Advertisment

ইংরেজি ভাষাই ভারতে অর্থনৈতিক বিভাজনের কারণ, বলছে শিক্ষানীতির খসড়া

'ইংরেজি গড়গড়িয়ে পড়তে ও বলতে পারে', ব্যাস ভারতীর সমাজ তার পীঠ চাপড়ে আগাম ঠিক করে ফেলে, যে সে শিক্ষিত এবং ভালো চাকরির জন্য প্রস্তুত। এই প্রবণতাকেই ভাঙতে চেয়েছে মোদী সরকার ?

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

দেশের অর্থনৈতিকভাবে অভিজাত শ্রেণির অতি মাত্রায় ইংরেজি প্রীতির জন্যই সমাজের একটা বড় অংশ ক্রমশ প্রান্তিক হয়ে পড়ছে, দ্বর্থহীন ভাষায় একথাই জানানো হলে ২০১৮ সালের জাতীয় শিক্ষা নীতির খসড়ায়। দেশের সুবিধাভোগী তথা অভিজাত শ্রেণির কাছে শিক্ষার মাপকাঠি কেবল মাত্র ইংরেজি জানা বা না জানার উপরই নির্ভর করে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। এই অভিজাত শ্রেণির হাতেই বিবিধ ক্ষেত্রের নিয়োগের নিয়ন্ত্রণ থাকায় ইংরেজি প্রীতির প্রভাব পড়ছে কর্মসংস্থানেও।

Advertisment

দেশের মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী হিসেবে রমেশ পোখরিয়াল শুক্রবার দায়িত্ব নেওয়ার পরই তাঁর হাতে নয়া শিক্ষা নীতির খসড়া তুলে দেওয়া হয়। এরপরই এই খসড়া নীতি প্রকাশ্যে আসে। এই নীতিতে ত্রিভাষা তত্ত্বেরও উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ এই খসড়া অপরিবর্তীতভাবে রূপায়ন করা হলে  হিন্দিভাষী রাজ্যে হিন্দি, ইংরেজির সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের আরও একটি আঞ্চলিক ভাষা শিখতে হবে। আর অ-হিন্দিভাষী রাজ্যে সেই রাজ্যের আঞ্চলিক ভাষা, হিন্দি এবং ইংরেজি পড়ানো হবে।

ইংরেজি গড়গড়িয়ে পড়তে ও বলতে পারলেই ভারতীয় সমাজ পিঠ চাপড়ে দেয় এবং এই একটি দক্ষতা বিচার করেই বুঝে নেয় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি শিক্ষিত না অশিক্ষিত। ২০১৮ শিক্ষানীতি খসড়ায় বলা হয়েছে, মূলত, অর্থনৈতিক অভিজাতরাই বেশি ঝুঁকে পড়েছেন ইংরেজি ভাষার দিকে। তাঁরাই ভারতে এই ভিনদেশি ভাষার চর্চা বাড়িয়েছে। সমাজে ন্যায়বিচার এবং অন্তর্ভুক্তির জন্য দেশজ ভাষার ব্যবহার বিশেষবাবে জরুরি"। পরামর্শ হিসাবে এই খসড়ায় বলা হয়েছে, ভারতীয় ভাষার ব্যবহার ও তার ওপর শ্রদ্ধা বাড়ানো উচিত। কর্মী নিয়োগ থেকে সামাজিক অনুষ্ঠান, স্কুল, কলেজ-সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যতটা সম্ভব মাতৃভাষায় কথোপকথনের প্রয়োজন।

আরও পড়ুন: প্রশ্নফাঁস রুখতে উচ্চমাধ্যমিকে প্রশ্নপত্র বদল

২০১৮ এর শিক্ষানীতির ৪ নম্বর অধ্যায়ের বিষয় 'পাঠক্রম এবং শিক্ষনীতি'। এখানে বলা হয়েছে, ভারতীয় ভাষাগুলির মাধুর্য এবং বৈজ্ঞানিকভিত্তি থাকলেও শিক্ষা ক্ষেত্রে ও কথোপকথনের মাধ্যম হিসাবে ইংরেজির জনপ্রিয়তা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। গণনা বলছে, এখন, ভারতে মাত্র ১৫ শতাংশ মানুষ ইংরেজিতে কথা বলেন এবং প্রায় ৫৪ শতাংশ মানুষের কথ্য ভাষা হিন্দি। ভাষার জন্য সমাজে যে অর্থনৈতিক প্রান্তিকীকরণ হচ্ছে, সে বিষয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছে এই খসড়া শিক্ষানীতি। বর্তমান সমাজকে কটাক্ষ করে এখানে বলা হয়েছে, "এখনকার অভিভাবকরা চান, তাঁদের সন্তান ইংরেজি শিখুক ও গড়গড়িয়ে সে ভাষায় কথা বলুক, যা তাদের নিজেদের নয়"।

নতুন এই শিক্ষা নীতি চালু করে দেশ জুড়ে হিন্দি ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার চলছে, এমন অভিযোগে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে একাধিক রাজনৈতিক দল। এআইএডিএমকে-র অভিযোগ, এভাবে তামিলনাড়ুর উপর জোর করে হিন্দি চাপাতে চাইছে মোদী সরকার।

তবে রাজনৈতিক মহলে এই শিক্ষানীতির খসড়া নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধলেও সরকারের দাবি, এটা নেহাত খসড়া। সাধারণ মানুষের মতামত এবং রাজ্য সরকারগুলির মতামত গ্রহণ করেই চূড়ান্ত নীতি গ্রহণ করা হবে।

Read the full story in English

narendra modi PM Narendra Modi
Advertisment