সব চেষ্টার পরও দেশের রাজধানী শহর দিল্লিতে বায়ুদূষণের মাত্র আকাশছোঁয়া। কিছুতেই বাতাসের স্বাস্থ্যের উন্নতি হচ্ছে না। দিওয়ালির ঠিক একদিন আগে দিল্লির বায়ু দূষণ পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। সকালে কুয়াশায় ঢেকে যায় মহানগরীর অনেক এলাকা। বাজি ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও বায়ু দূষণের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে। দূষণের কারণে বিশেষ করে বৃদ্ধ, শিশু ও কাশি ও হাঁপানিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের অসুবিধায় পড়তে হয়। অনেকেরই শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এর পাশাপাশি বায়ু দূষণের কারণে অন্যান্য রোগেও আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষজন।
প্রতি বছর শীতে দিল্লিতে বায়ুদূষণের মাত্রা বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়ায়। দূষণের কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় দেশের রাজধানী শহর। দিওয়ালিতে বাজি পোড়ানোর পর সেই দূষণ তুঙ্গে ওঠে। এবার কিন্তু দিওয়ালির আগে থেকেই দিল্লির বায়ু মান একেবারে তলানিতে ঠেকেছে। দিওয়ালি যত কাছে আসছে দিল্লির বায়ুদূষণ তত বাড়ছে। এয়ার কোয়ালিটি ইন্ডেক্সের (AQI) রিডিং অনুযায়ী রাজধানীর একাধিক এলাকায় বায়ুদূষণের মাত্রা উদ্বেগজনক পর্যায়ে রয়েছে। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রক বোর্ডের তরফ থেকে জানানো হয়েছে আনন্দ বিহারের AQI রিডিং সোমবার রেকর্ড করেছে। ৪২৮ রিডিং নিয়ে বর্তমানে 'বিপজ্জনক' অবস্থায় আছে দিল্লির এই শহর।
কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রক বোর্ডের তথ্য অনুসারে বায়ুদূষণের পরিমাণকে কয়েকটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়। শূন্য থেকে ৫০ পর্যন্ত রিডিং হলে সেটি ভালো। ৫১-১০০ পর্যন্ত সন্তোষজনক। ১০১-২০০ রিডিং উঠলে সেই অঞ্চল মাঝারি মাপের বলে ধার্য হবে। ২০১-৩০০ হলে তাকে উদ্বেগজনক বলে চিহ্নিত করা হবে। ৩০১ থেকে ৪০০ খুবই গুরুতর এবং ৪০১-৫০০ রিডিং হলে সেটা বিপজ্জনক বলে বিবেচিত হবে। বায়ুদূষণের কথা মাথায় রেখে দিল্লিও সংলগ্ন অঞ্চলে বাজি ফাটানো বন্ধ রাখারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞদের ধারণা এমন পরিস্থিতিতে বাজি পোড়ালে অবস্থা আরও খারাপ হবে।
আরও পড়ুন : < আরও ভয়ঙ্কর যুদ্ধের ইঙ্গিত? হাজার হাজার মানুষকে শহর ছাড়ার নির্দেশ রুশ প্রশাসনের >
রবিবার সকালে দিল্লির অনেক এলাকাই ছিল কুয়াশা ঘেরা। ঘন কুয়াশার কবলে দিল্লির অক্ষরধাম মন্দিরও। শনিবারও দিল্লির বায়ু দূষণ পরিস্থিতি ছিল উদ্বেগজনক। এই কারণে শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভোগা লোকজনকে গুরুতর সমস্যায় পড়তে হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতির দিকে তাকালে আগামী সময়ে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও দিল্লিতে অনেক জায়গায় বাজি কেনা হয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে আতশবাজি ফাটালে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
CREA বলেছে যে ৫ থেকে ১১ অক্টোবরের মধ্যে বৃষ্টির কারণে দিল্লিবাসীরা বায়ু দূষণ থেকে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন। এরপর থেকে শহরের বাতাস দ্রুত খারাপ হতে থাকে এবং শীত আসার আগেই পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে শুরু করে। দিওয়ালির আগে দিল্লির বাতাসের ‘স্বাস্থ্য সংকট’ আরও প্রকোট আকার ধারণ করেছে।