Advertisment

'মেয়ের প্রদর্শনী চলায় কাজে যাইনি, তাই চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে', গগৈয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ

 ২৮ পাতার অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন ২০১৮ সালের ১০ এবং ১১ অক্টোবর প্রধান বিচারপতি নিজের বাসভবনের কার্যালয়ে তাঁকে যৌন হেনস্থা করার চেষ্টা করেন, অশালীন ভাবে ছোঁয়ারও চেষ্টা করেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Ranjan Gogoi, রঞ্জন গগৈ

প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। ছবি: টুইটার

শনিবার থেকেই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে আসা যৌন হেনস্থার অভিযোগের খবর নিয়ে সারা দেশ তোলপাড়। আদালতের তরফ থেকে সমস্ত অভিযোগ “অস্বীকার” করে বলা হয়, সেগুলি “সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং কুৎসিত”। অভিযোগকারিণী এক ৩৫ বছরের মহিলা কোর্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট। তাঁর অভিযোগ মূলত দু'টি কারণ দেখিয়ে তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এক তাঁর দফতরে দায়িত্ব বদলানোর পেছনে কারণ জানতে চেয়ে প্রশ্ন করেন তিনি। এবং মেয়ের স্কুলে এক প্রদর্শনী চলায় তিনি কাজে আসতে না পারায়।

Advertisment

অভিযোগকারিণী ২০১৪ সালের মে মাসে আদালতে যোগ দেন। অভিযোগে তিনি ৯ জন আদালত আধিকারিকের নাম বলেছেন। বর্তমান প্রধান বিচারপতির নির্দেশে তাঁকে আদালতের সবচেয়ে কাছের মেট্রো ছেড়ে আসতেন যে গাড়িচালক, তাঁর নামও উল্লেখ করা হয়েছে। উল্লেখ রয়েছে দুই পড়শির নাম, যারা তাকে প্রথম বলেন তাঁর পরিবার সম্পর্কে পুলিশ খোঁজখবর নিচ্ছে।

চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়ার পরেই তিনি এইমস এ যে নিউরোলজিস্টের চিকিৎসাধীন ছিলেন, তার সমস্ত প্রমাণ সঙ্গে নিয়েই অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।

আরও পড়ুন, ‘তিনবার বিয়ে তো কী!’ সরব বাংলা বিনোদন জগৎ

অভিযোগকারিণী এও জানিয়েছেন ২০১৮ সালের অক্টোবরের ঘটনার পর সুপ্রিম কোর্টের প্রশাসনিক দফতর থেকে দু'জন আধিকারের ফোন বেশ কয়েকবার আসে তাঁর কাছে।

"আমি সেই রাতেই বুঝতে পারি প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আমি কাজ করতে পারব না, স্পষ্ট সে কথা জানানোর জন্য প্রধান বিচারপতিকে ফোন করি, উনি আমার ফোন তোলেননি। তার বদলে ওনার ব্যক্তিগত সচিবকে দিয়ে আমায় ফোন করিয়ে বলেন, আমি যেন ওনাকে বিরক্ত না করি। তার আগে অবধি যদিও উনি যখন তখন আমায় ফোন আর হোয়াটসঅ্যাপ করতেন", জানিয়েছেন   অভিযোগকারিণী।

মহিলার অভিযোগ থেকে পাওয়া তথ্য বলছে ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে রঞ্জন গগৈ-এর জুনিয়র কোর্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট বিয়ের জন্য লম্বা ছুটি নেওয়ায় তাঁর দায়িত্বে বহাল হন  অভিযোগকারিণী।

বিচারপতি গগৈয়ের অনুমান, আগামী সপ্তাহে আদালতে বিচার্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে আসার কথা, যার ফলে বর্তমানে এই কাণ্ড ঘটছে। তাঁর প্রশ্ন, “২০ বছর পর এই কি ভারতের প্রধান বিচারপতির প্রাপ্য পুরস্কার?” একই সঙ্গে তিনি যোগ করেন, “এই ২০ বছরের পর আমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে রয়েছে ৬.৮০ লক্ষ টাকা। যে কেউ ব্যালান্স পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। আমার পিওনের কাছেও এর চেয়ে বেশি টাকা রয়েছে।” তাঁর স্পষ্ট ঘোষণা, তিনি হাল ছেড়ে দেবেন না, এবং অবসর নেওয়ার আগে পর্যন্ত নিজের কর্তব্য পালন করে যাবেন।

আরও পড়ুন, মুনমুন সেনের জন্য প্রচারে আসছেন ইমরান খান?

সুপ্রিম কোর্টের সাধারণ সম্পাদকের দফতর থেকে জানানো হয়েছে যে “চারটি মিডিয়া সংস্থা – লিফলেট, দ্য ওয়ায়ার, ক্যরাভান এবং স্ক্রোল.ইন-এর পক্ষ থেকে ইমেইল আসে, এবং ২৪ ঘন্টার মধ্যে উত্তরের আবেদন করা হয়”। জবাবে আদালতের তরফ থেকে সমস্ত অভিযোগ “অস্বীকার” করে বলা হয়, সেগুলি “সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং কুৎসিত”। প্রধান বিচারপতি নিজেও বলেন, “চারটি অনলাইন প্রকাশনার তরফে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় – ক্যারাভান, লিফলেট, স্ক্রোল এবং ওয়ায়ার। তারা অভিযোগের বিরুদ্ধে আমার প্রতিক্রিয়া জানতে চায়। জবাব দেওয়ার জন্য আমাকে ১২ ঘন্টাও সময় দেওয়া হয় নি। সেক্রেটারি জেনারেলের তরফে অভিযোগ অস্বীকার করে জবাব দেওয়া হয়।”

বেণুগোপাল জানান, এই ধরনের আরও দুটি ঘটনার অতীত উদাহরণ রয়েছে: একবার অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি স্বতন্ত্র কুমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়, এবং দ্বিতীয় ঘটনার কেন্দ্রে ছিলেন বর্ষীয়ান উকিল অভিষেক মনু সিংভি। দুবারই অভিযোগ সংক্রান্ত কোনও খবর প্রকাশ করার থেকে বিরত রাখা হয় মিডিয়াকে। তাঁর কথায়, “যৌন হেনস্থা সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী, অভিযুক্ত বা অভিযোগকারী, কারোর নামই প্রকাশ্যে আনা যাবে না” কিন্তু বর্তমান ক্ষেত্রে “প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ নির্লজ্জভাবে” নাম প্রকাশ করেছে।

Read the full story in English

supreme court
Advertisment