সিংয়ের মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করার বিষয়ক আবেদন খারিজ করা হয় আগেই। ফাঁসি থেকে বাঁচতে নির্ভয়া কাণ্ডের চার দণ্ডিতের মধ্যে তিন জনের সমস্ত আইনি বিকল্প শেষ। একমাত্র বাকি পবন গুপ্ত। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি শীর্ষ আদালতে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি (কিউরেটিভ পিটিশন) জানায় পবন। তার দাবি ছিল, ২০১২ সালে অপরাধের সময় তার বয়স ছিল ১৬ বছর দু’মাস। কিন্তু সে আর্জি নিম্ন আদালত থেকে সুপ্রিম কোর্ট কেউই কর্ণপাত করেননি। পবনের দাবি খারিজ করে সোমবারই রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি খারিজ করে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। এরপরেই রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আর্জি জানায় পবন।
দিল্লি গণধর্ষণ ও হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামির মধ্যে পবন কুমার গুপ্তের (২৫) যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আবেদন খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট। ফাঁসির বদলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের শাস্তি চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিল পবন। এদিকে আদালতের সুপ্রিম নির্দেশমতো আগামীকালই দোষীদের ফাঁসি কার্যকর হওয়ার কথা।
আরও পড়ুন: আমি দায়িত্বে থাকলে বিজেপি নেতাদের গ্রেফতার করতাম, বিস্ফোরক দিল্লির প্রাক্তন পুলিশ প্রধান
সোমবার বিচারপতি রামানার কক্ষে এই আবেদনের শুনানি করেন বিচারপতি এন ভি রামানা, বিচারপতি অরুণ মিশ্র, আর এফ নরিমন, আর ভানুমথি ও অশোক ভূষণের একটি বেঞ্চ। নির্ভয়াকাণ্ডে ফাঁসি ঠেকাতে আবারও মরিয়া চেষ্টা চালায় অপরাধীরা। রায় সংশোধনের আর্জি (কিউরেটিভ পিটিশন) জানিয়ে শুক্রবারই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় নির্ভয়াকাণ্ডে দণ্ডিত পবন গুপ্তা। ফাঁসির সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজার আবেদন জানিয়ে শুক্রবার দেশের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে পবন, সংবাদসংস্থা পিটিআই সূত্রে এমনই খবর।
আরও পড়ুন: দিল্লি হিংসায় নজিরবিহীন দৃশ্য! মসজিদ পাহারা দিলেন হিন্দুরা, মন্দির আগলে মুসলিমরা
উল্লেখ্য, ফাঁসি কার্যকর করার আগে একমাত্র পবনই এখনও পর্যন্ত আইনি প্রক্রিয়ার দ্বারস্থ হয়নি। এর আগে নির্ভয়ার তিন অপরাধী মুকেশ সিং, বিনয় শর্মা, অক্ষয় কুমারের প্রাণভিক্ষার আর্জি রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ খারিজ করে দিয়েছিল। অপরাধীদের আইনি প্রক্রিয়ার জটে এর আগে দু’দুবার পিছিয়ে গিয়েছিল ফাঁসি কার্যকর করার প্রক্রিয়া। এদিকে, শনিবার তিহার জেল কর্তৃপক্ষ অপর এক দোষী বিনয় কুমার শর্মার মানসিক অসুস্থতার দাবিকে "বিকৃত সত্য" হিসাবে অভিহিত করেছে। অতিরিক্ত দায়রা বিচারক ধর্মেন্দ্র রানা জানান যে, সিসিটিভি ফুটেজে প্রমাণিত হয়েছে যে বিনয় কুমার শর্মা কোনও মানসিক ব্যাধিতে ভুগছেন না। তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের মাথায় আঘাত করেছিলেন নিজেকে বিকারগ্রস্থ প্রমাণ করার জন্য।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন