২০১৮ সালের একটি টুইটের জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে অল্ট নিউজের প্রতিষ্ঠাতা সাংবাদিক মহম্মদ জুবেরকে। দিল্লি পুলিশের এফআইআর অনুযায়ী, জুবের যে টুইটটি তা 'অত্যন্ত উস্কানিমূলক এবং মানুষের মধ্যে ঘৃণার অনুভূতি জাগানোর জন্য যথেষ্ট' ছিল। তবে কেন এত পুরনো টুইট নিয়ে এখন নাড়াঘাঁটা করা হল তা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন! সেই বিতর্কের আগুনে ঘি ঢাললেন বিরোধী রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশবন্ত সিনহা। পাশাপাশি জার্মানির বিদেশ মন্ত্রকের তরফে এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে।
বিদেশ মন্ত্রকের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে “সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। সাংবাদিক যা লেখেন এবং যা বলেন তার জন্য তাঁর জেল হওয়া কখনই কাম্য নয়”।
জার্মান বিদেশ মন্ত্রকের এক মুখপাত্র বলেন, “ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্প্রতি সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা, বাক স্বাধীনতার মত বিষয় নিয়ে ভারতের আলোচনাও হয়েছে। জার্মান দূতাবাস বিষয়টির ওপর নজর রেখে চলছে”। সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার মত বিষয়ে কখন হস্তক্ষেপ করা উচিত নয় এবং সেটা ভারতের মত গণতান্ত্রিক দেশকে মনে রাখতে হবে”।
জার্মানির এহেন মন্তব্য নিয়ে জানতে চাওয়া হলে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, "এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়, বিষয়টি ইতিমধ্যেই আদালতে বিচারাধীন। এনিয়ে মন্তব্য করা ঠিক নয়”।
আরও পড়ুন: <সাংবাদিক গ্রেপ্তার ইস্যুতে বিরোধী শিবিরের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীর তোপের মুখে মোদী>
এর আগে, বার্লিনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে, জুবেরের সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে জার্মান মুখপাত্র বলেছিলেন: “আমরা অবশ্যই সারা বিশ্বে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এটা ভারতের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।”
তিনি আরও বলেন, "ভারত নিজেকে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসাবে নিজেকে বর্ণনা করে। সুতরাং, সেখানে মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং সংবাদপত্রের মতো গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে প্রয়োজনীয় মর্যাদা দেওয়া হবে বলে আশা করা যায়।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য গত ২৭ জুন অল্ট নিউজের প্রতিষ্ঠাতা সাংবাদিক মহম্মদ জুবেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রথমে তাকে পুলিশি হেফাজতে রাখা হলেও পরে ফরেন কন্ট্রিবিউশন রেগুলেশন অ্যাক্ট (FCRA) বা বিদেশী অনুদান আইন ভাঙার অভিযোগ ওঠে এবং তাকে ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়।
গত সপ্তাহে, জুবের সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে, রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের একজন মুখপাত্র বলেন যে সাংবাদিকদের কী লেখেন, কী টুইট করেন এবং বা কী বলবেন তা তাঁর অধিকারের মধ্যে পড়ে তার জন্য কোন সাংবাদিককে জেলে ভরা অন্যায়”।