বিরোধীদের প্রবল প্রতিবাদ। ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ। বিলের খসড়া ছিঁড়ে ফেলার চেষ্টা। অধিবেশন ১০ মিনিটের জন্য মুলতুবি। তার মাঝেই রাজ্যসভায় পাশ হয়ে গেল কৃষি বিল। এবার রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের অনুমোদন পেলেই বিলগুলি আইনে পরিণত হবে। লোকসভায় আগেই ধ্বনি ভোটে বিজেপি কৃষি সংক্রান্ত তিনটি বিলই পাশ করিয়ে নিয়েছে।
রবিবার রাজ্যসভায় পেশ করা হয় কৃষি সংস্কার সংক্রান্ত দু'টি বিল। কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার বিল দুটি পেশ করেন। তিনি বলেন কৃষকরা নায্য মূল্যের অধিকার থেকে পাবেন। যদিও বিল নিয়ে প্রথম থেকেই সরব বিরোধীরা রাজনৈতিক দলগুলো।
এই বিলকে 'কৃষকদের মৃত্যু পরোয়ানা' বলে দেগে দিয়েছে কংগ্রেস। বিলের চরম বিরোধিতা করছে হাত শিবির। দুটি কৃষি বিল সংসদের সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর দাবি জানান তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন, সিপিআইএমের কে কে রাগেশ, ডিএমকের ত্রিচি সিবা এবং কংগ্রেসের কে সি বেণুগোপাল।
প্রস্তাবিত কৃষি বিলের বিরোধিতা করে আগেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছেন বিজেপির জোটসঙ্গী অকালি দলের হারসিমরাত সিং বাদল। এদিকে, রবিবার এই বিলের প্রতিবাদে হরিয়ানা, রাজস্থানে রাস্তা অবরোধ করেছেন কৃষকরা।
তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন, ডিএমকে সাংসদ টি শিবা এবং সিপিএম–এর কেকে রাগেশ বিল রাজ্যসভার সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর জন্য সংশোধনী আনেন সংসদের উচ্চ কক্ষে।
তৃণমূল সাংসদ ডেরেক সরকারকে প্রশ্ন করেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, বিরোধীরা কৃষকদের ভুল বোঝাচ্ছে। আপনারা বলেছিলেন ২০২২–এর মধ্যে কৃষকদের রোজগার দ্বিগুণ হয়ে যাবে। কিন্তু বর্তমান হার অনুযায়ী, কৃষকদের রোজগার ২০২৮–এর আগে দ্বিগুণ হতে পারবে না।' বিলের বিরোধীতায় সরব এক সময় বিজেপির জোট সঙ্গী শিবসেনাও।
তবে, ভিডিও বার্তায় এই তিনটি বিল নিয়ে কৃষকদের বিভ্রান্ত না হতে পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। এই বিল নিয়ে যে কোনও ভাবেই সরকার পিছু হটবে না, সাফ জানিয়েছেন মোদী। একইসঙ্গে কৃষি বিল নিয়ে কৃষকদের ভুল বোঝানোর অভিযোগ চাপালেন কংগ্রেসের ঘাড়ে। কংগ্রেসকে নিশানা করে মোদী বলেছেন, 'যারা কয়েক দশক ধরে দেশ শাসন করেছে, তারা এ ইস্যুতে কৃষকদের ভুল বোঝানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। তারা কৃষকদের মিথ্যা কথা বলছে।'
আরও পড়ুন- কয়েক দশক ধরে যারা দেশ শাসন করেছে, তারাই কৃষকদের ভুল বোঝাচ্ছে: মোদী
কৃষি বিল প্রসঙ্গে মোদী বলেছেন, 'কৃষিক্ষেত্রে নতুন স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে কৃষকদের। নিজেদের উৎপাদিত পণ্য় বিক্রির অনেক সুযোগ ও বিকল্প খুঁজে পাবেন তাঁরা। বিলগুলি পাসের জন্য় অভিনন্দন জানাই। ফড়েদের থেকে তাঁদের বাঁচাতে এটা দরকার ছিল। এগুলো কৃষকদের রক্ষাকবচ।' নমো বলেছেন, 'কৃষকরা অবগত এবং তাঁরা দেখতে পাবে, কারা ফড়েদের পাশে রয়েছে ও তাঁদের নতুন সুযোগের বিরোধিতা করছে। এমএসপি-র মাধ্য়মে কৃষকদের সঠিক দাম দিতে আমার সররকার বদ্ধপরিকর। তাঁদের উৎপাদিত পণ্য কেনা সরকার চালিয়ে যাবে। গত ৬ বছরে এনডিএ কৃষকদের জন্য যা করেছে, তা কোনও সরকারই এতটা করেনি।'
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন