মাঙ্কিপক্স নিয়ে ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করেছে হু। এর মাঝেই দিল্লিতে নতুন করে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা সামনেই আসতেই বাড়ল উদ্বেগ। রবিবার দিল্লিতে মাঙ্কিপক্সের আক্রান্ত প্রথম রোগীর সন্ধান মিলেছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। বছর ৩১ এর আক্রান্ত রোগীকে লোক নায়ক হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।
যদিও কীভাবে ওই ব্যক্তি মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হলেন তা নিয়েই চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে আক্রান্ত রোগীর কোন ভ্রমণ ইতিহাস মেলেনি। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, আক্রান্ত ব্যক্তির জ্বর ও স্কিন র্যাশের মত উপসর্গ রয়েছে। এ পর্যন্ত দেশে মোট চারজন মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে। অফিসিয়াল সূত্র পিটিআইকে জানিয়েছে আক্রান্ত যুবক সম্প্রতি হিমাচল প্রদেশের মানালিতে একটি ব্যাচেলার পার্টিতে অংশ নেন।
পশ্চিম দিল্লির বাসিন্দা ওই যুবকের শরীরে তিন দিন আগে মাঙ্কিপক্সের লক্ষণ দেখা গেলে তাকে তড়িঘড়ি দিল্লির লোক নায়ক হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। শনিবার তার নমুনাগুলি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি (এনআইভি) পুনেতে পাঠানো হয়। তাতেই নিশ্চিত হয় যুবক মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত। ইতিমধ্যেই তার কন্ট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের কাজও শুরু হয়েছে বলেই জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
মাঙ্কিপক্সের অন্য তিনটি ঘটনা কেরলে রিপোর্ট করা হয়েছে। গত ২২ শে জুলাই, ভারতের তৃতীয় মাঙ্কিপক্স আক্রান্তের সন্ধান মেলে। মধ্যবয়সী এক ব্যক্তির মধ্যে ধরা পড়ে মাঙ্কিপক্সের ভাইরাস। যিনি এই মাসের শুরুতে সংযুক্ত আরব আমিরশাহী থেকে মাল্লাপুরমে ফিরেছিলেন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের তরফে বিমানবন্দরগুলিকে ইতিমধ্যে সতর্ক করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: <রাতেও উড়বে জাতীয় পতাকা! ‘ঘরে ঘরে তেরঙ্গা’ কর্মসূচি উপলক্ষে বড় পদক্ষেপ কেন্দ্রের>
বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যক্ষেত্রে জরুরি পরিস্থিতি তৈরি করেছে মাঙ্কিপক্স। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে এমনটাই ঘোষণা করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। মাঙ্কিপক্সের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার দুটো অর্থ। এক, একে সাধারণ কোনও ঘটনা নয় বলেই বোঝানো। যার অর্থ, এটা অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। আর, দুই হল যে এর বিরুদ্ধে যৌথভাবে লড়াই করা দরকার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার শনিবারের এই ঘোষণায় মাঙ্কিপক্সের চিকিৎসায় বিনিয়োগ যেমন বাড়বে। তেমনই, দুষ্প্রাপ্য ভ্যাকসিনগুলো পাওয়াও আরও সহজলভ্য হবে। কয়েক দশক ধরেই মাঙ্কিপক্স মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার কিছু অংশে টিকে আছে।
তবে এটি মহাদেশের বাইরে বড় ধরনের প্রাদুর্ভাব ছড়ায়নি। অথবা, চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত মানুষের মধ্যে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার কথাও জানা যায়নি। কিন্তু, পরিস্থিতিটা বদলে যায় ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা এবং অন্য মহাদেশগুলোয় কয়েক ডজন মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ার পর। এরপরই মাঙ্কিপক্সের জন্য বিশ্বে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে বাধ্য হল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বিশ্বব্যাপী, ৭৫ টি দেশে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১৬ হাজারের-এরও বেশি। মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাবের কারণে এখন পর্যন্ত পাঁচটি মৃত্যু রিপোর্ট করা হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া , ভারত ছাড়াও, থাইল্যান্ডে একটি কেস সনাক্ত করা হয়েছে।