বুধবার সুপ্রিম কোর্ট বিলকিস বানোর গণধর্ষণ মামলায় গুজরাট সরকারের ১১ জন দোষীর সাজা মুকুবের বিরুদ্ধে তার আবেদনের শুনানির জন্য একটি নতুন বেঞ্চ গঠনের জন্য অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে। বিলকিস বানোর হয়ে তার আইনজীবী শোভা গুপ্তা প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি পিএস নরসিমার বেঞ্চকে অনুরোধ করেন বিষয়টির শুনানির জন্য আরেকটি বেঞ্চ গঠন করা দরকার।
সিজেআই চন্দ্রচূড় এ বিষয়ে বলেন, “রিট পিটিশন অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে। অনুগ্রহ করে একই জিনিস বারবার উল্লেখ করবেন না। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদী মঙ্গলবার বিলকিস বানোর দায়ের করা আবেদনের শুনানির দিন এই মামলা থেকে সরে দাঁড়ান। এর আগে, গুজরাট সরকার এই মামলায় ১১ আসামিকে ক্ষমা প্রদর্শন করে চলতি বছরের ১৫ আগস্ট তাদের মুক্তি দেয়।
স্বাধীনতা দিবসের ৭৫ বছর উপলক্ষ্যে বিশেষ বিধিতে তাঁর ধর্ষক ও পরিবারের হত্যাকারীদের সাজার মেয়াদের আগেই মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। সেই ঘটনার পর বিলকিস বানো দোষীদের এই মুক্তি নিয়ে সরব হয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। গুজরাট সরকারের তরফে নেওয়া পদক্ষেপে সাজা মুক্তি হয় বিলকিস বানোর ধর্ষকদের। তার বিরুদ্ধেই আইনের পথে মামলা করেছেন বিলকিস।
সেই মামলার শুনানির দিনই সরে দাঁড়ান বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদী। বুধবার সুপ্রিম কোর্ট বিলকিস বানো গণধর্ষণ মামলায় গুজরাট সরকারের যে ১১ জন দোষীর সাজা মুকুব চ্যালেঞ্জ মামলা শুনানির জন্য একটি নতুন বেঞ্চ গঠনের আবেদন গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছে। বানোর পক্ষে উপস্থিত আইনজীবী শোভা গুপ্তা পি এস নরসিমাকে অনুরোধ করেন এই মামলার শুনানির জন্য আরেকটি বেঞ্চ গঠন করা দরকার। যদিও সেই আবেদন অস্বীকার করেন বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। তিনি বলেন “রিট (পিটিশন) তালিকাভুক্ত করা হবে। অনুগ্রহ করে, একই জিনিস বারবার উল্লেখ করবেন না। এটা খুবই বিরক্তিকর,”।
২০০২ গোধরা দাঙ্গার সময় বিলকিস বানো মাত্র ২১ বছরের তরুণী ছিলেন এবং পাঁচ মাসের গর্ভবতী ছিলেন। তিনি গোধরা দাঙ্গার সময় পালানোর পথে গণধর্ষণের শিকার হন। ওই সময় নিহত পরিবারের সাত সদস্যের মধ্যে তার তিন বছরের মেয়েও ছিল। মামলার তদন্ত সিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল এবং সুপ্রিম কোর্ট মহারাষ্ট্রের একটি আদালতে বানোর বিচার হস্তান্তর করে।
মুম্বইয়ের একটি বিশেষ সিবিআই আদালত ২১ জানুয়ারী, ২০০৮-এ ১১ জন দোষীকে এই মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। পরে বোম্বে হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্ট তাদের দোষী সাব্যস্ত করে। চলতি বছরের ১৫ অগাস্ট, স্বাধীনতা দিবস বিলকিস-কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত ১১ জন জেলের বাইরে বেরিয়ে আসে। ভাল আচরণে’র জন্য মুক্তি মেলে ধর্ষকদের। গুজরাট সরকার তাদের সাজা মকুব করে দেয়। রাজ্য সরকারের আবেদন কেন্দ্রে মঞ্জুরও হয়ে যায় দুই সপ্তাহের মধ্যে।
আরও পড়ুন: < সিবিআই পরিচয় দিয়ে ডাকাতি খাস কলকাতায়, পুলিশের জালে ২ >
এই ঘটনার প্রেক্ষিপ্তে বিলকিস বানো সুপ্রিম কোর্টে দুটি পিটিশন দায়ের করেছেন। এর আগে, সোমবার, সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল যে বিলকিস বানো মামলায় তার আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য একটি পিটিশন তালিকাভুক্ত করার বিষয়ে শীঘ্রই বিবেচনা করবে। সোমবার প্রধান বিচারপতি (সিজেআই) ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি পিএস নরসিমা এবং দীপঙ্কর দত্তের ডিভিশন বেঞ্চ বিলকিস বানোর আইনজীবী শোভা গুপ্তার জমা দেওয়া আবেদনগুলি বিবেচনা করেন। সিজেআই বলেছিলেন, যে তিনি শীঘ্রই পিটিশনের তালিকা করবেন এবং একটি তারিখ ঠিক করবেন। তিনি বিষয়টি তদন্ত করবেন।