দিল্লি হিংসায় চক্রান্তের জাল হোয়াটসঅ্য়াপের ভুয়ো মেসেজে, চার্জশিটে মিলল চাঞ্চল্য়কর তথ্য়

বিন্নি নামে এক সদস্য় রাত ৮টা ১ মিনিটে মেসেজে বলেন, ''আরএসএসের লোকেরা সমর্থন করেছে''।

বিন্নি নামে এক সদস্য় রাত ৮টা ১ মিনিটে মেসেজে বলেন, ''আরএসএসের লোকেরা সমর্থন করেছে''।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
delhi riots, দিল্লি হিংসা

ছবি: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

দিল্লি হিংসার ঘটনায় হোয়াটসঅ্য়াপে কীভাবে ভুয়ো বার্তা ছড়ানো হয়েছিল, তার বিবরণ উঠে এসেছে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে। এক মুসলিম ব্য়ক্তিকে খুনের ঘটনার চার্জশিটে সেই তথ্য় সামনে এসেছে। 'কট্টর হিন্দুত্ব একতা' নামে একটি হোয়াটসঅ্য়াপ গ্রুপ তৈরি করা হয়েছিল।

Advertisment

''হিন্দুদের সংখ্য়া বেশি। সেখানে উত্তেজনার আবহ রয়েছে। কিন্তু প্রবীণ মুসলিমরা ভীত নন। তাঁরা হিন্দুদের সংস্কৃতি জানেন। কিন্তু মুসলিমদের ভিড়ের মধ্য় থেকে একটা হিন্দু কি নিরাপদে যেতে পারবেন?''-গত ২৫ ফেব্রুয়ারি হোয়াটসঅ্য়াপ গ্রুপে এমন বার্তাই দেওয়া হয়েছিল।

এমনকি, 'হিন্দুদের মৃত্য়ু হচ্ছে', এমন মুহূর্ত ভিডিও করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। যার ফলে 'এজন্য় মুসলিমদের শাস্তি দেওয়া যাবে'। এই কথোপকথনের পরই ৪ সদস্য় ওই গ্রুপ থেকে বেরিয়ে যান। এরপরই তাঁদের মুসলিম হিসেবে চিহ্নিত করা হয় এবং তাঁদের খোঁজ করতে অন্য়ান্য় সদস্য়দের নির্দেশ দেওয়া হয়।

দুপুর ২টো ১৬ মিনিট নাগাদ, এক সদস্য় বলেছিলেন, ''ভাই, একজন মুসলিমকে ধরেছি''। সেইসঙ্গে জানান, তিনি তাঁকে আক্রমণ করেছেন। এরপর মুসলিম মহিলাদের টার্গেট করার কথা বলা হয়।

Advertisment

আরও পড়ুন: দিল্লি হিংসা একটা বড়সড় চক্রান্ত: মন্ত্রী নিত্য়ানন্দ রাই

এরপর এক দীর্ঘ মেসেজে বলা হয়, 'গুলি চালাবে না ও তরোয়াল দেখাবে না' কিন্তু 'আর্থিকভাবে মুসলিমদের বয়কট করো'। সন্ধে ৬টা ৩ মিনিট নাগাদ আরেকটি দীর্ঘ মেসেজে 'উত্তরাখণ্ড ভাইদের' উদ্দেশে বলা হয়, 'মুসলিমরা প্রচুর সংখ্যায় উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডের বেশ কয়েকটি বিখ্যাত ধর্মীয় স্থানগুলিতে চলে এসেছেন'। সদস্য়দের আরও বলা হয়, ''২ হাজার ও আড়াই হাজার টাকার লোভে মুসলিমদের যেন বাড়ি ভাড়া না দেওয়া হয় এবং তাঁদের সন্তানদের ভবিষ্য়ৎ নষ্ট করে দেওয়া হোক''।

সন্ধে ৬টা ৫৯ মিনিট নাগাদ ভাগীরথী বিহার এলাকায় বিদ্য়ুৎ চলে যায়। সেসময়ই পদক্ষেপ করার জন্য় গ্রুপের সদস্য়দের জানানো হয়। তাঁদের বলা হয় যে, ''সমস্ত হিন্দুরা প্রস্তুত''।

বিন্নি নামে এক সদস্য় রাত ৮টা ১ মিনিটে মেসেজে বলেন, ''আরএসএসের লোকেরা সমর্থন করেছে''। এরপর রাত ৯টায় এক মেসেজে বলা হয়, ''ব্রিজিপুরি পুলিয়াতে ৯ মুসলিমকে মারা হয়েছে...সাহস রাখো...কাজ শুরু হয়েছে''।

বিন্নি ও লোকেশ সোলাঙ্কিকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ, যারা ওই সদস্য়দের মধ্য়ে গ্রেফতার হয়েছিল। অনেকের নাম ওই বিদ্বেষমূলক চ্য়াটে উঠে আসেনি। হিংসার ঘটনায় আপডেট দিত বিন্নি।

গ্রুপের এক সদস্য় পরামর্শ দেয়, ''ভাই, হর হর মহাদেব স্লোগান ব্য়বহার করতে হবে আমাদের। মুসলিমরা জয়শ্রী রাম স্লোগান দিচ্ছে''। বিন্নি জবাব দেন, ''ভাই শোনো, আজ সকলে নিজেদের প্রস্তুত রাখো। আমরা ফতিমা মসজিদ আক্রমণ করতে যাচ্ছি''।

২৬ ফেব্রুয়ারি সোলাঙ্কি প্রথম মেসেজ পাঠিয়ে বলে, ''গঙ্গা বিহার টিমের সঙ্গে আমি এসেছি। আমাদের কাছে সব আছে...বুলেট, বন্দুক, সব''। আরেক জন জবাব দেয়, ''.৩১৫ বোর বুলেট আছে?''

২৬ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টা ৩৯ মিনিট নাগাদ শেষ মেসেজের একটিতে লেখা হয়, ''হিন্দুদের মানসিকভাবে ভেঙে ফেলার জন্য় ১২ ধরনের জিহাদ ব্য়বহার করা হয়েছিল''। ২৬ তারিখ হিংসা থেমেছিল।

Read the full story in English

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

national news