/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/05/cats-108.jpg)
ভয়াবহ বন্যার কবলে অসম, গৃহহীন ৪ লক্ষ পরিবার, কেন্দ্রের তরফে মিলেছে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস। এর মাঝেই আসামের বন্যা কবলিত যমুনামুখ জেলার দুটি গ্রামের ৫০০’র বেশি পরিবার ভিটে মাটি খুইয়ে রেল লাইনেই আশ্রয় নিয়েছে। রেললাইন গুলি অপেক্ষাকৃত উঁচুতে বলে সেখানে জল প্রবেশ করেনি। তাই সহায় সম্বল মানুষগুলি আশ্রয় স্থল হিসাবে বেছে নিয়ে রেললাইনকেই।
চাংজুরাই এবং পটিয়া পাথর গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন বন্যায় তাদের বাড়ি ঘড় ভেসে গিয়েছে। গ্রামবাসীদের দাবি, গত পাঁচ দিনে রাজ্য সরকার ও জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে খুব একটা সাহায্য পাননি তাঁরা। আসামের পরিস্থিতি এখনও উদ্বেগজনক। ২৯টি জেলার ২,৫৮৫টি গ্রামের ৪ লাখেরও বেশি মানুষ অবিরাম বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত।
বৃষ্টির কারণে ভূমিধসে এখন পর্যন্ত ১৪ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। পৈথা পাথর গ্রামের মনোয়ারা বেগম খোলা আকাশের নীচে গত পাঁচদিন ধরে আশ্রয় নিয়েছেন। বেশির ভাগ সময় চোখের পাতা এক করতে পারেনি তিনি। তার সঙ্গেই সেই অস্থায়ী শিবিরে রয়েছেন গ্রামেরই আরও চার পরিবার।
মনোয়ারা বলেন, ‘চোখের সামনে আস্ত একটা গ্রাম জলের তলায়। সহায় সম্বল হারিয়ে আজ আমরা নিঃস্ব’। প্রশাসনের তরফে বিশেষ সাহায্য মেলেনি বলেও দাবি করেছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, “তিন দিন আমরা খোলা আকাশের নিচে ছিলাম, তারপর আশেপাশে চেয়েচিন্তে কিছু টাকা জোগাড় করে একটা চাদর কিনি! সরকারের কাছ থেকে খাবার তো দূর একটা চাদর পর্যন্ত পাইনি”।
আরও পড়ুন: দলিতের রান্না করা মিড-ডে মিল বয়কট ‘উচ্চবর্ণের’ পড়ুয়াদের
বিউটি বোর্দোলোই পরিবারের সঙ্গে ত্রিপলের নীচে বাস করছেন। তিনি বলেন, "পরিস্থিতি ভয়ানক এবং চ্যালেঞ্জিং। এভাবে বেঁচে থাকা খুব কঠিন।"পরিবারের সদস্য সুনন্দা দোলই বলেন খাবার জল টুকু পাচ্ছি না। কীভাবে আমরা এই ক’দিন রয়েছি তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না”। বন্যার অপর ক্ষতিগ্রস্ত নাসিবুর রহমান বলেন, “৪ দিন পর গতকাল আমরা সরকারের কাছ থেকে সাহায্য পেয়েছি। সেটাও সবার জন্য নয়। আমাদের একটু চাল, ডাল, তেল দিল। কিন্তু কেউ কেউ সেটুকুও পায়নি।”
সেনাবাহিনী, আধাসামরিক বাহিনী এবং NDRF এর একাধিক দল বন্যা কবলিত এলাকা থেকে নৌকা ও হেলিকপ্টারের সাহায্যে প্রায় ২২ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে গেছে বলেই খবর। রাজ্যের মোট ৩৪৩টি ত্রাণ শিবিরে মোট ৮৬,৭৭২ জন অসহায় মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। আরও ৪১১ টি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র রাজ্য সরকারের তরফে চালু করা হয়েছে।