ভয়ঙ্কর হিংসার রূপ দেখেছে উত্তর পূর্ব দিল্লি। প্রাণহানি, রক্তপাত থেকে বাড়িঘর ভাঙচুর, গাড়িতে আগুন, পাথর ছোড়া সবেরই সাক্ষী রাজধানী শহরের বাসিন্দারা। জাফরাবাদে সিএএ বিরোধী জমায়েতের প্রতিবাদে বিজেপি নেতা কপিল মিশ্রর নেতৃত্বে মিছিলের পরই হিংসা আগুনের থেকে দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু এত দ্রুত কীভাবে ছড়াল হিংসা? পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে, উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যেই বিবদমান উভয় গোষ্ঠীর সমর্থকরাই বেশ কয়েকটি হোয়াটঅ্যাপ গ্রুপ খুলেছিল। যে গ্রুপগুলিতে হিংসার ছবি, বিবরণ, ভিডিও, সিএএ-র পক্ষে-বিপক্ষে জমায়েতের ছবি দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকে। যা আগুনে ঘৃতাহুতি করেছিল বলে মনে করছে পুলিশ।
পুলিশ জানতে পেরেছে যে, এই হোয়াটঅ্যাপ গ্রুপগুলি গত মাসের ২৩ ও ২৪ তারিখ চালু করা হয়। উস্কানিমূলক বহু ভিডিও, ছবি এইসব গ্রুপে আদানপ্রদান করা হয়েছিল। এমনকী দিল্লি হিংসার সঙ্গে সম্পর্কহীন বহু ভিডিও, ছবি, ভাষণও সেই সময় আদানপ্রদান হয়। যার জেরে হিংসার মাত্রা কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছিল বলে পুলিশের দাবি।
আরও পড়ুন: হোলির পরই দিল্লি হিংসা নিয়ে আলোচনায় বসবে মোদী সরকার
এক শীর্ষ পুলিশ আধিকারিকের কথায়, 'স্থানীয় অপরাধীরা এই হিংসা ও খুনের সঙ্গে জড়িত। তাদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হিংসার সময় তারা কোথায় ছিল তা তাদের মোবাইল লোকেশন খতিয়ে দেখে বেড় করার চেষ্টা চলছে।' জিজ্ঞাসাবাদের সময় অভিযুক্তদের বেশিরভাগই কবুল করেছে যে তারা ছিনতাই, ডাকাতির মত ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিল। পুলিশি খাতায় আগেই তাদের নাম রয়েছে।
হিংসার অপরাধে দয়ালপুর পুলিশের হাতে গ্রেফতার ১০ অভিযুক্ত জেরায় শিকার করেছে যে, শেরপুর চকের কাছে তারা দাঁড়িয়ে ছিল। তখনই হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে খবর আসে যে তাদের সম্প্রদায় মানুষরা আক্রান্ত। কাল-বিলম্ব না করে তারা পাথর ছুড়তে শুরু করে। ভাঙচুর, গাড়িতে আগুন ধরানোর কাজ শুরু হয়। দাবি দিল্লি পুলিশের। গাড়িতে ঠাকুরের ছবি রয়েছে কিনা, বা তার মালিক হিন্দু- নাকি অন্য কোনও সম্প্রদায়ের তা নির্ধারণ করেই প্রথম অবস্থায় গাড়িগুলিতে আগুন দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন: দিল্লি হিংসার সমালোচনায় ইরানের বিদেশমন্ত্রী, রাষ্ট্রদূতকে সমন নয়াদিল্লির
হিংসায় মদত দিতে উভয় গোষ্ঠীর নেতৃত্বই লোনি ও গাজিয়াবাদ থেকে আসা বাহুবলিদের সহায়তা নিয়েছিল। কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে হিংসা উস্কে দিয়েছিল এরা। এইধরনের বেশ কয়েকজন নেতাকে পুলিশ চিহ্নিত করতে পেরেছে বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে।
উত্তর পূর্ব দিল্লির ১৩ থানাকেই অপরাধীদের নামের তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে। পুলিশের শীর্ষ আধিকারিক বলেন, 'স্থানীয় অপরাধীরা হিংসার দিনগুলোতে কোথায় ছিল তা তাদের মোবাইল নম্বর কতিয়ে দেখে অনুসন্ধানের কাজ চলছে। হিংসার ঘটনায় ৪৩৬ এইআইআর দায়ের হয়েছে। অস্ত্র আইনে মামলার সংখ্যা ৪৬। দিল্লি হিংসায় ৩৪ জনকে গ্রেফতার করা হলেও আটক করা হয়েছে ১৪২৭ জনকে।'
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন