Los Angeles Wildfires Latest News: কথায় বলে প্রকৃতি কাউকে ছাড় দেয় না। যার সাম্প্রতিকতম উদাহরণ দেখা গিয়েছে আমেরিকার লস অ্যাঞ্জেলেসে। দাবানল ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে হলিউড-খ্যাত এই শহর। নিজেদের শখের বাড়ি, প্রাসাদ, আগুনে হারিয়েছেন বহু তারকারা।
এমন আবহে সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনতলা একটি বাড়ির ছবি বেশ ভাইরাল হয়েছে। এই বাড়ির আশেপাশে থাকা বাড়িগুলি পুড়ে ছাই হয়ে গেলেও এই বাড়িতে দৃশ্যত একটি আঁচও আসেনি। যা বিস্ময় জাগানোর মতো। এই ছবিটি শেয়ার করে অনেকেই দাবি করছেন যে, এই বাড়ির মালিক এক মুসলিম ব্যক্তি।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/lingo/styles/medium_crop_simple/public/images/story/202501/i.jpg)
উদাহরণস্বরূপ, এত ব্যক্তি এই ছবিটি ফেসবুকে পোস্ট করে লিখেছেন, "লস এঞ্জেলেসে অক্ষত থাকা ভবন একজন মুসলিমের।"
আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে লস অ্যাঞ্জেলেসে এই বাড়ির মালিকের নাম ডেভিড স্টেইনার এবং তাঁর মুসলিম হওয়ার সপক্ষে কোনও প্রমাণ ছাড়াই এই দাবি করা হয়েছে।
কীভাবে জানা গেল সত্যি
ভাইরাল ছবিটিকে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে সার্চ করলে ধ্বংসস্তুপের পাশে থাক ওই তিনতলা বাড়ির অন্য একটি ছবি আমরা গাল্ফ নিউজের একটি খবরে দেখতে পাই। ২০২৫-এর ১৪ জানুয়ারি প্রকাশিত এই খবরে লেখা হয় যে নয় মিলিয়ন মার্কিন ডলারে তৈরি লস অ্যাঞ্জেলেস ম্যালিবু সৈকতের এই বাড়িটির মালিকের নাম ডেভিড স্টেইনার।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/lingo/styles/medium_crop_simple/public/images/story/202501/bauubana.jpg)
খবরে থাকা তথ্য অনুযায়ী, ১০ হাজারের বেশি বাড়ি আগুনের গ্রাসে এলেও একমাত্র এই বাড়িটি মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থেকেছে যা রীতিমতো বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছে। অন্যদিকে, এই বাড়ির মালিক ডেভিড স্টেইনার টেক্সাসের একজন অবসরপ্রাপ্ত আইনজীবী বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নির্বাহী বলে লেখা হয়। সেই খবর অনুযায়ী, কীভাবে এই বাড়ি বাঁচল এবং কীভাবে তিনি পুরো ঘটনার বিষয়ে জানতে পারলেন সেই নিয়ে তিনি নিউ ইর্য়ক পোস্টের সঙ্গে কথা বলেছেন।
আরও পড়ুন বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গুলিতে নিহত ১৮ BSF জওয়ান? জানুন সত্যিটা
এই তথ্য় অনুসরণ করে আমরা নিউ ইর্য়ক পোস্টে ওই প্রতিবেদনটি খুঁজে বের করি। সেই প্রতিবেদনের ভাষ্য অনুযায়ী, ডেভিড স্টেইনার বলেছেন, "এটি একটি অলৌকিক ঘটনা। আমার ঠিকাদার খবর দেখছিলেন এবং আমার প্রতিবেশীর বাড়িটি পুড়ে যেতে দেখে আমাকে বললেন, 'মনে হচ্ছে আপনার বাড়িও পুড়ে যাচ্ছে।' দেখে মনে হচ্ছিল যে কিছুই সম্ভবত বেঁচে থাকবে না, এবং আমি ভেবেছিলাম আমরা বাড়িটি হারিয়ে ফেলেছি।"
কিন্তু আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পরই দেখা যায় ওই বাড়িটি আগের মতোই মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। এই বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে স্টেইনার বলেন, "এরপর আমি টাটকা ছবি পেতে শুরু করি এবং বুঝতে পারি যে আমাদের বাড়ি বেঁচে গিয়েছে এবং এটি একটি অত্যন্ত খারাপ সময়ে আমার মুখে একটি হাসি এনেছে।" এহেন বিধ্বংসী আগুনেও বাড়ি নিরাপদ থাকার কথা আলোচনা করতে গিয়ে স্টেইনার জানান, "এই বাড়িতে অগ্নিরোধী ছাদ ব্যবহার হয়েছে এবং ৫০ ফুটের ভিত রয়েছে। সত্যি বলতে, আমি দুঃস্বপ্নেও কখনও ভাবিনি যে একটি দাবানল প্রশান্ত মহাসাগরের তটে তাণ্ডব চালাবে।" এই বিষয়ে ডেইলি মেল ও নিউজ অস্ট্রেলিয়ায় প্রকাশিত খবরও দেখা যাবে। কোথাও এমন উল্লেখ করা হয়নি যে বাড়িটি কোনও মুসলিম ব্যক্তির।
এরপর আমরা খোঁজার চেষ্টা করি স্টেইনার পদবী সাধারণত কাদের হয়। অক্সফোর্ড রেফারেন্সের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, এই পদবী জার্মান বা ইহুদীদের হয়।
ফলে এ কথা নিশ্চিত ভাবে বলা যায় যে লস অ্যাঞ্জেলেসের আগুনে নিরাপদ থাকা এই বাড়িটির মালিক কোনও ভাবেই মুসলিম না।
[এই গ্রাফিক কার্ডটির সত্যতা যাচাই করেছে bangla.aajtak.in, যা অনলাইনে ভুল তথ্য এবং ডিপফেক ভিডিও শনাক্তকরণে Shakti collective-এর অংশ]