শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডে এবার দিল্লি পুলিশের হাতে এল বড়সড় প্রমাণ। তদন্তকারীদের হাতে এবার এসে পৌঁছেছে ফরেনসিক রিপোর্ট। রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে মেহরুলির জঙ্গলে যে হাড়গোড় পাওয়া গিয়েছিল সেগুলি শ্রদ্ধারই।
চলতি বছর মে মাসেই শ্রদ্ধাকে খুন করে তারই ঘনিষ্ঠ বন্ধু আফতাব পুনাওয়ালা। এরপর প্রমাণ লোপাট করতেই দেহটি ৩০-৩৫টি টুকরো করে ফেলে প্যাকেটে ভরে ফ্রিজে রেখে দেওয়া হয়। একে একে চলে প্রমাণ লোপাটের খেলা। দিল্লির মেহরুলির জঙ্গলে ফেলে আসা হয় শ্রদ্ধার দেহাংশ। দিল্লি পুলিশ কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার বলেছেন উদ্ধার হওয়া বেশ কিছু হাড়গোড় শ্রদ্ধারই। বাবার ডিএনএ রিপোর্টের সঙ্গে সেগুলি মিলিয়ে দেখা হয়েছে। এগুলি তদন্তের ক্ষেত্রে বড় প্রমাণ বলেই জানিয়েছেন দিল্লি পুলিশের সিনিয়ার আধিকারিকরা।
দিল্লি পুলিশ বুধবার সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি (সিএফএসএল) এবং ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি, রোহিণী থেকে ফরেনসিক রিপোর্ট হাতে পেয়েছে। মেহরুলির জঙ্গল এবং আশেপাশের এলাকা থেকে পুলিশ যে হাড়গোড় সংগ্রহ করে তার মধ্যে অনেকগুলিই শ্রদ্ধার বলেই ফরেন্সিক রিপোর্টে উঠে এসেছে।
বৃহস্পতিবার পুলিশ জানিয়েছে যে জঙ্গল থেকে উদ্ধার হওয়া হাড়গুলির মধ্যে কয়েকটি ওয়াকারের। গায়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ওয়াকারের বাবার ডিএনএ-এর সঙ্গে হাড়গুলো মিলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, এটি মামলার গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ।
আরও পড়ুন: < ‘মারাত্মক’ ভিড় কিছুটা নিয়ন্ত্রণে, নেওয়া হল একগুচ্ছ পদক্ষেপ >
পুনাওয়ালা শ্রদ্ধার দেহ ৩০-৩৫ টুকরো করে কেটে দুই-চার মাসের মধ্যে জঙ্গলে ফেলে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। ওয়াকারের বাবা তার মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে মুম্বই পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করার পরে নভেম্বরে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। অভিযুক্ত এবং মৃত দুজনেই মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা এবং মে মাসে দিল্লির ছাত্তারপুর পাহাড়ি এলাকায় একটি ফ্ল্যাট ভাড়া করে তারা দুজনেই একসঙ্গে থাকতে শুরু করেন।
ইতিমধ্যেই পুনাওয়ালাকে দিল্লি পুলিশ গ্রেফতার করে। পুলিশি জেরায় আফতাব জানায়, রাগের মাথায় শ্রদ্ধাকে খুন করে সে। জিজ্ঞাসাবাদে সে এও স্বীকার করেছে যে সে দেহাংশ কেটে টুকরো করে ৩০০ লিটার নতুন ফ্রিজে রেখেছিল। এরপর তিনি ওই টুকরোগুলো ফেলে দিল্লির কাছেই একটি জঙ্গলে ফেলে দেন।
হাড়গোড়, শ্রদ্ধার নিখোঁজ ফোন, অপরাধের সময় ব্যবহৃত অস্ত্র এবং অন্যান্য প্রমাণের সন্ধানে দিল্লি এবং গুরগাঁও জুড়ে তল্লাশি চালানো হয়। পুনাওয়ালার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে পুলিশ মেহরুলির জঙ্গল থেকে বেশ কয়েকটি হাড়গোড় উদ্ধার করে। এটি সিএফএসএল-এ পাঠানো হয়েছিল। উদ্ধার হওয়া হাড়গোড় গুলি যে শ্রদ্ধারই তা নিশ্চিত হতে পুলিশ তার বাবার ডিএনএ পরীক্ষাও করান।