দিল্লির (Delhi) মুন্দকা মেট্রো স্টেশনের কাছেই বাণিজ্যিক ভবনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে ২৭ জনের। এখনও নিখোঁজ প্রায় ২৯ জন। প্রাথমিক ভাবে আট জনের দেশ শনাক্ত করা হয়েছে। অনেকের দেহ এমন ভাবে ঝলসে গিয়েছে দেখে চেনার উপায় পর্যন্ত নেই। দিল্লি প্রশাসন সূত্রে খবর যে সকল দেহ শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি সেগুলির ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে।
এর মধ্যেই জানা গিয়েছে দিল্লির এক মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় যে ২৭ জনের পুড়ে মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে ২১ জনই মহিলা। অনেকেই করোনা পরবর্তীতে সংসারের হাল ধরতে দিল্লির মুন্দকা মেট্রো স্টেশনের কাছের ওই বাণিজ্যিক ভবনে কাজে যোগ দেন সামান্য বেতনের বিনিময়ে।
প্রশাসন সূত্রে খবর বাণিজ্যিক ওই ভবনে মূলত রাউটার এবং সিসিটিভি তৈরির অফিস ছিল। আর সেখানেই নাম মাত্র বেতনে সংসারের হাল ধরতে কোভিডের পরে কাজে যোগ দেন, পূজা। পরিবার সূত্রে খবর মাত্র ৭ হাজার বেতনেই ওই রাউটার প্রস্তুতকারী সংস্থায় তিন মাস আগেই কাজে যোগ দেন তিনি। ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ তিনি। পরিবারের লোকজন সঞ্জয় গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতালে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন।
ঘটনায় আরেক নিখোঁজ নিশা। তার মা মীরা দেবী সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “স্নাতক শেষ করার পরই এই সংস্থায় কাজে যোগ দেন নিশা। তিনিই পরিবারের একমাত্র রোজগেরে”। অনেক লাশের মধ্যেও মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে সারারাত হাসপাতালের দুয়ারে ঘুরে বেরিয়েছেন বৃদ্ধা মা।
আরও পড়ুন: তেলেঙ্গানাতেও শাহর মুখে বাংলার ‘হিংসা’, চ্যালেঞ্জ কেসিআর-কে
যশোদা, চার বছর ধরে ওই সংস্থায় কাজ করতেন। যশোদার শ্যালিকা জুলি দেবী বলেন, “তিনি তার স্বামী এবং তিন সন্তানের সঙ্গে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন শুক্রবার তার সঙ্গে অনেকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও ফোন বন্ধ থাকার কারণে সম্ভব হয়নি। এখনও পর্যন্ত যে কটি মৃতদেহ শনাক্ত করা হয়েছে সেই আটজনের মধ্যে যশোদাও রয়েছেন”।
২৬ বছরের দৃষ্টি, নাংলোইতে থাকতেন, তিনিও নিখোঁজ রয়েছেন। তার হবু স্বামী আমান কুমার লুধিয়ানা থেকে এসেছেন। এখন নিখোঁজ দৃষ্টি। আমান বলেন, “অনেক বার বারণ করার পরও নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য এই সংস্থায় হিসেব নিকেশের কাজ করতেন দৃষ্টি”।
আগুন লাগার পর থেকেই নিখোঁজ রয়েছেন তিনি। উৎকণ্ঠায় পরিবার। হাসপাতাল গুলিতে ক্লান্ত চোখের ভিড় নিজের প্রিয়জনকে শেষবার দেখার জন্য। দগ্ধ হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সঞ্জয় গাঁধী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অনেকেই। চোখের জল মুছতে মুছতে আমন বলেন, “একরাতের আগুন মুহুর্তেই কেড়ে নিল কত তাজা প্রাণ”।
Read story in English