অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার প্রাক্তন সদস্য তথা বর্তমানে অখ্যাত হিন্দু সমাজ পার্টির নেতা কমলেশ তিওয়ারিকে হত্যার ঘটনায় তিনজনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করল লখনৌ থানার পুলিশ। শুক্রবার লখনৌয়ের নাকা হিন্দোলা থানার অন্তর্গত খুরশাদ বাগে তাঁর নিজের বাড়ি থেকেই মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ৪৫ বছর বয়সী তিওয়ারিকে। তবে শুক্রবার গভীর রাতে আল-হিন্দ ব্রিগেডের তরফে হিন্দু মহাসভার সভাপতির হত্যার দায় স্বীকার করে নেওয়া হয়। যদিও এই দাবিটির সত্যতা এখনও যাচাই করা হয়নি।
আল হিন্দ ব্রিগ্রেডের পক্ষ থেকে বলা হয়, "কমলেশ তিওয়ারি সমাজের পক্ষে ক্ষতিকারক ছিল। আর কেউ যদি ইসলাম ধর্ম এবং মুসলমানদের দিকে আঙুল তোলে, সেও একই পরিণতি লাভ করবে। আল হিন্দ ব্রিগেড এই ঘটনার দায় স্বীকার করছে। আরও দেখতে প্রস্তুত হোন। যুদ্ধ সবে শুরু হয়েছে।" এই সংগঠনটি কোনও বিশ্ব সন্ত্রাসবাদী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত কি না তা পুলিশের তরফে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন, পাকিস্তান চাপে রয়েছে, ধূসর তালিকায় থাকা অপমানজনক: সেনা প্রধান
ইতিমধ্যেই তিওয়ারির স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে মহম্মদ মুফতি নইম কাজমি এবং ইমাম মৌলানা আনওয়ারুল হক, এবং আরও একজনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ (খুন) এবং ১২০ 'খ' (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে, যদিও এদেরকে এখনও শনাক্ত করেনি পুলিশ।
শুক্রবার গভীর রাতে অতিরিক্ত চিফ সেক্রেটারি (স্বরাষ্ট্র) অবনীশ অবস্থি বলেন, এই ঘটনার তদন্তের জন্য একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (এসআইটি) গঠন করা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ সরকারের জারি করা এক বিবৃতিতে পুলিশের ডেপুটি জেনারেল (ডিজিপি) ও পি সিং বলেন, “তিওয়ারিকে গত কয়েকমাস ধরে নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল। স্থানীয় থানার থেকে একজন বন্দুকধারী ছাড়াও একজন নিরাপত্তা কর্মী সুরক্ষার দায়িত্বে ছিলেন।" ওই পুলিশকর্তা আরও বলেন, “ঘটনার সময় কমলেশের বাসভবনে যে নিরাপত্তাকর্মীরা মোতায়েন ছিলেন, তাঁরা খুনিদের থামিয়ে দিয়েছিলেন, এবং কমলেশকে জিজ্ঞাসা করার পরেই তাদের ঘরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়।"
আরও পড়ুন, ‘নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার নেই বহিরাগতদের’, এনআরসি বিতর্কে ঘি ঢাললেন সুরেশ যোশী
কমলেশ তিওয়ারির এই খুনের ঘটনায় নিন্দা প্রকাশ করেছে অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভা। পুলিশ জানিয়েছে যে এই হত্যার পরই স্থানীয় বাসিন্দারা এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন। শহরের ফতেগঞ্জ এবং আমিনাবাদ এলাকায় বন্ধ হয়ে যায় দোকানপাট। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে মোতায়েন করা হয় নিরাপত্তারক্ষী বাহিনী।
যে দুই ব্যক্তি তিওয়ারির সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন, তাঁদের মধ্যে একজন তাঁর আপ্তসহায়ককে বাজারে পান আনতে পাঠান বলে জানা গেছে। এএসপি (পশ্চিম লখনৌ) বিকাশ ত্রিপাঠী বলেন, "কমলেশের আপ্তসহায়ক বাজার থেকে ফিরে দেখেন, রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে রয়েছেন কমলেশ।"
পুলিশের কাছে করা তাঁর অভিযোগে তিওয়ারির স্ত্রী কিরণ জানিয়েছেন, "আন্দাজ সাড়ে বারোটা নাগাদ আমার স্বামী তাঁর দোতলার অফিসঘরে বসে কয়েকজন অচেনা লোকের সঙ্গে কথা বলছিলেন। আমি অন্য ঘরে ছিলাম। হঠাৎ ৪-৫ মিনিট ধরে কোনও কথাবার্তার আওয়াজ না পেয়ে আমি খোঁজ নিতে এসে দেখি আমার স্বামী রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। যে দুজন ওঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল, তারা দৌড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে।"
Read the full story in English