লড়াই শুরু হয়েছিল এক বছর আগে। এরপর থেকেই বেড়েছে চ্যালেঞ্জ। জীবনযুদ্ধে চিকিৎসকদের লড়াই যেন করোনার থেকেও ভয়াবহ। কলম্বিয়া এশিয়া হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ দীপক বর্মা দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানালেন সেই মানসিক লড়াইয়ের কথা।
চিকিৎসকের কথায়, "এই অতিমারিতে প্রত্যেকের জীবন যেমন সর্বনাশের মুখে আমাদের চিকিৎসকদের জীবনও কিন্তু কম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না। টানা কাজ, রোগীকে সুস্থ জীবন দেওয়া, কোনও কোনও সময় মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে পরাজয় যে হতাশা ও অসহায়ত্ব নিয়ে আসে তা থেকে আমরা মুক্তি পাই না। গত বছর শুরু হওয়া কোভিড যুদ্ধ আমাদের সকলকে ক্লান্ত করেছে। চারপাশের ধ্বংসাত্মক অবস্থায় ভালো নেই আমরা। তবুও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।"
আরও পড়ুন, ‘অক্সিজেনের পর এবার চিকিৎসক-নার্সদের প্রবল ঘাটতি দেখবে দেশ’, সতর্কবার্তা ডা: দেবী শেঠির
চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের লড়াই বার বার প্রশংসিত হচ্ছে দেশে, কাগজে, কলমে, সোশাল মিডিয়ায়। যুদ্ধ জয়ের কারিগরদের কুর্নিশ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী থেকে মুখ্যমন্ত্রীরা। কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউতে তাঁরাও যেন ক্লান্ত। ডাঃ বর্মা বলেন, "আমরা যে কোনও মূল্যে জীবন বাঁচানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করি। অক্সিজেন সঙ্কট, সংক্রমণ বৃদ্ধি সবদিক থেকেই চাপ তৈরি হচ্ছে আমাদের উপরও। একজন চিকিৎসক হিসেবে যখন দেখি রোগী অক্সিজেনের অভাবে মারা যাচ্ছেন তা কতখানি পীড়াদায়ক বোঝানোর ভাষা থাকেনা আমাদেরও।"
অপর এক চিকিৎসক তনভীর আজলা বলেন, "আমরাও তো মানুষ। ইমোশন আমাদেরও আছে। আমাদেরও পরিবার আছে। এই যুদ্ধে আমরা মানসিক ও শারীরিকভাবে চাপে রয়েছি।" বিশেষজ্ঞরা একাধিকবার জানিয়েছেন এই লড়াই সহজ নয়। বিশেষত কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ। যদিও সকলেই তাঁদের শেষ চেষ্টা দিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। সেখানে মন্দের জায়গা নেই। সুস্থ করে তোলাটাই চ্যালেঞ্জ।
ডাঃ বর্মা দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে বললেন, "অনির্দিষ্টকালের জন্য এই সঙ্কট সহ্য করতে অপার মানসিক সাহস এবং স্ট্যামিনা লাগে।" কোভিড ওয়ার্ডে তখন ভিড় জমছে রোগীর। বাইরে চিন্তিত মুখে পরিজনরা। পিপিই কিট পরিহিত চিকিৎসক এগিয়ে গেলেন ওয়ার্ডে। দিন শেষেও যে লড়াই শেষ হয়না, তার শেষ খোঁজার উত্তরই এখন লক্ষ্য।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন