Advertisment

'রুদ্ধশ্বাস, কত প্রতীক্ষা'র অবসান, বিয়ে করছেন ওড়িশার রূপান্তরকামী আমলা

গত দু'বছর ধরে এক ছাদের তলায় আছেন। ৩৭৭ ধারা সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করার সঙ্গে সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আগামী বছর বিয়ে করবেন প্রেমিককে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

ঋতুপর্ণা ঐশ্বর্য প্রধান (ছবিসূত্র ইন্টারনেট)

প্রেমিকের সঙ্গে এক ছাদের তলায় বাস করেন বছর দুয়েক হল। কিন্তু সম্পর্ক আইনসিদ্ধ ছিল না এতদিন। সুপ্রিম কোর্টের ৩৭৭ ধারা বাতিলের ঐতিহাসিক রায়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন ওঁরা। রতিকান্ত প্রধান আর তাঁর প্রেমিক। ভুল হল, ৩৪ বছরের রতিকান্ত এখন স্বেচ্ছায় ঐশ্বর্য ঋতুপর্ণা প্রধান। দীর্ঘ বঞ্চনা লাঞ্ছনার পরেও স্বপ্ন দেখা ফুরোয়নি ঐশ্বর্যের। আগামী বছর বিয়ে করবেন বলে মনঃস্থির করেছেন। তারপর দত্তক নেবেন এক কন্যা সন্তান।

Advertisment

ওড়িশার কন্ধমাল জেলার কানাবাগরি গ্রামে ঋতুপর্ণার জন্ম। তখন অবশ্য লোকসমাজে তিনি রতিকান্ত। শৈশব, কৈশোর জুড়ে অপমান আর লাঞ্ছনার সাক্ষী। বাবা ছিলেন ভারতীয় সেনায়। 'পুরুষসুলভ' আচরণ করার জন্য জোর করা হত বাড়ি থেকে। বাড়ির বাইরে, স্কুলে, বন্ধুদের থেকে, শিক্ষকদের থেকে জুটত একরাশ তাচ্ছিল্য আর হাসাহাসি। কলেজ জীবনে হোস্টেলের সহপাঠীদের কাছে যৌন হেনস্থার শিকার হওয়া ছিল রতিকান্তের জীবনে নিয়মিত ঘটনা।

আরও পড়ুন, ব্রিটিশের নিগড় থেকে বেরিয়ে সভ্যতার পদক্ষেপের জন্য আমার আনন্দ হচ্ছে: মানবী বন্দ্যোপাধ্যায়

পারাদ্বীপ সার্কেলের ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি কমিশনার (জিএসটি) ঐশ্বর্য ওড়িশা ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের অধীনে পেশাগত জীবন শুরু করে ২০১০ সালে। খাতায় কলমে তখন তিনি রতিকান্ত প্রধান। লিঙ্গ পরিচয়ে পুরুষ। অথচ ভেতর ভেতর নারীসত্তায় ভরা মন এবং মনন একটু একটু করে প্রতিবাদ করা শুরু করেছে ততদিনে। সেক্স রিঅ্যাসাইনমেন্ট সার্জারি করে নতুন পরিচয় পেলেন। সে পরিচয় স্বীকৃত হল আইনে।

বছর তিনেক আগে পরিচয় প্রেমিকের সঙ্গে। প্রেমের প্রস্তাব বিশ্বাস করতেই কেটে যায় অনেকটা সময়। ঐশ্বর্যের কথায়, "শৈশব থেকে লাঞ্ছনা সহ্য করে করে ভালবাসার অনুভূতি কী, বুঝতেই পারিনি"। গত দু'বছর ধরে এক ছাদের তলায় আছেন। ৩৭৭ ধারা সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করার সঙ্গে সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আগামী বছর বিয়ে করবেন প্রেমিককে।

আরও পড়ুন, Section 377 verdict decriminalised Supreme Court reactions: রায় ইতিবাচক, রামধনু রঙ তিলোত্তমায়

প্রেমিকের বাড়িতে কতটা সহজে মেনেছে তাঁদের এই সম্পর্ক? আইনের মান্যতা আর সমাজের গ্রহণযোগ্যতায় যেমন দূরত্ব থেকেই যায়, এক্ষেত্রেও তার অন্যথা হয়নি। এখনও বাড়িতে রূপান্তরিত ঐশ্বর্যের কথা জানাতেই পারেননি তাঁর প্রেমিক। যদিও মনে অনেকটা জোর পেয়েছেন ঋতুপর্ণা। প্রেমিকের কাছে গ্রহণযোগ্যতা চেয়েছিলেন, পেয়েওছেন, তাতেই খুশি তিনি। আর্থিক স্বনির্ভরতা থাকায় বাকি সমাজকে নিয়ে তেমন ভাবছেন না।

বিয়ের পর কন্যা সন্তান দত্তক নিতে চান ঐশ্বর্য। আর চান নিজের নারীসত্তার সবটুকু দিয়ে সেই কন্যাকে মানুষী করে তুলতে।

supreme court
Advertisment