ফের একবার ইডি-র নজরে দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী। আপ নেতৃত্বাধীন দিল্লি সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন ও তাঁর বেশ কয়েকজন আত্মীয়ের নামে থাকা মোট ৪.৮১ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি। উল্লেখ্য, দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী জৈনের বিরুদ্ধে আর্থিক জালিয়াতি মামলার তদন্ত করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
এই মামলায় এদিন আকিঞ্চন ডেভেলপার্স প্রাইভেট লিমিটেড, ইন্দো মেটাল ইম্পেক্স প্রাইভেট লিমিটেড, প্যারিয়াস ইনফোসলিউশন প্রাইভেট লিমিটেড, মঙ্গলায়তন প্রজেক্টস প্রাইভেট লিমিটেড এবং জে.জে. আইডিয়াল এস্টেট প্রাইভেট লিমিটেডের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। এছাড়াও স্বাতী জৈন, সুশীলা জৈন, অজিত প্রসাদ জৈন এবং ইন্দু জৈনের বেশ কিছু সম্পত্তি আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন একটি মামলায় বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের অধীনে সত্যেন্দ্র জৈনের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের এফআইআর-এর উপর ভিত্তি করেই ঘটনার তদন্ত করছে ইডি।
মঙ্গলবার ইডি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ''তদন্তে জানা গিয়েছে ২০১৫-১৬ সালে একজন সরকারি কর্মী থাকাকালীন উল্লিখিত কোম্পানিগুলি সত্যেন্দ জৈনেরই মালিকানাধীন ছিল। এর থেকে তাঁর লাভও হতো। হাওয়ালার মাধ্যমে কলকাতা ভিত্তিক এন্ট্রি অপারেটরদের কাছ থেকে শেল সংস্থাগুলির মাধ্যমে ৪.৮১ কোটি টাকা কামিয়েছেন জৈন। পরে সেই টাকা দিল্লি এবং তার আশেপাশের এলাকার কৃষি জমি কেনার জন্য নেওয়া ঋণ পরিশোধের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল।''
আরও পড়ুন- জমি জালিয়াতি মামলায় বিপাকে শিবসেনার শীর্ষ নেতা, জমি-ফ্ল্যাট বাজেয়াপ্ত ইডি-র
২০১৮ সালের আগেও সত্যেন্দ্র জৈনকে এই মালাতেই তলব করেছিল ইডি। এবারও তাঁকে একই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। সিবিআইয়ের অভিযোগ, জৈন চারটি সংস্থার শেয়ার হোল্ডার থাকলেও সংস্থাগুলির তহবিলের উত্স সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। দুর্নীতির অভিযোগে সিবিআই সত্যেন্দ্র জৈনের স্ত্রী-সহ আরও চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। এর আগেও এই মামলায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই।
সিবিআই জানিয়েছিল, ২০১৫-১৬ সালে প্রয়াস ইনফো সলিউশনস, আকিঞ্চন ডেভেলপার্স, মানগল্যাতন প্রজেক্টস এবং ইন্দো-মেটাল ইম্পেক্স প্রাইভেট লিমিটেডের মাধ্যমে ৪.৬৩ কোটি টাকা এসেছিল। ওই সময়ের মধ্যে সত্যেন্দ্র জৈন ও তাঁর স্ত্রীর হাতে ওই সংস্থাগুলির এক-চতুর্থাংশের মালিকানা ছিল। সিবিআইয়ের আরও অভিযোগ, সত্যেন্দ্র জৈন কখনও ডিরেক্টর কখনও শেয়ার হোল্ডার কখনও আবার নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামে ওই সংস্থাগুলির উপর নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন।
একজন সরকারী কর্মী হওয়ার আগে ২০১০-১২ সালে এই সংস্থাগুলির পাশাপাশি দিল্লির আরও কয়েকটি সংস্থার মাধ্যমে সত্যেন্দ্র জৈন ১১.৭৮ কোটি টাকা তছরুপে অভিযুক্ত ছিলেন বলে দাবি সিবিআইয়ের। ২০১০ থেকে থেকে ২০১৬-এর মধ্যে দিল্লির আউচন্দি, বাওয়ানা, কারালা এবং মহম্মদ মাজভি গ্রামে ২০০ বিঘারও বেশি জমি কেনার জন্য তছরুপের ওই টাকাই ব্যবহার করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। যদি সত্যেন্দ্র জৈনের দল আম আদমি পার্টি অবশ্য সিবিআই-এর এই অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। কেন্দ্রীয় সংস্থার এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেই দাবি আপ-এর।
Read story in English