পলাতক হিরে ব্যবসায়ী নীরব মোদী ও তার পরিবারকে নোটিস পাঠাল ঋণ আদায়কারী ট্রাইবুনাল (DRT)। নোটিস পাঠানো হয়েছে নীরবের পরিবারের সদস্যদের এবং তাঁর কোম্পানিকেও। পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের থেকে ধার নেওয়া ৭০০০ কেটি টাকা উদ্ধার করতেই এই নোটিস।
পিএনবি তাদের কাছ থেকে নেওয়া ৭১০২৯ কোটি টাকা বকেয়া ঋণ নীরব মোদীর কাছ থেকে উদ্ধার করতে গত জুলাই মাসে ট্রাইবুনালের দ্বারস্থ হয়। DRT-১ রেজিস্ট্রার এ মুরলী স্বাক্ষরিত এই নোটিস মোদীর কাছে পৌঁছন তার ৬ মাস পরে। এই অঙ্কের মধ্যে মূল ঋণ ৬৮০০ টাকা এবং বাকিটা তার সুদ।
এ ব্যাপারে যাঁদের অভিযুক্ত করা হয়েছে তার মধ্যে মোট ৭ জন ব্যক্তি এবং ৯টি কোম্পানি রয়েছে। আগামী বছরে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে অভিযুক্তদের জবাবদিহি করতে বলা হয়েছে। উত্তর না পাওয়া গেলে পিএনবি-র আবেদনের একতরফা শুনানি হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে ট্রাইবুনাল।
আরও পড়ুন, থারুর বনাম রবিশঙ্কর, আইনি নোটিশের পর এবার অভিযোগ
নীরব ছাড়া নোটিস পাঠানো হয়েছে নীরব মোদীর স্ত্রী অ্যামি, নীরব-অ্যামির সন্তান রোহিন, অনন্যা এবং অপাশাকে। এ ছাড়াও নীরবের ভাই নেহাল দীপক মোদী, নীশল দীপক মোদী এবং দীপক কেশলভাই মোদীকেও নোটিস পাঠিয়েছে ট্রাইবুনাল। বাদ যাননি নীরবের বোন পূরবী মায়াঙ্ক মেহতাও। মুম্বইযে এঁদের যে শেষ ঠিকানা জ্ঞাত ছিল, নোটিস সেখানেই পাঠিয়েছে ট্রাইবুনাল।
যে নটি কোম্পানিকে নোটিস পাঠানো হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে স্টেলার ডায়মন্ডস, সোলার এক্সপোর্টস, ডায়ামন্ড আরইউএস, ফায়ারস্টার ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড, এএনএম এন্টারপ্রাইজেস, এনডিএম এন্টারপ্রাইজেস। এ গুলি সবই মুম্বইভিত্তিক সংস্থা। গুজরাটের সুরাট এবং রাজস্থানের জয়পুরে এই কোম্পানিগুলির শাখা রয়েছে। নোটিসে তাদেরও নামোল্লেখ করা হয়েছে।
ফেব্রুয়ারি মাসে পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক ব্যাপক জালিয়াতির কথা স্বীকার করে নেয়। পরে জানা যায় এই জালিয়াতির পরিমাণ ১৩,৬০০ কোটি টাকা। এ ঘটনা ভারতের ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রের ভিত্তি নড়িয়ে দিয়েছিল।
ব্যাঙ্কেরই কিথি আধিকারিকের সঙ্গে ষড় করে এবং জাল চিঠি ব্যবহার করে নীরব মোদী ও তার মামা মেহুল চোকসি দক্ষিণ মুম্বইয়ে পিএনবি-র ব্র্যাড হাউস শাখা থেকে এই পরিমাণ টাকা হাতাতে শুরু করে ২০১১ সাল থেকে।
ইন্টারপোল নীরব-মেহুলের বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিস জারি করার পরেই পিএনবি তাদের ঋণ সুদে-মূলে আদায়ের জন্য ট্রাইবুনালের দ্বারস্থ হয়।
ইতিমধ্যেই ইডি এবং সিবিআই অভিযুক্তদের মালিকানাধীন মোট ২৬০টি জায়গায় হানা দিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে জামিনঅযোগ্য পরোয়ানা প্রস্তুত থাকলেও তা অবশ্য এখনও জারি হয়নি। এ ঘটনায় কয়েকজন ব্যাঙ্ক আধিকারিক গ্রেফতার হলেও বাকিরা সকলেই পলাতক।