সেবায়েতদের বিদ্রোহে ১২ ঘণ্টা না খেয়ে রইলেন জগন্নাথদেব!

পুলিশের বিরুদ্ধে নিগ্রহের অভিযোগ তুলে সেবায়েতদের একাংশের ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণায় থমকে রইল পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আচার-অনুষ্ঠান। যার জেরে শুক্রবার সকালে মন্দিরের দরজা খুলল না।

পুলিশের বিরুদ্ধে নিগ্রহের অভিযোগ তুলে সেবায়েতদের একাংশের ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণায় থমকে রইল পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আচার-অনুষ্ঠান। যার জেরে শুক্রবার সকালে মন্দিরের দরজা খুলল না।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
puri, পুরী

পুরীর জগন্নাথ মন্দির। ছবি: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

নজিরবিহীন বিক্ষোভে নাওয়া-খাওয়া বন্ধ হয়ে গেল জগন্নাথদেবের। শুক্রবার প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে ‘ঠুঁটো’ হয়েই থাকতে হল দেবতাকে। পুলিশের বিরুদ্ধে নিগ্রহের অভিযোগ তুলে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের সেবায়েতদের একাংশের ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণায় থমকে রইল মন্দিরের আচার-অনুষ্ঠান। যার জেরে শুক্রবার সকালে মন্দিরের দরজা খুলল না। মন্দিরের বাইরেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হল ভক্তদের। এই প্রথমবার এমন ঘটনার সাক্ষী হলেন প্রভু জগন্নাথদেব।

Advertisment

কী হয়েছিল? সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার মন্দিরে কয়েকজন দর্শনার্থীদের ঢোকা নিয়ে পুলিশকর্মীদের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়ান সেবায়েত ভবানী মহাপাত্র। পুলিশকর্মীরা তাঁকে নিগ্রহ করেন বলে অভিযোগ তুলেছেন ওই সেবায়েত। ঘটনার প্রতিবাদে বিদ্রোহ ঘোষণা করে সরব হন মন্দিরের সেবায়েতদের একাংশ। পুলিশকে ক্ষমা চাইতে হবে, এমন দাবিই তোলেন তাঁরা। সেবায়েতদের এহেন বিক্ষোভের জেরে মন্দিরের কাজকর্ম কার্যত লাটে ওঠে। সকাল থেকে মন্দিরের দরজা বন্ধই থাকে। এমনকি, জগন্নাথদেবের রোজকারের আচার-রীতি কোনওটাই পালন করা হয় না। সেবায়েতদের বিক্ষোভে মন্দিরের এহেন অচলাবস্থা ইতিহাসে প্রথমবার ঘটল বলে মনে করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: টিকিট কাটলেই আরও কাছে জগন্নাথ দেব, নয়া নিয়ম পুরীর মন্দিরে

মন্দিরের দরজা না খোলায় দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয় দর্শনার্থীদের। ধৈর্য হারিয়ে কয়েকজন দর্শনার্থী পুলিশ ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন। জগন্নাথ দর্শনের জন্য ৯০ বছরের বাবাকে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন এক মহিলা। তিনি বললেন, "কেন আমাদের মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না, এটা জিজ্ঞেস করলে সেবায়েতরা মন্দির কর্তৃপক্ষের দিকে আঙুল তুলবেন। কিন্তু আমাদের কী দোষ?"

Advertisment

সেবায়েতদের একাংশের বিদ্রোহে মন্দিরের দরজা খোলা নিয়ে সরকারের দ্বারস্থ হন পুরীর রাজা গজপতি মহারাজ দিব্যসিং দেব। মন্দিরে জট কাটাতে তৎপর হন আইনমন্ত্রী প্রতাপ জানা। পরে বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ মন্দিরের দরজা খোলা হয়। এ প্রসঙ্গে পুরীর পুলিশ সুপার সার্থক সারঙ্গী বলেন, "আমরা দুটি মামলা দায়ের করেছি। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখব আমরা। কিন্তু যদি ওঁরা মন্দির না খোলেন, ওঁদের জোর করার কোনও অধিকার নেই আমাদের।" সেবায়েতদের ক্ষোভ প্রশমিত করতে তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন জেলাশাসক।

উল্লেখ্য, দু’মাস আগেও মন্দিরে অচলাবস্থা তৈরি হয়। মন্দির দর্শনার্থীদের জন্য লাইন করার (কিউ সিস্টেম) করার উদ্যোগ নেয় শ্রী জগন্নাথ টেম্পল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এসজেটিএ)। যে সিদ্ধান্তের বিরোধিতা তুলে সেসময় দু-তিন ঘণ্টা কাজ বন্ধ রাখেন সেবায়েতরা।

national news