ঘোষণা হতেই মোদী সরকারের নতুন ধাঁচে সেনাবাহিনী তৈরির প্রকল্প অগ্নিপথ সমালোচনার মুখে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো তো ঘোষণার পর থেকেই অগ্নিপথের সমালোচনায় মুখর। পেনশন, ভাতার টাকা বাঁচাতে আর সেনা নিয়োগ কমাতে সরকার অগ্নিপথের প্রকল্প নিয়েছে। এমনই অভিযোগ বিরোধীদের। কিন্তু, সে তো গেল রাজনৈতিক।
এবার সমালোচনা ধেয়ে এল সেনাবাহিনীর থেকেই। মোদী সরকারের এই স্বপ্নের প্রকল্প নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিলেন প্রাক্তন সেনা জওয়ানরা। তাঁদের অভিযোগ, সেনা জওয়ানদের জন্য চার বছরের চাকরির মেয়াদ দেশের জন্য ভয়ংকর। অগ্নিপথ প্রকল্পে একজন জওয়ানের সর্বোচ্চ চাকরির মেয়াদ চার বছর। তার পর, নিযুক্ত জওয়ানদের মাত্র ২৫ শতাংশ সেনায় ১৫ বছরের চুক্তিতে নেবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।
বাকি ৭৫ শতাংশকে কর্মসংস্থানে সাহায্য করা হবে। আর, এখানেই প্রশ্ন প্রাক্তন সেনানীদের। তাঁদের বক্তব্য, যেসব জওয়ান বা অগ্নিবীর চার বছরের জন্য নিযুক্ত হবেন, তাঁদের প্রশিক্ষণ পাবেন পুরোদস্তুর সেনা জওয়ানের মতই। চার বছর চাকরির পর এই জওয়ানরা যদি অর্থের জন্য দুষ্কৃতী বা জঙ্গিদলে যোগ দেয়, তখন দায় কে নেবে? পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে, সবদিক বিবেচনা করেই সেনাবাহিনীকে নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা না-করার জন্য সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন প্রাক্তন সেনাকর্মীরা।
কারণ, সেনাবাহিনীর অধীনে চার বছরে অগ্নিবীররা যথেষ্ট প্রশিক্ষিত হয়ে উঠবেন। ১৭ থেকে ২১-এর মধ্যে নিয়োগের বয়স থাকলে, অগ্নিবীররা জওয়ানও থাকবেন। এই পরিস্থিতিতে চার বছরের চাকরি শেষে একজন অগ্নিবীর নিজের ও পরিবারের জন্য ভালো কাজের সন্ধান করবেনই। সেই সময় অগ্নিবীরদের মোটা টাকার বিনিময়ে নিয়োগ করতেই পারে গ্যাংস্টারদের সংগঠন কিংবা জঙ্গিরা। তাতে গ্যাংস্টার বা জঙ্গিরা শক্তিশালী হবে। আর, বিপদে পড়বে দেশ। কারণ, অর্থের বিনিময়ে জঙ্গি এবং গ্যাংস্টাররা তখন গড়ে তুলতে পারবে বেসরকারি সেনাবাহিনী। যা, দেশের নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক।
আরও পড়ুন- সেনা নিয়োগে ‘অগ্নিপথ’, কী এই প্রকল্প, কীভাবে করবে নিয়োগ?
এই ব্যাপারে প্রাক্তন সেনাকর্মীদের সংগঠন এক্স-আর্মি ওয়েলফেয়ার ইউনিয়নের অন্যতম নেতা অবসরপ্রাপ্ত হাবিলদার প্রেমজিৎ সিং ব্রার বলেন, 'এটা সরকারের খারাপ সিদ্ধান্ত। চার বছরের জন্য সেনার চাকরিতে এমনিতেই হাতেগোনা যুবক যোগ দিতে চাইবে। আর, যাঁরা যোগ দেবেন, তাঁদের নিয়ে বেসরকারি সেনা গড়ে তোলা গ্যাংস্টারদের পক্ষে সহজ হয়ে যাবে। কেউ যদি সীমান্তে মারা যান, সরকার বলছে সেই অগ্নিবীরকে কেবল নির্দিষ্ট ক্ষতিপূরণ দেবে। তার পরিবার কোনও পেনশন আর পূর্ণকালীন সুযোগ-সুবিধা পাবে না। এই পরিস্থিতিতে কেন কেউ সীমান্তে গিয়ে শহিদ হতে রাজি হবে?'
Read full story in English